ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মরুর বুকে এলিয়েনদের বিমানবন্দর

বাঙালী কন্ঠ ডেস্কঃ নাজকা লাইন বা নাজকা নকশা এক রহস্যের নাম। এটি মরুভূমিতে আঁকা এক আশ্চর্য নকশা। গবেষকদের ধারণা, নাজকা সভ্যতার বাসিন্দারা বছরের পর বছর পরিশ্রম করে এই নকশা এঁকেছিল।কিন্তু কেউ কেউ আবার দাবি করেন, এলিয়েনের দল পৃথিবীতে এসে নকশাগুলো এঁকেছে।নকশাগুলো কে একেছে তা নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও নাজকা লাইন এখনও পৃথিবীর মানুষের কাছে এক বিস্ময়।

পেরুর দক্ষিণে অবস্থিত নাজকা মরুভূমি। রাজধানী লিমা শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় দুই শ মাইল। মরুভূমির ৩১০ বর্গকিলোমিটার জায়গাজুড়ে বিভিন্ন স্থানে আঁকা আছে প্রায় বার শ নকশা। এদের মধ্যে আট শ সমান্তরাল নকশা, তিন শ জ্যামিতিক নকশা এবং ৭০টির মতো জীবজন্তু এবং গাছপালার নকশা রয়েছে। জীবজন্তুর নকশাগুলো ৫০ থেকে বার শ ফুট এবং সমান্তরালগুলোর কোনো কোনোটি ৩০ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত।

১৯৪১ সালে আমেরিকান অধ্যাপক পল কসক এই রেখার রহস্য উদঘাটনে ব্যাপক গবেষণা শুরু করেন। তিনি জার্মান গণিতজ্ঞ ও ভূতত্ত্ববিদ মারিয়া রাইখের প্রদত্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে গবেষণা শুরু করেন। মারিয়া রাইখকে বলা হয় লেডি অব দ্যা লাইন। কারণ তিনি দীর্ঘদিন ধরেই নাজকা লাইন নিয়ে গবেষণা করছেন।মূলত এরপর থেকে মানুষের মনে এই রেখা সম্পর্কে তীব্র কৌতূহলের সৃষ্টি হয়।

নাজকা লাইনের বেশিরভাগ ছবি এতো বড় যে দেখতে হলে কমপক্ষে এক শ ফুট উপরে উঠতে হবে। প্রাচীন ওই সভ্যতার পক্ষে এটা ছিলো সম্পূর্ণ অসম্ভব।

ধারণা করা হয় নাজকার প্রাচীন বাসিন্দারা বেলুন জাতীয় কোনো যান আবিষ্কার করেছিল। তা দিয়ে তারা আকাশে উড়তে পারত। যদিও এ যুক্তি অনেকেই মানতে চান না। কারণ তারা যদি বেলুন আবিষ্কার করেই থাকতো তাহলে সে প্রযুক্তি হঠাৎ হারিয়ে গেল কীভাবে? তাছাড়া বেলুন ব্যবহারের কোনো প্রমাণও তাদের সভ্যতার ইতিহাস ঘাটলে পাওয়া যায় না।

অনেক গবেষক ধারণা করেন, প্রথমে ছোট নকশা আঁকা হতো তারপর এর অনুকরণে বড় করে মূল নকশা আঁকা হতো। কিন্তু এখানেও পর্যবেক্ষণের সমস্যা রয়ে যায়, তাই এই ধারণা তেমন গ্রহণযোগ্য নয়।

১৯৩০ সালে আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে আজও এই নাজকা লাইনের রহস্যের সমাধান হয়নি। ফলে এর প্রকৃত ইতিহাস জানতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

মরুর বুকে এলিয়েনদের বিমানবন্দর

আপডেট টাইম : ০১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯

বাঙালী কন্ঠ ডেস্কঃ নাজকা লাইন বা নাজকা নকশা এক রহস্যের নাম। এটি মরুভূমিতে আঁকা এক আশ্চর্য নকশা। গবেষকদের ধারণা, নাজকা সভ্যতার বাসিন্দারা বছরের পর বছর পরিশ্রম করে এই নকশা এঁকেছিল।কিন্তু কেউ কেউ আবার দাবি করেন, এলিয়েনের দল পৃথিবীতে এসে নকশাগুলো এঁকেছে।নকশাগুলো কে একেছে তা নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও নাজকা লাইন এখনও পৃথিবীর মানুষের কাছে এক বিস্ময়।

পেরুর দক্ষিণে অবস্থিত নাজকা মরুভূমি। রাজধানী লিমা শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় দুই শ মাইল। মরুভূমির ৩১০ বর্গকিলোমিটার জায়গাজুড়ে বিভিন্ন স্থানে আঁকা আছে প্রায় বার শ নকশা। এদের মধ্যে আট শ সমান্তরাল নকশা, তিন শ জ্যামিতিক নকশা এবং ৭০টির মতো জীবজন্তু এবং গাছপালার নকশা রয়েছে। জীবজন্তুর নকশাগুলো ৫০ থেকে বার শ ফুট এবং সমান্তরালগুলোর কোনো কোনোটি ৩০ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত।

১৯৪১ সালে আমেরিকান অধ্যাপক পল কসক এই রেখার রহস্য উদঘাটনে ব্যাপক গবেষণা শুরু করেন। তিনি জার্মান গণিতজ্ঞ ও ভূতত্ত্ববিদ মারিয়া রাইখের প্রদত্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে গবেষণা শুরু করেন। মারিয়া রাইখকে বলা হয় লেডি অব দ্যা লাইন। কারণ তিনি দীর্ঘদিন ধরেই নাজকা লাইন নিয়ে গবেষণা করছেন।মূলত এরপর থেকে মানুষের মনে এই রেখা সম্পর্কে তীব্র কৌতূহলের সৃষ্টি হয়।

নাজকা লাইনের বেশিরভাগ ছবি এতো বড় যে দেখতে হলে কমপক্ষে এক শ ফুট উপরে উঠতে হবে। প্রাচীন ওই সভ্যতার পক্ষে এটা ছিলো সম্পূর্ণ অসম্ভব।

ধারণা করা হয় নাজকার প্রাচীন বাসিন্দারা বেলুন জাতীয় কোনো যান আবিষ্কার করেছিল। তা দিয়ে তারা আকাশে উড়তে পারত। যদিও এ যুক্তি অনেকেই মানতে চান না। কারণ তারা যদি বেলুন আবিষ্কার করেই থাকতো তাহলে সে প্রযুক্তি হঠাৎ হারিয়ে গেল কীভাবে? তাছাড়া বেলুন ব্যবহারের কোনো প্রমাণও তাদের সভ্যতার ইতিহাস ঘাটলে পাওয়া যায় না।

অনেক গবেষক ধারণা করেন, প্রথমে ছোট নকশা আঁকা হতো তারপর এর অনুকরণে বড় করে মূল নকশা আঁকা হতো। কিন্তু এখানেও পর্যবেক্ষণের সমস্যা রয়ে যায়, তাই এই ধারণা তেমন গ্রহণযোগ্য নয়।

১৯৩০ সালে আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে আজও এই নাজকা লাইনের রহস্যের সমাধান হয়নি। ফলে এর প্রকৃত ইতিহাস জানতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।