ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছুটির দিনে ঘুরে আসতে পারেন ‌‘গোলাপ গ্রাম’

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ইট পাথর আর কংক্রিটে পরিপূর্ণ ঢাকা শহর। সুস্থভাবে অক্সিজেন নিয়ে নিঃশ্বাস ফেলার মতো জায়গা মেলাই ভার! বাতাসে কার্বন ড্রাই অক্সাইড ও সিসার পরিমাণই বেশি। একটু মুক্ত হাওয়া আর স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে ছুটির দিনে ঘুরে আসতে পারেন ঢাকার অদূরে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের ‘গোলাপ গ্রামে’। এই ইউনিয়নের সাদুল্লাহপুর, শ্যামপুর, মোস্তাপাড়া গ্রামজুড়ে আছে গোলাপের রাজ্য।

যতদূর চোখ যায়, শুধু গোলাপ আর গোলাপ। তাই এ গ্রামগুলো এখন ‘গোলাপ গ্রাম’ নামেই বেশি পরিচিত। তুরাগ নদীর অববাহিকায় মিরপুর বেড়িবাঁধের পশ্চিম পাশে অবস্থিত সাদুল্লাহপুর, শ্যামপুর, মোস্তা পাড়া গ্রাম। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সাদুল্লাহপুর গ্রামটি ভাওয়াল রাজার অধীনস্থ ছিল। যদিও রাজার রাজত্বে তার কোনো বংশধর এ এলাকায় নেই। তার রেখে যাওয়া সম্পদ যে যেভাবে পারে ভোগ করছে। এলাকার আধিপত্য আর ক্ষমতার দাপটে রাজার রেখে যাওয়া শেষ বাড়িটির একটু চিহ্ন থাকলেও বাকিটা রয়েছে নানা মানুষের দখলে।

মিরপুরের দিয়াবাড়ি থেকে ট্রলারে উঠলে ৩০ মিনিটের মধ্যে আপনাকে নামিয়ে দেবে সাদুল্লাহপুর বটতলায়। বেশ বড় বটবৃক্ষটির পাশেই ছোটখাট একটু বাজার। এখানে চা সিংগাড়া খেয়ে সোজা পিচঢালা পথ দিয়ে কিছু দূর গেলেই চোখে পড়বে গোলাপ ক্ষেত। যেখানে তারায় মতো ফুটে রয়েছে গোলাপ। এ পিচঢালা পথ ধরে যত আগাতে থাকবেন ততই দেখবেন গোলাপ ফুলের বাগান। বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত এ সব গোলাপ ঢাকাসহ সারাদেশে সরবরাহ করা হয়।

Related imageযেভাবে যাবেন গোলাপ গ্রামে: ঢাকার খুব কাছেই সাভারে তুরাগ তীরে সাদুল্লাপুর (গোলাপ গ্রাম)-এর অবস্থান। ঢাকার যেকোনো জায়গা থেকে আপনি গাবতলী আসতে পারেন। ভাড়া ২০-২৫ টাকা। এরপর গাবতলী বাসস্টান্ড থেকে যেকোনো বাসে সাভার বাসস্ট্যান্ডের ওভারব্রিজের নিচে নামতে হবে। গাড়ি ভাড়া ২৫ টাকা। ওভারব্রিজ পাড় হয়ে পূর্ব দিকের বিরুলিয়া ইউনিয়নের রাস্তায় ব্যাটারিচালিত হ্যালো বাইকে করে ভাড়া ২০ টাকা দূরত্ব হবে ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার। চলে যাবেন স্বপ্নের মতো সুন্দর গোলাপ গ্রামে।

অন্যান্য যাতায়াত ব্যবস্থা: মিরপুর শাহআলী মাজার এর সামনে কোনাবাড়ী বাসষ্ট্যান্ড থেকে বাসে করে আকরান বাজার। ভাড়া ২০ টাকা। আকরান বাজার থেকে অটোতে করে ফুলের বাজারে কিংবা সাদুল্লাহপুর গ্রাম। ভাড়া ১০ টাকা। নিজস্ব পরিবহনে যেতে চাইলে এই পথ দিয়ে যাওয়া যাবে।

সাভার থেকে আসতে চাইলে সাভার চৌরংগী মার্কেটের সামনে থেকে লেগুনা/মিনি বাস আসে আকরান বাজার। এরপর আকরাম বাজার থেকে অটোতে সাদুল্লাহপুর গ্রাম। নিজস্ব পরিবহনেও এই পথ দিয়ে আসা যাবে।

আবদুল্লাহপুর/উত্তরা থেকে আসতে চাইলে আশুলিয়া রোড দিয়ে লেগুনা দিয়ে বিরুলিয়া ব্রিজ নামতে হবে। ব্রিজ থেকে অটো/মিনি বাসে করে আকরান বাজার সেখান থেকে অটোতে সাদুল্লাহপুর গ্রাম। নিজস্ব পরিবহনেও এই পথ দিয়ে আসা যাবে।

নবীনগর/জিরাবো/সাভার থেকে আলিফ/মোহনা পরিবহনে করে আসলে বিরুলিয়া ব্রিজ। ব্রিজ থেকে অটো/মিনি বাসে করে আকরান বাজার সেখান অটোতে থেকে সাদুল্লাহপুর গ্রাম। নিজস্ব পরিবহনেও এই পথ দিয়ে আসা যাবে।

সতর্কতা: যারা সাঁতার জানেন না তাদের স্থলপথে গোলাপ গ্রামে যাওয়াই ভাল। আর যারা নৌপথে ভ্রমণ করবেন তারা সন্ধ্যা ৭ থেকে ৮ টার মধ্যে ফেরার চেষ্টা করবেন। কারণ রাত আটটার পর নৌ-চলাচল বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বন্ধ থাকে। গোলাপ বাগানে গিয়ে গোলাপ ছিড়বেন না। গ্রামে ভালো খাবারের হোটেল না থাকায় আপনি খাবার নিয়ে যেতে পারেন। গ্রামের মানুষ বিরক্ত বা তাদের অসুবিধা হয় এমন কাজ করবেন না।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

ছুটির দিনে ঘুরে আসতে পারেন ‌‘গোলাপ গ্রাম’

আপডেট টাইম : ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ইট পাথর আর কংক্রিটে পরিপূর্ণ ঢাকা শহর। সুস্থভাবে অক্সিজেন নিয়ে নিঃশ্বাস ফেলার মতো জায়গা মেলাই ভার! বাতাসে কার্বন ড্রাই অক্সাইড ও সিসার পরিমাণই বেশি। একটু মুক্ত হাওয়া আর স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে ছুটির দিনে ঘুরে আসতে পারেন ঢাকার অদূরে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের ‘গোলাপ গ্রামে’। এই ইউনিয়নের সাদুল্লাহপুর, শ্যামপুর, মোস্তাপাড়া গ্রামজুড়ে আছে গোলাপের রাজ্য।

যতদূর চোখ যায়, শুধু গোলাপ আর গোলাপ। তাই এ গ্রামগুলো এখন ‘গোলাপ গ্রাম’ নামেই বেশি পরিচিত। তুরাগ নদীর অববাহিকায় মিরপুর বেড়িবাঁধের পশ্চিম পাশে অবস্থিত সাদুল্লাহপুর, শ্যামপুর, মোস্তা পাড়া গ্রাম। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সাদুল্লাহপুর গ্রামটি ভাওয়াল রাজার অধীনস্থ ছিল। যদিও রাজার রাজত্বে তার কোনো বংশধর এ এলাকায় নেই। তার রেখে যাওয়া সম্পদ যে যেভাবে পারে ভোগ করছে। এলাকার আধিপত্য আর ক্ষমতার দাপটে রাজার রেখে যাওয়া শেষ বাড়িটির একটু চিহ্ন থাকলেও বাকিটা রয়েছে নানা মানুষের দখলে।

মিরপুরের দিয়াবাড়ি থেকে ট্রলারে উঠলে ৩০ মিনিটের মধ্যে আপনাকে নামিয়ে দেবে সাদুল্লাহপুর বটতলায়। বেশ বড় বটবৃক্ষটির পাশেই ছোটখাট একটু বাজার। এখানে চা সিংগাড়া খেয়ে সোজা পিচঢালা পথ দিয়ে কিছু দূর গেলেই চোখে পড়বে গোলাপ ক্ষেত। যেখানে তারায় মতো ফুটে রয়েছে গোলাপ। এ পিচঢালা পথ ধরে যত আগাতে থাকবেন ততই দেখবেন গোলাপ ফুলের বাগান। বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত এ সব গোলাপ ঢাকাসহ সারাদেশে সরবরাহ করা হয়।

Related imageযেভাবে যাবেন গোলাপ গ্রামে: ঢাকার খুব কাছেই সাভারে তুরাগ তীরে সাদুল্লাপুর (গোলাপ গ্রাম)-এর অবস্থান। ঢাকার যেকোনো জায়গা থেকে আপনি গাবতলী আসতে পারেন। ভাড়া ২০-২৫ টাকা। এরপর গাবতলী বাসস্টান্ড থেকে যেকোনো বাসে সাভার বাসস্ট্যান্ডের ওভারব্রিজের নিচে নামতে হবে। গাড়ি ভাড়া ২৫ টাকা। ওভারব্রিজ পাড় হয়ে পূর্ব দিকের বিরুলিয়া ইউনিয়নের রাস্তায় ব্যাটারিচালিত হ্যালো বাইকে করে ভাড়া ২০ টাকা দূরত্ব হবে ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার। চলে যাবেন স্বপ্নের মতো সুন্দর গোলাপ গ্রামে।

অন্যান্য যাতায়াত ব্যবস্থা: মিরপুর শাহআলী মাজার এর সামনে কোনাবাড়ী বাসষ্ট্যান্ড থেকে বাসে করে আকরান বাজার। ভাড়া ২০ টাকা। আকরান বাজার থেকে অটোতে করে ফুলের বাজারে কিংবা সাদুল্লাহপুর গ্রাম। ভাড়া ১০ টাকা। নিজস্ব পরিবহনে যেতে চাইলে এই পথ দিয়ে যাওয়া যাবে।

সাভার থেকে আসতে চাইলে সাভার চৌরংগী মার্কেটের সামনে থেকে লেগুনা/মিনি বাস আসে আকরান বাজার। এরপর আকরাম বাজার থেকে অটোতে সাদুল্লাহপুর গ্রাম। নিজস্ব পরিবহনেও এই পথ দিয়ে আসা যাবে।

আবদুল্লাহপুর/উত্তরা থেকে আসতে চাইলে আশুলিয়া রোড দিয়ে লেগুনা দিয়ে বিরুলিয়া ব্রিজ নামতে হবে। ব্রিজ থেকে অটো/মিনি বাসে করে আকরান বাজার সেখান থেকে অটোতে সাদুল্লাহপুর গ্রাম। নিজস্ব পরিবহনেও এই পথ দিয়ে আসা যাবে।

নবীনগর/জিরাবো/সাভার থেকে আলিফ/মোহনা পরিবহনে করে আসলে বিরুলিয়া ব্রিজ। ব্রিজ থেকে অটো/মিনি বাসে করে আকরান বাজার সেখান অটোতে থেকে সাদুল্লাহপুর গ্রাম। নিজস্ব পরিবহনেও এই পথ দিয়ে আসা যাবে।

সতর্কতা: যারা সাঁতার জানেন না তাদের স্থলপথে গোলাপ গ্রামে যাওয়াই ভাল। আর যারা নৌপথে ভ্রমণ করবেন তারা সন্ধ্যা ৭ থেকে ৮ টার মধ্যে ফেরার চেষ্টা করবেন। কারণ রাত আটটার পর নৌ-চলাচল বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বন্ধ থাকে। গোলাপ বাগানে গিয়ে গোলাপ ছিড়বেন না। গ্রামে ভালো খাবারের হোটেল না থাকায় আপনি খাবার নিয়ে যেতে পারেন। গ্রামের মানুষ বিরক্ত বা তাদের অসুবিধা হয় এমন কাজ করবেন না।