ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিরলতম পরিযায়ী পাখি কলজেবুটি কাঠকুড়ালি

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অনিয়মিত ও বিরলতম পরিযায়ী পাখি। কচ্ছপাকৃতি গোলাকার গড়ন। দেখতে মন্দ নয়। শরীরে সাদা-কালো আঁকিবুঁকি। পরখ করে দেখলে বোঝা যায়, ডানার প্রান্তে কালো রঙের হৃৎপিণ্ড আকৃতির দাগ। যা থেকেই এদের নামকরণের সূত্রপাত। স্বভাবে চঞ্চল। অন্যসব প্রজাতির কাঠঠোকরাদের মতো যত্রতত্র দেখা যায় না। দেখা মেলে চিরসবুজ ও আর্দ্র পাতাঝরা বনে। বাঁশ বনেও দেখা মেলে।

বিচরণ করে একাকী কিংবা জোড়ায় জোড়ায়। গাছের কাণ্ডের চারপাশে লাফিয়ে ঘুরে ঘুরে শিকার খোঁজে। এ সময় শক্ত-মজবুত ঠোঁট চালিয়ে গাছের বাকলের ভেতরে লুকিয়ে থাকা কীটপতঙ্গ বের করে আনে। শিকার পেলে তীক্ষ্ণকণ্ঠে ‘ক্লিক-ক্লিক’ সুরে ডেকে ওঠে। এ ছাড়াও মাঝে মধ্যে গাছের ডালের চারপাশে ঘুরে ঘুরে ‘টুই-টুই-টিটিটিটিটি’ সুরে ডাকতে থাকে। দেশের সিলেট ও চট্টগ্রামের গহিন বনাঞ্চলে দেখা যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে।

বাংলাদেশ ছাড়াও বৈশ্বিক বিস্তৃতি মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও ইন্দোচীন পর্যন্ত। প্রজাতিটি বিশ্বে বিপন্মুক্ত। বাংলাদেশে অপ্রতুল তথ্য শ্রেণিতে রয়েছে। প্রজাতিটি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে সংরক্ষিত। অন্যসব কাঠঠোকরার মতোই এদের শক্রসংখ্যা নগণ্য। তথাপিও এদের সংখ্যা অপ্রতুল্য। প্রধান কারণটি হচ্ছে অবাধে বৃক্ষ নিধন; ফলে প্রজননে বিঘ্ন ঘটছে।

পাখির বাংলা নাম: ‘কলজেবুটি কাঠকুড়ালি’, ইংরেজি নাম: ‘হার্ট-স্পোটেড উডপেকার’ (Heart-spotted Woodpecker), বৈজ্ঞানিক নাম: Heart-spotted Woodpecker। এরা ‘হৃৎপিণ্ড-ফোঁটাযুক্ত কাঠঠোকরা’ নামেও পরিচিত।

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১৫-১৬ সেন্টিমিটার। ওজন ৩৬ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় সামান্য পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ পাখির কপাল কালো, স্ত্রী পাখির কপাল সাদা। এ ছাড়া উভয়েরই ঝুঁটি পেছনের দিকে খাড়া। ঘাড় কালো, দু’পাশ পীতাভ সাদা। শরীরের ওপরের অংশ কালোর ওপর সাদা। ডানার সাদা বাজু অংশে কালো রঙের ছোট হৃৎপিণ্ড আকারের ফোঁটা। খাটো লেজ; কালো বর্ণের। দেহতল কালচে-জলপাই। ঠোঁট শিঙ-বাদামি। চোখ জলপাই বাদামি। পা ও পায়ের পাতা স্নেট কালো। অপ্রাপ্তবয়স্কদের চেহারা অনেকটাই স্ত্রী পাখির মতো।

প্রধান খাবার: গাছ পিঁপড়া, উইপোকা ও পোকামাকড়।

প্রজনন মৌসুম নভেম্বর থেকে শুরু করে এপ্রিল পর্যন্ত। বাসা বাঁধে গাছের মরা কাণ্ডে গর্ত বানিয়ে। নিজেরাই গর্ত খুঁড়ে নেয়। ডিম পাড়ে ২-৩টি। ডিম ফুটতে কত দিন সময় লাগে সেই তথ্য আজ অবধি জানা যায়নি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

বিরলতম পরিযায়ী পাখি কলজেবুটি কাঠকুড়ালি

আপডেট টাইম : ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ নভেম্বর ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অনিয়মিত ও বিরলতম পরিযায়ী পাখি। কচ্ছপাকৃতি গোলাকার গড়ন। দেখতে মন্দ নয়। শরীরে সাদা-কালো আঁকিবুঁকি। পরখ করে দেখলে বোঝা যায়, ডানার প্রান্তে কালো রঙের হৃৎপিণ্ড আকৃতির দাগ। যা থেকেই এদের নামকরণের সূত্রপাত। স্বভাবে চঞ্চল। অন্যসব প্রজাতির কাঠঠোকরাদের মতো যত্রতত্র দেখা যায় না। দেখা মেলে চিরসবুজ ও আর্দ্র পাতাঝরা বনে। বাঁশ বনেও দেখা মেলে।

বিচরণ করে একাকী কিংবা জোড়ায় জোড়ায়। গাছের কাণ্ডের চারপাশে লাফিয়ে ঘুরে ঘুরে শিকার খোঁজে। এ সময় শক্ত-মজবুত ঠোঁট চালিয়ে গাছের বাকলের ভেতরে লুকিয়ে থাকা কীটপতঙ্গ বের করে আনে। শিকার পেলে তীক্ষ্ণকণ্ঠে ‘ক্লিক-ক্লিক’ সুরে ডেকে ওঠে। এ ছাড়াও মাঝে মধ্যে গাছের ডালের চারপাশে ঘুরে ঘুরে ‘টুই-টুই-টিটিটিটিটি’ সুরে ডাকতে থাকে। দেশের সিলেট ও চট্টগ্রামের গহিন বনাঞ্চলে দেখা যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে।

বাংলাদেশ ছাড়াও বৈশ্বিক বিস্তৃতি মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও ইন্দোচীন পর্যন্ত। প্রজাতিটি বিশ্বে বিপন্মুক্ত। বাংলাদেশে অপ্রতুল তথ্য শ্রেণিতে রয়েছে। প্রজাতিটি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে সংরক্ষিত। অন্যসব কাঠঠোকরার মতোই এদের শক্রসংখ্যা নগণ্য। তথাপিও এদের সংখ্যা অপ্রতুল্য। প্রধান কারণটি হচ্ছে অবাধে বৃক্ষ নিধন; ফলে প্রজননে বিঘ্ন ঘটছে।

পাখির বাংলা নাম: ‘কলজেবুটি কাঠকুড়ালি’, ইংরেজি নাম: ‘হার্ট-স্পোটেড উডপেকার’ (Heart-spotted Woodpecker), বৈজ্ঞানিক নাম: Heart-spotted Woodpecker। এরা ‘হৃৎপিণ্ড-ফোঁটাযুক্ত কাঠঠোকরা’ নামেও পরিচিত।

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১৫-১৬ সেন্টিমিটার। ওজন ৩৬ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় সামান্য পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ পাখির কপাল কালো, স্ত্রী পাখির কপাল সাদা। এ ছাড়া উভয়েরই ঝুঁটি পেছনের দিকে খাড়া। ঘাড় কালো, দু’পাশ পীতাভ সাদা। শরীরের ওপরের অংশ কালোর ওপর সাদা। ডানার সাদা বাজু অংশে কালো রঙের ছোট হৃৎপিণ্ড আকারের ফোঁটা। খাটো লেজ; কালো বর্ণের। দেহতল কালচে-জলপাই। ঠোঁট শিঙ-বাদামি। চোখ জলপাই বাদামি। পা ও পায়ের পাতা স্নেট কালো। অপ্রাপ্তবয়স্কদের চেহারা অনেকটাই স্ত্রী পাখির মতো।

প্রধান খাবার: গাছ পিঁপড়া, উইপোকা ও পোকামাকড়।

প্রজনন মৌসুম নভেম্বর থেকে শুরু করে এপ্রিল পর্যন্ত। বাসা বাঁধে গাছের মরা কাণ্ডে গর্ত বানিয়ে। নিজেরাই গর্ত খুঁড়ে নেয়। ডিম পাড়ে ২-৩টি। ডিম ফুটতে কত দিন সময় লাগে সেই তথ্য আজ অবধি জানা যায়নি।