বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ মা আসছেন এবার নৌকায় চড়ে, থাকবেন কয়েকদিন। আবার চলে যাবেন ঘোড়ায় চড়ে। মাকে বরণ ও বিদায় দেয়া পর্যন্ত এ সময়টুকু সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ঢাকের তালে নেচে গেয়েই পার করবেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজায় প্রায় প্রতিটি মণ্ডপেই ঢাক-ঢোল ও মৃদঙ্গের সঙ্গে ভক্তি-আরাধনা ও আনন্দময় পরিবেশের দেখা মেলে।
তাই এ সময়টাকে কেন্দ্র করে বেচা-বিক্রি বাড়ে এসব বাদ্যযন্ত্রের। রাজধানীর মধ্যে এসব বাদ্যযন্ত্রের বড় একটি প্রাপ্তিস্থান শাখারীবাজার। বছরের এই সময়টাতে (দুর্গাপূজা) ভালো বিক্রির প্রত্যাশায় থাকেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। তবে এবার বেচাবিক্রি হতাশজনক বলেই জানালেন সংশ্লিষ্টরা।
আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর দুর্গাপূজা। রাজধানীতে এবার ৩৬১টি পূজামণ্ডপ হবে। যেখানে থাকবেন ঢুলীরা। ঢোলের বেচাবিক্রি সম্পর্কে জানতে সরেজমিনে শাখারীবাজার পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ৯-১০টি দোকানে ঢাক-ঢোল ও মৃদঙ্গ পাওয়া গেলেও ৪/৫টি দোকান বেশ জনপ্রিয়, যার মধ্যে ৩টি দোকানের সংশ্লিষ্টরাই এগুলোর কারিগর ও বিক্রতা। এই দোকানগুলোতে কেউ একটি আবার কেউ কোনো ঢোলই বিক্রি করতে পারেননি।
শাখারীবাজারে ঢুকেই একটু সামনে বাম পাশের দোকানটি বাদ্যভান্ডার। দোকানটিই এখানকার বড় দোকান। দোকানী গোপাল দাস বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, পুরো বছরের মধ্যে দুর্গাপূজাতেই ঢোল ও মৃদঙ্গ বেশি বিক্রি হয়। এসময় সাধারণত আমরা ১৫-২০টি ঢোল বিক্রি করি। কিন্তু এবার মাত্র ২টি।
তিনি বলেন, ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকা দাম হয় একেকটি ঢোলের। ঢোলের জন্য মানিকগঞ্জ বিখ্যাত। ঢাকার মধ্যে এদিকেই (শাখারীবাজারে) সাধারণত পাওয়া যায়।
ঢোলের বিক্রি কেন কম এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন ডিজিটাল যুগ। ডিজিটাল ব্যবস্থা। এ কারণে এর ব্যবহারও কিছুটা কমেছে। আর এবার বন্যার প্রভাবও রয়েছে।
১৩০নং শাখারীবাজারের দোকানের নাম শ্রীকৃষ্ণ মিউজিক্যাল। দোকানের মালিক স্বপন সরকার বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, প্রতিবছর এ সময়ে ৮-১০টি ঢোলের অর্ডার থাকে। কিন্তু এ বছর একটিও পাইনি।
বাবা সম্ভু দাসের সঙ্গে ছেলে রাজু দাসও ঢোল-মৃদঙ্গ তৈরি করেন। ১০২নং দোকানটিতে ক্রেতার প্রত্যাশার বসে ছিলেন রাজু। তিনি বলেন, ১টি ঢোল বানিয়েছিলাম। তা বিক্রি হয়নি। কোনো অর্ডারও নেই। তবে ২টি মৃদঙ্গ বিক্রি হয়েছে।