বগুড়া অঞ্চলে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ নজিরবিহীন মূল্য বৃদ্ধির পর দেশের চাষী পর্যায়ে পেঁয়াজের চাষাবাদে আগ্রহ বেড়েছে। কৃষি বিভাগের একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে চলতি রবি মৌসুমে ৪ জেলা নিয়ে গঠিত বগুড়া কৃষি অঞ্চলে পেঁয়াজের চাষ কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী বগুড়া, জয়পুরহাট, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলা নিয়ে গঠিত বগুড়া কৃষি অঞ্চলে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫৪ হাজার ৭শ’ ৯৫ হেক্টর। তবে চাষের নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর দেখা গেছে প্রায় ২ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে অর্থাৎ ৫৬ হাজার ৭শ’ ৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে পেঁয়াজের।
আরো জানা যায়, এবার বগুড়ায় ৩ হাজার ৪শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষাবাদের বিপরীতে ৩২ হাজার ৬শ’ ১৯ মে. টন, জয়পুরহাটে ৯শ’ ১০ হেক্টর চাষের বিপরীতে ৯ হাজার ৪শ’ ৫৬ মে. টন, পাবনায় ৪৯ হাজার ৪শ’ ২০ হেক্টর চাষের বিপরীতে ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৩শ’ ২৩ মে. টন, সিরাজগঞ্জে ১ হাজার ১৫ হেক্টর চাষের বিপরীতে ৯ হাজার ৫শ’ ৫১ মে. টন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। অর্থাৎ মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৯শ ৩৯ মেট্রিক টন ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া কৃষি অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্তি পরিচালক আ ক ম শাহরীয়ার জানান, উৎপাদিত পণ্যের (পেঁয়াজের) মূল্য পাওয়া যাবে এ ধরনের মানসিকতা থেকেই পেঁয়াজে চাষীরা আগ্রহী হয়ে উঠেছে। কৃষি বিভাগের আশা আর কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে বগুড়া অঞ্চলেই এবার ৭ লক্ষাধিক মেট্রিক টন পেঁয়াজের ফলন পাওয়া যাবে।

তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যেই বগুড়া অঞ্চলে উৎপাদিত ১ লাখ ২০ হাজার ৯শ’ ৩৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বাজারে চলে এসেছে। কুষ্টিয়া এলাকা থেকে আসা বড় সাইজের পেঁয়াজ বগুড়ার বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০/ ৭০ টাকা কেজি দরে। আগামী মার্চে নাটোর, যশোর ও ফরিদপুর এলাকার পেঁয়াজ বাজারে আসলে মোটামুটি স্বাভাবিক হয়ে আসবে পেঁয়াজের বাজার ।

দেশীয় পেঁয়াজের ব্যবসার সাথে জড়িত বেশ কিছু ফড়িয়া ব্যবসায়ী জানালেন, মার্চ এপ্রিল এই ২ মাস পেঁয়াজ আমদানী যাতে বন্ধ থাকে সেজন্য সরকারি পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়েছে। তারা জানান, বৃহৎ আমদানীকারকরা ঠিক এই সময়টাতেই পেঁয়াজ আমদানী করে বাজারে ধ্বস নামায়। আর সুযোগ বুঝে মজুদদাররা এসময়ে কমদামে দেশী পেঁয়াজ কিনে মজুদ করে। ফলে উৎপাদক চাষীরা পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয় ।

এরপর রোজার ঈদ, কোরবানী এবং বর্ষা মৌসুমে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে মুনাফা লুটে মজুদদাররা। এই বিষয়টির সঠিক মনিটরিং হলেই চাষীরা যেমন উপকৃত হবে তেমনি পেঁয়াজ আমদানীরও দরকার পড়বে না বলে মনে করেন উৎপাদক চাষী ও প্রান্তিক ঘরানার ব্যবসায়ীরা ।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর