রাজধানীতে সাম্প্রতিক সময়ে বড় ধরনের অপরাধ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, তবে ছোটখাটো অপরাধ কিছুটা বেড়েছে। খুব শিগগিরই এগুলোও কমে যাবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
আজ বুধবার মধ্যরাতে বিজয় সরণিতে ঢাকা মহানগরের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী এখনো পুরোপুরি আগের অবস্থানে ফিরে আসেনি। এটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। তবে বাহিনীকে পুনর্গঠনের জন্য নতুন নিয়োগ ও প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। আশা করা যায়, দ্রুতই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
সাম্প্রতিক অপরাধ দমনে পুলিশের পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর সহযোগিতায় বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এর আওতায় চিহ্নিত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।’
ছিনতাই ও ছোট অপরাধ বেড়েছে স্বীকার করে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ছিনতাইসহ ছোটখাটো অপরাধ কিছুটা বেড়েছে। তবে এরই মধ্যে বিশেষ টহল ও চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।’
আমরা বিভিন্ন এলাকার মোড়ে মোড়ে পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছি। সেনাবাহিনী ও অন্যান্য বাহিনীর সহায়তায় ব্লক রেইড ও নজরদারি চালানো হচ্ছে। আশা করছি দ্রুতই পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানান এই উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘যে কোনো দেশেই অপরাধ থাকে, তবে সেটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সরকার ও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর দায়িত্ব। বড় ধরনের অপরাধ যেমন— খুন, ডাকাতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে, তবে সাম্প্রতিক সময়ে ছিনতাই কিছুটা বেড়েছে। আশা করছি, এটিও দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসবে।’
সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন অপরাধের ভিডিও নিয়ে তিনি বলেন, ‘একটি ঘটনা ভাইরাল হলে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়, যা বাস্তব পরিস্থিতির চেয়ে বেশি মনে হতে পারে। অপরাধের প্রকৃত চিত্র বুঝতে পরিসংখ্যানের ওপর নির্ভর করা উচিত।’
চাঁদাবাজি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর দেখা গেছে, আগের চাঁদাবাজদের জায়গায় নতুনরা এসেছে। তাদের পেছনে রাজনৈতিক ইন্ধনও রয়েছে। আমরা রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতাদের আহ্বান জানাই, যেন তারা এসব অপরাধকে প্রশ্রয় না দেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে চাঁদাবাজির ঘোষণা দিচ্ছে। এটি দুঃখজনক। সরকার চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
এদিকে জামিনে মুক্তি পাওয়া অপরাধীদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগে যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল, তারা এখনো তাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকার চেষ্টা করছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাদের নজরদারিতে রেখেছে এবং প্রয়োজনে আবারও গ্রেপ্তার করা হবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী ও ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।