ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগের বাজেট বিশ্লেষণে বিএনপির ৩০০০ শব্দ

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হলেও একে ‘গতানুগতিক’ আখ্যা দিয়ে শুভঙ্করের ফাঁকি থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছে  প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। বিএনপি মোবাইল ফোনে কথা বলার ওপর বাড়তি করারোপের বিরোধিতা করে এটি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে গার্মেন্ট শিল্পর ওপর উৎসে করারোপেরও সমালোচনা করেছে দলটি।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে চলতি অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নিয়ে দলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রয়ায় এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আগামী অর্থবছরের বাজেট বিশ্লেষণে প্রায় ৩০০০ শব্দ খরচ করেছে বিএনপি।

বিএনপি বলছে, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয় মিলিয়ে সর্বোচ্চ (১৪.৭%) বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পূর্ববর্তী বছরে শিক্ষা খাত পিছিয়ে ছিল। আগামী অর্থবছরে শিক্ষা


ও প্রযুক্তি খাতকে একত্র করে বরাদ্দ দেবার ফলে বোঝা যাচ্ছে না শিক্ষা খাতে নিট বরাদ্দ কত এবং প্রযুক্তি খাতে নিট বরাদ্দ কত। এর মধ্যে শুভঙ্করের কোনো ফাঁক রয়েছে কি না সেটাই প্রশ্ন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত শ্রমশক্তি জরিপ-২০১৫ এর উদ্ধৃতি দিয়ে বিএনপি বলেছে,  গেল দুই বছরে মাত্র ৬ লাখ নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। অর্থাৎ বছরে গড়ে মাত্র ৩ লাখ মানুষ চাকরি বা কাজ পেয়েছেন। প্রতি বছর বেকার হচ্ছে প্রায় ২৪ লাখ মানুষ।

বিএনপির বিশ্লেষণে বলা হয়, মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের কথা বলার ওপর বর্তমান ১৫% ভ্যাট এর অতিরিক্ত ১% সারচার্জ ও ৫% সম্পুরক কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন। এতে ১০০ টাকার কথা বললে গ্রাহককে ২১ টাকা কর দিতে হবে। হাসপাতালে ব্যবহৃত কিছু যন্ত্র এবং ইসিজি ও আল্ট্রাসনোগ্রামে ব্যবহ্রত কাগজ এর ওপর কর প্রস্তাব স্বাস্থ্যসেবাকে আরও ব্যয়বহুল করবে।  আমরা মনে করি এসব ক্ষেত্রে কর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার সুযোগ আছে।

বিশ্লেষণে বলা হয়, রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প মালিকরা ০.৬ শতাংশ উৎস করের স্থলে ১.৫ শতাংশ হারে উৎস কর আরোপে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, এর ফলে ৩ শতাংশ হারে তারা যে মুনাফা করেন তার অর্ধেকটাই সরকার উৎস কর হিসেবে গ্রাস করবে। তারা আরো মনে করেন উৎস কর বাড়ানোর ফলে অনেক ছোট ও মাঝারি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে এবং সামগ্রিকভাবে রপ্তানিমুখী পোশাক খাত প্রতিযোগিতার শক্তি হারাবে। বিএনপি পোশাক শিল্প মালিকদের উদ্বেগের প্রতি সহানুভূতি পোষণ করে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আব্দুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান,  চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনাম আহমেদ চৌধুরী,আব্দুল আউয়াল মিন্টু,সহ দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

আওয়ামী লীগের বাজেট বিশ্লেষণে বিএনপির ৩০০০ শব্দ

আপডেট টাইম : ০৫:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুন ২০১৬

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হলেও একে ‘গতানুগতিক’ আখ্যা দিয়ে শুভঙ্করের ফাঁকি থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছে  প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। বিএনপি মোবাইল ফোনে কথা বলার ওপর বাড়তি করারোপের বিরোধিতা করে এটি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে গার্মেন্ট শিল্পর ওপর উৎসে করারোপেরও সমালোচনা করেছে দলটি।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে চলতি অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নিয়ে দলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রয়ায় এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আগামী অর্থবছরের বাজেট বিশ্লেষণে প্রায় ৩০০০ শব্দ খরচ করেছে বিএনপি।

বিএনপি বলছে, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয় মিলিয়ে সর্বোচ্চ (১৪.৭%) বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পূর্ববর্তী বছরে শিক্ষা খাত পিছিয়ে ছিল। আগামী অর্থবছরে শিক্ষা


ও প্রযুক্তি খাতকে একত্র করে বরাদ্দ দেবার ফলে বোঝা যাচ্ছে না শিক্ষা খাতে নিট বরাদ্দ কত এবং প্রযুক্তি খাতে নিট বরাদ্দ কত। এর মধ্যে শুভঙ্করের কোনো ফাঁক রয়েছে কি না সেটাই প্রশ্ন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত শ্রমশক্তি জরিপ-২০১৫ এর উদ্ধৃতি দিয়ে বিএনপি বলেছে,  গেল দুই বছরে মাত্র ৬ লাখ নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। অর্থাৎ বছরে গড়ে মাত্র ৩ লাখ মানুষ চাকরি বা কাজ পেয়েছেন। প্রতি বছর বেকার হচ্ছে প্রায় ২৪ লাখ মানুষ।

বিএনপির বিশ্লেষণে বলা হয়, মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের কথা বলার ওপর বর্তমান ১৫% ভ্যাট এর অতিরিক্ত ১% সারচার্জ ও ৫% সম্পুরক কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন। এতে ১০০ টাকার কথা বললে গ্রাহককে ২১ টাকা কর দিতে হবে। হাসপাতালে ব্যবহৃত কিছু যন্ত্র এবং ইসিজি ও আল্ট্রাসনোগ্রামে ব্যবহ্রত কাগজ এর ওপর কর প্রস্তাব স্বাস্থ্যসেবাকে আরও ব্যয়বহুল করবে।  আমরা মনে করি এসব ক্ষেত্রে কর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার সুযোগ আছে।

বিশ্লেষণে বলা হয়, রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প মালিকরা ০.৬ শতাংশ উৎস করের স্থলে ১.৫ শতাংশ হারে উৎস কর আরোপে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, এর ফলে ৩ শতাংশ হারে তারা যে মুনাফা করেন তার অর্ধেকটাই সরকার উৎস কর হিসেবে গ্রাস করবে। তারা আরো মনে করেন উৎস কর বাড়ানোর ফলে অনেক ছোট ও মাঝারি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে এবং সামগ্রিকভাবে রপ্তানিমুখী পোশাক খাত প্রতিযোগিতার শক্তি হারাবে। বিএনপি পোশাক শিল্প মালিকদের উদ্বেগের প্রতি সহানুভূতি পোষণ করে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আব্দুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান,  চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনাম আহমেদ চৌধুরী,আব্দুল আউয়াল মিন্টু,সহ দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ।