ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চন্দনাইশে হারিয়ে যাচ্ছে কুঠির শিল্প

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী কুঠির শিল্প। এক সময় কুঠির শিল্পীদের বেত ও বাঁশের তৈরি লাই, কুলা, ঝুড়ি ও বাড়িতে ধান রাখার ঢোলসহ ইত্যাদি জিনিসপত্র তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে অনেক পরিবার সংসার চালিয়ে আসছিল। তখনকার দিনে গ্রাম বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে বেত ও বাঁশের তৈরি কুঠির শিল্পের জিনিসপত্রের ব্যবহার থাকায় শিল্পীদের যথেষ্ট কদর ছিল।
আউশ ও আমন ধানের মৌসুমে উপজেলার সাতবাড়িয়া কদম পাড়া ও জোয়ারা (হিন্দুপাড়া) গ্রামের অনেক কুঠির শিল্পী তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ঘরে বসে বেত ও বাঁশের জিনিসপত্র লাই ,কুলা ,ঝুড়ি ও বাঁশের তৈরি করা ধান রাখার ঢোলসহ  ইত্যাদি তিরীতে ব্যস্ত সময় পাড় করেছিল। আর তাদের তৈরিকৃত জিনিসপত্র পুরুষ লোকেরা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার এবং গ্রামে গ্রামে গিয়ে তা বিক্রি করে যে অর্থ উপার্জিত করতো তা দিয়ে তাদের সংসার চলত।
বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্লাস্টিকের আসবাব পত্রের কাছে ক্রমে ক্রমে সেই গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য কুঠির শিল্প এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। সেই দিনের কদর আর বেত ও বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা না থাকায় এখন কুঠির শিল্পীদের দুর্দিন চলছে। ফলে অনেক কুঠির শিল্পী পরিবার তাদের বাপ-দাদার জাত পেশা ছেড়ে দিয়ে এখন অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। শিল্পী নুর আহমদ জানান, এখন আমাদের দুর্দিন চলছে বাজারে বেত ও বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রের তেমন কোন কদর নাই, ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছে না। এতে সংসার চালানে দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।
কুঠির শিল্পী জ্যোৎস্না বেগম জানান, আগে যেখানে সেখানে বেত ও বাঁশ পাওয়া যেত বলে তার দামও কম ছিল। এখন বেত ও বাঁশ পাওয়া দুর্লভ হয়ে পড়েছে এবং দামও চড়া। এসব সরঞ্জাম খরিদ করে কুলা, ধান রাখার ঢোল, ঝুড়ি তৈরি করে বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায় তা খরচ পুষিয়ে উঠছে না। একাজে পুঁজির প্রয়োজন বলে কুঠির শিল্পীরা জানান। তাতে সরকারিভাবে সহযোগিতা পাওয়া গেলে কুঠির শিল্পের জিনিস পত্র তৈরি করতে সহায়ক হবে বলে তারা আরও জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. লুৎফুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান কেউ এ বিষয় নিয়ে আর্থিক সহযোগিতা চাননি। চাইলে সহযোগিতা করা হবে।
Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

চন্দনাইশে হারিয়ে যাচ্ছে কুঠির শিল্প

আপডেট টাইম : ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৭
বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী কুঠির শিল্প। এক সময় কুঠির শিল্পীদের বেত ও বাঁশের তৈরি লাই, কুলা, ঝুড়ি ও বাড়িতে ধান রাখার ঢোলসহ ইত্যাদি জিনিসপত্র তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে অনেক পরিবার সংসার চালিয়ে আসছিল। তখনকার দিনে গ্রাম বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে বেত ও বাঁশের তৈরি কুঠির শিল্পের জিনিসপত্রের ব্যবহার থাকায় শিল্পীদের যথেষ্ট কদর ছিল।
আউশ ও আমন ধানের মৌসুমে উপজেলার সাতবাড়িয়া কদম পাড়া ও জোয়ারা (হিন্দুপাড়া) গ্রামের অনেক কুঠির শিল্পী তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ঘরে বসে বেত ও বাঁশের জিনিসপত্র লাই ,কুলা ,ঝুড়ি ও বাঁশের তৈরি করা ধান রাখার ঢোলসহ  ইত্যাদি তিরীতে ব্যস্ত সময় পাড় করেছিল। আর তাদের তৈরিকৃত জিনিসপত্র পুরুষ লোকেরা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার এবং গ্রামে গ্রামে গিয়ে তা বিক্রি করে যে অর্থ উপার্জিত করতো তা দিয়ে তাদের সংসার চলত।
বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্লাস্টিকের আসবাব পত্রের কাছে ক্রমে ক্রমে সেই গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য কুঠির শিল্প এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। সেই দিনের কদর আর বেত ও বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা না থাকায় এখন কুঠির শিল্পীদের দুর্দিন চলছে। ফলে অনেক কুঠির শিল্পী পরিবার তাদের বাপ-দাদার জাত পেশা ছেড়ে দিয়ে এখন অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। শিল্পী নুর আহমদ জানান, এখন আমাদের দুর্দিন চলছে বাজারে বেত ও বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রের তেমন কোন কদর নাই, ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছে না। এতে সংসার চালানে দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।
কুঠির শিল্পী জ্যোৎস্না বেগম জানান, আগে যেখানে সেখানে বেত ও বাঁশ পাওয়া যেত বলে তার দামও কম ছিল। এখন বেত ও বাঁশ পাওয়া দুর্লভ হয়ে পড়েছে এবং দামও চড়া। এসব সরঞ্জাম খরিদ করে কুলা, ধান রাখার ঢোল, ঝুড়ি তৈরি করে বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায় তা খরচ পুষিয়ে উঠছে না। একাজে পুঁজির প্রয়োজন বলে কুঠির শিল্পীরা জানান। তাতে সরকারিভাবে সহযোগিতা পাওয়া গেলে কুঠির শিল্পের জিনিস পত্র তৈরি করতে সহায়ক হবে বলে তারা আরও জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. লুৎফুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান কেউ এ বিষয় নিয়ে আর্থিক সহযোগিতা চাননি। চাইলে সহযোগিতা করা হবে।