ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাহরি ও ইফতারের ফজিলত

রোজা রাখার উদ্দেশ্যে ভোররাতে যে পানাহার করা হয় তাকে ‘সাহরি’ বলা হয়। যে কোনো রোজার জন্য সাহরি খাওয়া সুন্নাত (জরুরি নয়)। রাসুলে আরাবি (সা.) বলেছেন, তোমরা সাহরি খাও; কারণ সাহরিতে যা খাওয়া হয় তাতে বরকত থাকে (মিশকাত শরিফ)। সুতরাং কখনো তোমরা

 

সাহরি খাওয়া ত্যাগ করো না। কিছু পাওয়া না গেলে এক ঢোঁক পানি হলেও পান করে নিও; কারণ যারা সাহরি খায় তাদের প্রতি আল্লাহ রহম করেন এবং ফেরেশতারা তাদের প্রতি কল্যাণের দোয়া করেন।

 

কোনো কারণে কেউ যদি সাহরি খেতে নাও পারে এ জন্য রোজা ত্যাগ করা যাবে না। কেননা রমজানের রোজা রাখা সম্পর্কে মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে বলা হয়েছে, ‘ফামান শাহিদা মিন কুমুশ শাহরা ফাল ইয়া সমুহু’। অর্থাৎ যে ব্যক্তি মাসটি পাবে, তারই কর্তব্য হচ্ছে রোজা রাখা (সুরা : বাকারা ১৮৫)।

 

এ ফরজ পালনের জন্য সাহরি খাওয়াকে জরুরি করা হয়নি। সুতরাং সাহরি না খেলেও রোজা হবে, তবে এটা সুন্নতের পরিপন্থী। রাতের শেষাংশে সাহরি খাওয়া সুন্নাত। রাসুলে আরাবি (সা.) এবং তার সাহাবারা রাতের শেষাংশে সাহরি খেতেন। সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত সাহরি খাওয়া যায়। অর্থাৎ সুবহে সাদিকের উদয় তথা ফজর নামাজের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সাহরির সময় শেষ হয়ে যায়।

 

ইফতার : ‘ইফতার’ শব্দটি আরবি। অর্থ ভঙ্গ করা। সারাদিন রোজা রেখে যথাসময়ে তা ভেঙে ফেলাকে ইফতার বলা হয়। আর যা দ্বারা ইফতার করা হয় তাকে বলে ‘ইফতারি’। আর ইফতারি করাও সাহরির মতো সুন্নাত। সাহরিতে বিলম্ব করা ছিল সুন্নাত; কিন্তু ইফতারির সুন্নত হলো বিলম্ব না করা। সুতরাং সূর্যাস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইফতারির সুন্নাত সময়।

 

ইফতারির ফজিলত সম্পর্কে রাসুলে আরাবি (সা.) ইরশাদ করেন, রোজাদার বান্দার জন্য দুটি খুশি একটি হলো সারাদিন রোজা রাখার পর দিনের শেষে ইফতার করার খুশি আর দ্বিতীয় খুশি হলো কেয়ামতের দিন আল্লাহর দিদার লাভ করা।

 

অপর এক হাদিসে বলা হয়েছে লোকেরা ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে, যতদিন তারা ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করার বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করবে (বুখারি)।

 

অপর হাদিসে বলা হয়েছে রাসুলে আরাবি (সা.) ইরশাদ করেছেন আল্লাহ পাক বলেন, ‘বান্দাদের মধ্যে আমার নিকট সর্বাধিক প্রিয় ওই লোকগুলো, যারা সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইফতার করার প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়’ (তিরমিজি)।

 

কাউকে ইফতার করানোর ফজিলত সম্পর্কে রাসুলে আরাবি (সা.) ইরশাদ করেন যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে তার জন্যও অনুরূপ সওয়াব রয়েছে (তিরমিজি)।
Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

সাহরি ও ইফতারের ফজিলত

আপডেট টাইম : ০৪:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুন ২০১৬
রোজা রাখার উদ্দেশ্যে ভোররাতে যে পানাহার করা হয় তাকে ‘সাহরি’ বলা হয়। যে কোনো রোজার জন্য সাহরি খাওয়া সুন্নাত (জরুরি নয়)। রাসুলে আরাবি (সা.) বলেছেন, তোমরা সাহরি খাও; কারণ সাহরিতে যা খাওয়া হয় তাতে বরকত থাকে (মিশকাত শরিফ)। সুতরাং কখনো তোমরা

 

সাহরি খাওয়া ত্যাগ করো না। কিছু পাওয়া না গেলে এক ঢোঁক পানি হলেও পান করে নিও; কারণ যারা সাহরি খায় তাদের প্রতি আল্লাহ রহম করেন এবং ফেরেশতারা তাদের প্রতি কল্যাণের দোয়া করেন।

 

কোনো কারণে কেউ যদি সাহরি খেতে নাও পারে এ জন্য রোজা ত্যাগ করা যাবে না। কেননা রমজানের রোজা রাখা সম্পর্কে মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে বলা হয়েছে, ‘ফামান শাহিদা মিন কুমুশ শাহরা ফাল ইয়া সমুহু’। অর্থাৎ যে ব্যক্তি মাসটি পাবে, তারই কর্তব্য হচ্ছে রোজা রাখা (সুরা : বাকারা ১৮৫)।

 

এ ফরজ পালনের জন্য সাহরি খাওয়াকে জরুরি করা হয়নি। সুতরাং সাহরি না খেলেও রোজা হবে, তবে এটা সুন্নতের পরিপন্থী। রাতের শেষাংশে সাহরি খাওয়া সুন্নাত। রাসুলে আরাবি (সা.) এবং তার সাহাবারা রাতের শেষাংশে সাহরি খেতেন। সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত সাহরি খাওয়া যায়। অর্থাৎ সুবহে সাদিকের উদয় তথা ফজর নামাজের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সাহরির সময় শেষ হয়ে যায়।

 

ইফতার : ‘ইফতার’ শব্দটি আরবি। অর্থ ভঙ্গ করা। সারাদিন রোজা রেখে যথাসময়ে তা ভেঙে ফেলাকে ইফতার বলা হয়। আর যা দ্বারা ইফতার করা হয় তাকে বলে ‘ইফতারি’। আর ইফতারি করাও সাহরির মতো সুন্নাত। সাহরিতে বিলম্ব করা ছিল সুন্নাত; কিন্তু ইফতারির সুন্নত হলো বিলম্ব না করা। সুতরাং সূর্যাস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইফতারির সুন্নাত সময়।

 

ইফতারির ফজিলত সম্পর্কে রাসুলে আরাবি (সা.) ইরশাদ করেন, রোজাদার বান্দার জন্য দুটি খুশি একটি হলো সারাদিন রোজা রাখার পর দিনের শেষে ইফতার করার খুশি আর দ্বিতীয় খুশি হলো কেয়ামতের দিন আল্লাহর দিদার লাভ করা।

 

অপর এক হাদিসে বলা হয়েছে লোকেরা ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে, যতদিন তারা ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করার বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করবে (বুখারি)।

 

অপর হাদিসে বলা হয়েছে রাসুলে আরাবি (সা.) ইরশাদ করেছেন আল্লাহ পাক বলেন, ‘বান্দাদের মধ্যে আমার নিকট সর্বাধিক প্রিয় ওই লোকগুলো, যারা সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইফতার করার প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়’ (তিরমিজি)।

 

কাউকে ইফতার করানোর ফজিলত সম্পর্কে রাসুলে আরাবি (সা.) ইরশাদ করেন যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে তার জন্যও অনুরূপ সওয়াব রয়েছে (তিরমিজি)।