বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ পদ্ম বিল মানেই তো বিস্তীর্ণ জলাভূমির মাঝে হাজারো পদ্ম। ভাবুন তো, শরতের পরিষ্কার আকাশের প্রতিচ্ছবি ভাসছে বিলের জলে। বিলের মাঝে আধাডোবা মেঠোপথ ধরে আপনি হাঁটছেন বিলের মাঝ দিয়ে। কখনো হারিয়ে যাচ্ছেন পদ্মের মাঝে। কখনো বা চড়ছেন নৌকাতে, রূপকথার মতো লাগছে? হ্যাঁ, আপনি রূপকথার মতোই এমন অপার সৌন্দর্য এ নিজেকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও হারিয়ে ফেলতে পারেন উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার চান্দামারীর পদ্ম বিলে। তবে সময়টা হতে হবে শরৎকাল ইংরেজি অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত, কারণ পরবর্তী সময়ে বিলে চাষ করা হয় আউশ ধান।
এ অঞ্চলের একটি বিখ্যাত মাছ হলো চান্দা মাছ, যা একসময় এ বিলে পাওয়া যেত প্রচুর। আর সেই চান্দা মাছ থেকেই সম্ভবত এ বিলের নামকরণ করা হয়েছে চান্দামারী। তবে এখনো এ বিলে মাছ পাওয়া যায় প্রচুর। নগর জীবনের একঘেয়েমি ও ব্যস্ততার হাত থেকে ক্ষণিকের জন্য নিজেকে মুক্তি দিতে ঘুরে আসুন কুড়িগ্রামের চান্দামারীর পদ্ম বিল থেকে।
যেভাবে যাবেন-রাজধানীর আসাদগেট, কল্যাণপুর অথবা গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে যেকোনো কুড়িগ্রামগামী বাসে করে প্রথমে আপনাকে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় যেতে হবে। এসি বাসের ক্ষেত্রে টিকেটের দাম পড়বে ৮০০ টাকা আর ননএসি বাসের ক্ষেত্রে টিকেটের দাম পড়বে ৫৫০ টাকা। ভালো বাসগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো হক স্পেশাল নাবিল, হানিফ, এসএন ও এনা পরিবহন। কুড়িগ্রামে বেশ কিছু ভালো থাকার হোটেল আছে, হোটেল অর্ণব প্যালেস, হোটেল ডিকে, হোটেল মেহেদি। রাতের বাসে রওনা করলে বাস আপনাকে কুড়িগ্রামে নামিয়ে দেবে খুব সকালে। যেকোনো হোটেলে উঠে আপনি সেখানে রেস্ট নিতে পারবেন। তবে আপনাকে সকালের নাশতা হোটেলের বাইরে আলাদা করে সেরে নিতে হবে।
চান্দামারীর পদ্ম বিলে যাওয়ার জন্য বিকেল বেলাই উত্তম, তবে আপনাকে রওনা করতে হবে ৩টার মধ্যেই। এই ফাঁকে আপনি কুড়িগ্রাম শহরটা ঘুরে দেখতে পারেন। দুপুরের খাবার সেরে হালকা রেস্ট নিয়ে আপনি রওনা করতে পারেন চান্দামারীর উদ্দেশে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ড অথবা শাপলা মোড় থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করতে হবে। জনপ্রতি রাজারহাট বাজার পর্যন্ত ভাড়া পড়বে ২০ টাকা আর রিজার্ভ গেলে ভাড়া পড়বে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশায় পাঁচ থেকে ছয়জন পর্যন্ত বসতে পারবেন। রাজারহাট বাজার থেকে ১০ টাকা ভাড়ায় যেতে পারবেন চান্দামারীর পদ্ম বিলে। রাস্তা থেকেই আপনি পদ্ম বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন, তবে চাইলে নৌকা ভাড়া করে যেতে পারবেন বিলের গভীরে। আপনি চাইলে সম্পূর্ণ বিকেলটা কাটাতে পারেন এ বিলে। হাতে সময় থাকলে দেখে আসতে পারেন চান্দামারীর মসজিদ, রাজারহাটের সিন্দুর-মতি পুকুর ও মন্দির।
কোথায় খাবেন-খাবারের জন্য কুড়িগ্রামে রয়েছে একাধিক হোটেল, তবে কুড়িগ্রামের যেসব হোটেল রয়েছে তার মধ্যে দুপুরের খাবারের জন্য শাপলা মোড়ের নান্না বিরিয়ানি, এশিয়া হোটেল ও কাপড় বাজার এলাকার বগুড়া দধিঘর অন্যতম। আর দামে খুব সস্তা। আর কুড়িগ্রামে এসে ধরলা নদীর পাড়ের সাজুর দোকানের বিখ্যাত চা আর চপের স্বাদ না নিলেই যেন নয়।
সতর্কতা
১) দূরের পথে সঙ্গে শুকনো খাবার নিতে পারেন।
২) বাসের ছাদে উঠবেন না।
৩) অটোরিকশায় লাফালাফি করবেন না।
৪) সব যানবাহনে ওঠার আগে ভাড়া ঠিক করে নিন।
৫) নৌকায় বসার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
৬) এক নৌকায় চার থেকে পাঁচজনের বেশি উঠবেন না।
সূত্রঃ এনটিভি