ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জনতার ৮০০ কোটি টাকার অনুসন্ধানে নামছে দুদক

রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের সাড়ে ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযোগের সঙ্গে ব্যাংকটির পরিচালনা পরিষদের শীর্ষ একজন ব্যক্তি, একজন মহাব্যবস্থাপক, একজন ঋণখেলাপিসহ ১৪ জনের সংশ্লিষ্টতার তথ্য রয়েছে দুদকের হাতে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, রোববার এ সংক্রান্ত অনুসন্ধানের অনুমোদন দিয়ে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলমকে কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে কমিশন।

দুদকের কাছে আসা অভিযোগে বলা হয়েছে, ব্যাংকটির পরিচালনা পরিষদের শীর্ষ এক কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ৮৫৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে এম এইচ গোল্ডেন জুট মিলস লিমিটেডসহ ৮টি কাগুজে প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ওই শীর্ষ কর্মকর্তার একাধিক বেনামি কাগুজে প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে সুপ্রভ স্পিনিং লিমিটেড, সুপ্রভ মিলঞ্জ স্পিনিং মিলস লিমিটেড, জারা লেবেল অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড, মেসার্স এননটেক্স লিমিটেড, শবমেহের স্পিনিং মিলস লিমিটেড, সুপ্রভ রোটর স্পিনিং লিমিটেড ও শাইনিং নীট টেক্স লিমিটেড।

জনতা ব্যাংকের করপোরেট শাখার গ্রাহক মেসার্স এম এইচ গোল্ডেন জুট মিলস লিমিটেড। মোহাম্মদ ইউছুফ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। পরিচালক হিসেবে রয়েছেন হুমায়ুন কবির চৌধুরী। দুদকের সূত্র বলছে, এটি ব্যাংকটির শীর্ষ ঋণখেলাপি মো. ইউনুছ বাদলের বেনামি প্রতিষ্ঠান।

২০১৪ সালের ৭ জানুয়ারি এ প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে ৭০ কোটি টাকা হাইপো ঋণ মঞ্জুর করেন ব্যাংকটির ওই শীর্ষ কর্মকর্তা। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান স্থিতি ৮৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা। বন্ধকি সম্পত্তির অতিমূল্যায়ণ দেখিয়ে ঋণের নামে ব্যাংক থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে এ অর্থ।

সুপ্রভ স্পিনিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন, পরিচালক মো. আবু তালহা। ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর ১৮০ কোটি টাকা সিসি হাইপোর্ট এবং ১৮০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয় জনতা ব্যাংকের করপোরেট শাখা থেকে। বর্তমানে এটির স্থিতি ১৯৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। নাম মাত্র সম্পত্তি বন্ধক রেখে এ টাকাও আত্মসাৎ করা হয়।

সুপ্রভ মিলাঞ্জ স্পিনিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জালালউদ্দিন, পরিচালক এম. আবদুল্লাহ সিদ্দিক। ২০১৪ সালের ১১ মে প্রতিষ্ঠানটির নামে প্রকল্প ঋণ মঞ্জুর হয় ১১৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। জনতা ব্যাংক করপোরেট শাখা থেকে নেয়া এ ঋণের বর্তমান স্থিতি ১৪২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

জারা লেবেল এন্ড প্যাকেজিংয়ের নামে একই বছর ২২ জানুয়ারি প্রকল্প ঋণ মঞ্জুর হয় ৫৩ কোটি ২ লাখ টাকা। বর্তমানে এটির স্থিতি ৬২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। কোনো কিস্তি পরিশোধ না করে পুরো টাকাই আত্মসাৎ করা হয়।

মেসার্স এননটেক্স নীট টেক্সের নামে ২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল ৯২ কোটি ৯ লাখ টাকা প্রকল্প ঋণ মঞ্জুর হয়। এটির স্থিতি ৯৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। মেসার্স শবমেহের স্পিনিং মিলসের নামে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ৯১ কোটি ৪৩ লাখ।

সুপ্রভ রোটর স্পিনিংয়ের নামে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ১৮০ কোটি টাকা। মেসার্স শাইনিং নীট টেক্সের প্রকল্প ঋণের নামে হাতিয়ে নেয়া হয় ৮৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, জনতা ব্যাংকের শীর্ষ ঋণ খেলাপি মো. ইউনুছ বাদলের সঙ্গে ব্যাংকের ওই শীর্ষ কর্মকর্তার অবৈধ আর্থিক লেনদেন রয়েছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনতার ৮০০ কোটি টাকার অনুসন্ধানে নামছে দুদক

আপডেট টাইম : ০৬:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০১৬

রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের সাড়ে ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযোগের সঙ্গে ব্যাংকটির পরিচালনা পরিষদের শীর্ষ একজন ব্যক্তি, একজন মহাব্যবস্থাপক, একজন ঋণখেলাপিসহ ১৪ জনের সংশ্লিষ্টতার তথ্য রয়েছে দুদকের হাতে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, রোববার এ সংক্রান্ত অনুসন্ধানের অনুমোদন দিয়ে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলমকে কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে কমিশন।

দুদকের কাছে আসা অভিযোগে বলা হয়েছে, ব্যাংকটির পরিচালনা পরিষদের শীর্ষ এক কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ৮৫৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে এম এইচ গোল্ডেন জুট মিলস লিমিটেডসহ ৮টি কাগুজে প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ওই শীর্ষ কর্মকর্তার একাধিক বেনামি কাগুজে প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে সুপ্রভ স্পিনিং লিমিটেড, সুপ্রভ মিলঞ্জ স্পিনিং মিলস লিমিটেড, জারা লেবেল অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড, মেসার্স এননটেক্স লিমিটেড, শবমেহের স্পিনিং মিলস লিমিটেড, সুপ্রভ রোটর স্পিনিং লিমিটেড ও শাইনিং নীট টেক্স লিমিটেড।

জনতা ব্যাংকের করপোরেট শাখার গ্রাহক মেসার্স এম এইচ গোল্ডেন জুট মিলস লিমিটেড। মোহাম্মদ ইউছুফ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। পরিচালক হিসেবে রয়েছেন হুমায়ুন কবির চৌধুরী। দুদকের সূত্র বলছে, এটি ব্যাংকটির শীর্ষ ঋণখেলাপি মো. ইউনুছ বাদলের বেনামি প্রতিষ্ঠান।

২০১৪ সালের ৭ জানুয়ারি এ প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে ৭০ কোটি টাকা হাইপো ঋণ মঞ্জুর করেন ব্যাংকটির ওই শীর্ষ কর্মকর্তা। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান স্থিতি ৮৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা। বন্ধকি সম্পত্তির অতিমূল্যায়ণ দেখিয়ে ঋণের নামে ব্যাংক থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে এ অর্থ।

সুপ্রভ স্পিনিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন, পরিচালক মো. আবু তালহা। ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর ১৮০ কোটি টাকা সিসি হাইপোর্ট এবং ১৮০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয় জনতা ব্যাংকের করপোরেট শাখা থেকে। বর্তমানে এটির স্থিতি ১৯৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। নাম মাত্র সম্পত্তি বন্ধক রেখে এ টাকাও আত্মসাৎ করা হয়।

সুপ্রভ মিলাঞ্জ স্পিনিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জালালউদ্দিন, পরিচালক এম. আবদুল্লাহ সিদ্দিক। ২০১৪ সালের ১১ মে প্রতিষ্ঠানটির নামে প্রকল্প ঋণ মঞ্জুর হয় ১১৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। জনতা ব্যাংক করপোরেট শাখা থেকে নেয়া এ ঋণের বর্তমান স্থিতি ১৪২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

জারা লেবেল এন্ড প্যাকেজিংয়ের নামে একই বছর ২২ জানুয়ারি প্রকল্প ঋণ মঞ্জুর হয় ৫৩ কোটি ২ লাখ টাকা। বর্তমানে এটির স্থিতি ৬২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। কোনো কিস্তি পরিশোধ না করে পুরো টাকাই আত্মসাৎ করা হয়।

মেসার্স এননটেক্স নীট টেক্সের নামে ২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল ৯২ কোটি ৯ লাখ টাকা প্রকল্প ঋণ মঞ্জুর হয়। এটির স্থিতি ৯৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। মেসার্স শবমেহের স্পিনিং মিলসের নামে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ৯১ কোটি ৪৩ লাখ।

সুপ্রভ রোটর স্পিনিংয়ের নামে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ১৮০ কোটি টাকা। মেসার্স শাইনিং নীট টেক্সের প্রকল্প ঋণের নামে হাতিয়ে নেয়া হয় ৮৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, জনতা ব্যাংকের শীর্ষ ঋণ খেলাপি মো. ইউনুছ বাদলের সঙ্গে ব্যাংকের ওই শীর্ষ কর্মকর্তার অবৈধ আর্থিক লেনদেন রয়েছে।