বাড়তে থাকা সবজির দাম আরেক দফা বাড়ল

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ এক মাস ধরে বাড়তে থাকা সবজির দাম ঈদুল আজহার পর আরেক দফা বেড়েছে। চার থেকে পাঁচটি সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা করে। কাঁচা মরিচের দাম কমলেও সহনীয় হয়নি। গতকাল বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির দাম এখন নিম্নবিত্তের নাগালের বাইরে। অন্যদিকে নিত্যপণ্যের বাজারও চড়া।

রাজধানীর মুগদা বাজারের সবজি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেনের সামনে দাঁড়াতেই হতাশা জানিয়ে দামের বিষয়ে বললেন, কমেনি, আরো বেড়েছে। কোনো সবজির দামই কমেনি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে। তার পরও ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে কাঁচা মরিচের দাম উঠে গিয়েছিল ২০০ টাকার ওপরে। বন্যায় অনেক মরিচক্ষেত ভেসে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে ওই সময় জানিয়েছিলেন তিনি।

কাঁচা মরিচে ভোক্তার সামান্য টাকা বাঁচলেও স্বস্তি আসেনি। উল্টো দুশ্চিন্তা বেড়েছে।

ওই বাজারেই কথা হয় শেখ আব্দুল্লাহ নামের একজন ক্রেতার সঙ্গে। বাজার পরিস্থিতি জানতে চাইলে তাঁর প্রথম কথা, ‘ভাবতে পারেন, টমেটোও কিনতে হচ্ছে এখন ১৩০ টাকা কেজি দরে। নিম্নবিত্ত তো দূরের কথা, মধ্যবিত্তদেরও এখন টমেটো খাওয়ার জো নেই। অথচ মাস দুয়েক আগে ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে টমেটো। শুধু টমেটো নয়, সব সবজির দামই অনেক বেশি।’

মানিকনগর, মালিবাগসহ আরো কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, টমেটো বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০-১৩৫ টাকা দরে; ঈদের আগে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় পাওয়া যেত। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে। বেগুনের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। এ ছাড়া পটোল, কাঁকরোল, ঢেঁড়স, কচুর মুখি, কচুর লতি, করলা, বরবটিসহ প্রায় সব সবজির দামই ৬০ টাকা বা তার ওপরে। আলু বিক্রি হচ্ছে আগের মতো ৩৫ টাকা কেজি দরে। মাঝারি আকারের লেবু ২০ টাকা হালি এবং শসা পাওয়া যাচ্ছে কেজি ৪০-৫০ টাকা দরে।

সবজির দাম চড়া দেখে যাঁরা মনে করছেন এর পরিবর্তে শাক খাবেন বেশি করে, হতাশ তাঁরাও। বাজারে সবজির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শাকের দামও। বর্ষায় সবচেয়ে কম দামের কলমিশাকের আঁটিও এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা করে। এ ছাড়া মুলাশাক, পালংশাক ও লালশাক কিনতে আঁটিপ্রতি ভোক্তাকে খরচ করতে হচ্ছে ২০-২৫ টাকা। লাউশাক ও পুঁইশাক কিনতে হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা আঁটি।

মালিবাগ বাজারের বিক্রেতা আইয়ুব জানান, এই মাসের পুরোটাই শাকসবজির দাম এমন চড়া থাকতে পারে। তারপর ধীরে ধীরে কমে আসবে। এখন আড়তে যে পরিমাণ মাল আসে ক্রেতা থাকে তার চেয়ে বেশি। তাই আড়তদাররাও দাম কমান না।

ঈদের পর নিত্যপণ্যের বাজারও গরম হয়ে উঠেছে। সরু চালের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ৫০ টাকা বা কেজিতে এক টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

এই চালের দাম এখন ৫৩-৬৪ টাকা কেজি। মাঝারি চাল ৪৫-৫০ এবং মোটা চাল ৪০-৪৫ টাকা কেজি। বড় দানার মসুর ডাল কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়ে ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ৮৫-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া ডজনে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম উঠেছে ১১৫-১২০ টাকা। ঈদের আগে বিক্রি হয়েছে ১০৫ টাকা ডজন। হাঁসের ডিম ১৩০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ১৫০ টাকা ডজন। তবে চাহিদা কম থাকায় ফার্মের মুরগির দাম কমে গেছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকা কেজি দরে। কক ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা কেজি দরে। আর বেশির ভাগ গরুর মাংসের দোকান গতকাল বন্ধ দেখা গেছে।

মালিবাগ বাজারের ডিম বিক্রেতা কায়েস আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘তিন দিন পর আজ ডিমের গাড়ি এসেছে। ডিমের সরবরাহ একেবারেই কমে গেছে। ঈদের ছুটির কারণে এমনটা হতে পারে।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর