ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সমুদ্র উপকূলে বিলুপ্তির পথে শাপলা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জমিতে অধিক মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ করায় ও জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে সমুদ্র উপকূল থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে  শাপলা। মাত্র কয়েক বছর আগেও পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বিভিন্ন এলাকার খাল-বিলে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকত হাজার হাজর শাপলা ফুল।

রং-বেরংয়ের শাপলার বাহারী রূপ দেখে চোখ জুড়িয়ে যেত। এখন গ্রামের পর গ্রাম ঘুড়লেও সেই শাপলার দেখা মিলছে না।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্ষা থেকে শরতের শেষ পর্যন্ত বিল জলাশয় ও নিচু জমিতে প্রাকৃতিকভাবে এ শাপলা জন্মাতো। জমিতে অধিক মাত্রায় আগাছা নাশক ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে এখন সেই শাপলা ক্রমশই হারিয়ে যেতে বসেছে। এসময় এ এলাকার মানুষ শাপলার ফল দিয়ে সুস্বাদু খৈ ভাজাতো। প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জে (ঢ্যাপের খৈ) বলে পরিচিত। মাটির নিচের মূল অংশকে স্থানীয় ভাষায় শালুক বলা হয়।

স্থানীয় শিক্ষক মুজিবুর রহমান জানান, শাপলার ভেষজ গুণও কম নয়। শাপলা সাধারণত লাল ও সাদা রংয়েরই চোখে পড়েছে। এছাড়া আরও বেশ কয়েক রংয়ের শাপলা রয়েছে। এর মধ্যে লাল ও সাদা ফুল বিশিষ্ট শাপলা সবজি হিসেবে ভোজন রসিকরা খায়। তবে লাল রংয়ের শাপলা ঔষধি কাজে ব্যবহৃত হয়। লাল ও সাদা রংয়ের শাপলা খুব পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি। শাক-সবজির চেয়ে এর পুষ্টিগুণ খুব বেশি। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। তিনি আরো জানান, শাপলা চুলকানী ও রক্ত আমাশয়ের জন্য বেশ উপকারী।

বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ওয়াল্ড কনসার্ন কলাপাড়া উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা রজিব বিশ্বাস জানান, চাষের জমিতে অধিক মাত্রায় আগাছা নাশক ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে জমির উর্বরতা দিন দিন কমে গেছে। এছাড়া নিচু জলাশায় জমি ভড়াট করে বসতি স্থাপন করার কারণে শাপলার বংশ বিস্তার কমে যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, খাল-বিল ও আবদ্ধ জলাশয়গুলো দিন দিন শুকিয়ে যাওয়ার কারণে শাপলার শালুক নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে শাপলার বংশ বিস্তারে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

সমুদ্র উপকূলে বিলুপ্তির পথে শাপলা

আপডেট টাইম : ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জমিতে অধিক মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ করায় ও জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে সমুদ্র উপকূল থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে  শাপলা। মাত্র কয়েক বছর আগেও পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বিভিন্ন এলাকার খাল-বিলে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকত হাজার হাজর শাপলা ফুল।

রং-বেরংয়ের শাপলার বাহারী রূপ দেখে চোখ জুড়িয়ে যেত। এখন গ্রামের পর গ্রাম ঘুড়লেও সেই শাপলার দেখা মিলছে না।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্ষা থেকে শরতের শেষ পর্যন্ত বিল জলাশয় ও নিচু জমিতে প্রাকৃতিকভাবে এ শাপলা জন্মাতো। জমিতে অধিক মাত্রায় আগাছা নাশক ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে এখন সেই শাপলা ক্রমশই হারিয়ে যেতে বসেছে। এসময় এ এলাকার মানুষ শাপলার ফল দিয়ে সুস্বাদু খৈ ভাজাতো। প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জে (ঢ্যাপের খৈ) বলে পরিচিত। মাটির নিচের মূল অংশকে স্থানীয় ভাষায় শালুক বলা হয়।

স্থানীয় শিক্ষক মুজিবুর রহমান জানান, শাপলার ভেষজ গুণও কম নয়। শাপলা সাধারণত লাল ও সাদা রংয়েরই চোখে পড়েছে। এছাড়া আরও বেশ কয়েক রংয়ের শাপলা রয়েছে। এর মধ্যে লাল ও সাদা ফুল বিশিষ্ট শাপলা সবজি হিসেবে ভোজন রসিকরা খায়। তবে লাল রংয়ের শাপলা ঔষধি কাজে ব্যবহৃত হয়। লাল ও সাদা রংয়ের শাপলা খুব পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি। শাক-সবজির চেয়ে এর পুষ্টিগুণ খুব বেশি। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। তিনি আরো জানান, শাপলা চুলকানী ও রক্ত আমাশয়ের জন্য বেশ উপকারী।

বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ওয়াল্ড কনসার্ন কলাপাড়া উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা রজিব বিশ্বাস জানান, চাষের জমিতে অধিক মাত্রায় আগাছা নাশক ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে জমির উর্বরতা দিন দিন কমে গেছে। এছাড়া নিচু জলাশায় জমি ভড়াট করে বসতি স্থাপন করার কারণে শাপলার বংশ বিস্তার কমে যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, খাল-বিল ও আবদ্ধ জলাশয়গুলো দিন দিন শুকিয়ে যাওয়ার কারণে শাপলার শালুক নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে শাপলার বংশ বিস্তারে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।