চাটমোহরে ২ মেছোবাঘ ধরল গ্রামবাসী, পিটুনিতে একটির মৃত্যু

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ পাবনার চাটমোহরে গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়েছে দু’টি মেছোবাঘ। এর মধ্যে পিটুনিতে মারা গেছে একটি। আরেকটিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। মেছোবাঘের আক্রমণে আহত হয়েছেন চারজন। তাদের হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার সকাল দশটার দিকে উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের বামনগ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল যান।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, এক সপ্তাহ ধরে বামনগ্রাম গোরস্তান এলাকায় দু’টি মেছোবাঘের দেখা মিলছিল। এর মধ্যে কয়েকটি মুরগী ও একটি ছাগল ধরে খেয়েছে মেছোবাঘ। এরপর থেকে ‘বাঘ’ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গ্রামের মানুষের মাঝে। শুক্রবার সকালে মেছোবাঘ দেখে গ্রামবাসী একজোট হয়ে বামনগ্রাম গোরস্তান ঘিরে ফেলে। এরপর কৌশলে মেছোবাঘ দু’টিকে আটক করে তারা। এ সময় মেছোবাঘের আক্রমণে চারজন আহত হয়। পরে এলাকাবাসীর পিটুনিতে একটি মেছোবাঘ মারা যায়। মৃত ও জীবিত মেছোবাঘ দুটিকে উদ্ধার করে ডিবিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে নিয়ে গেলে উৎসুক জনতা ভীড় করে।

ডিবিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবীর উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘সকালে গ্রামবাসী মেছোবাঘ দেখে একজোট হয় ধরার জন্য। বিষয়টি জানার পর মেছোবাঘ না মেরে উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসতে বলি। একটি মেছোবাঘ আনার সময় মারা যায়। মেছোবাঘের আক্রমণে চারজন আহত হয়েছে।’

আহতরা হলেন- বামনগ্রামের ইছা বিশ্বাসের ছেলে লিটন বিশ্বাস (৩৫), মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে এনামুল হক (২৩), ইসমাইল হোসেনের ছেলে মহিদুল ইসলাম (২৮) ও আফসার আলীর ছেলে আনিছ (৩০)। তাদের হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈকত ইসলাম জানান, সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করে তাদের মাধ্যমে আহতদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। মেছোবাঘকে পিটিয়ে মারা হলে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। এ নিয়ে বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে দেখতে হবে।

পাবনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘পাবনার বন্য প্রাণী বিষয়ক সংগঠন নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনসারভেশন কমিউনিটির মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি জীবিত মেছোবাঘ উদ্ধার করেছি। অন্যটি মারা গেছে। উদ্ধার করা মেছোবাঘটি কিছুটা আহত। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার পর উপযোগী পরিবেশী অবমুক্ত করা হবে।’

নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনসারভেশন কমিউনিটির সভাপতি এহসান আলী বিশ্বাস লিঠু বলেন, ‘এটি মূলত বিপন্ন প্রজাতির মেছো বিড়াল বা বাঘরোল। কিন্তু অনেকেই এটিকে মেছো বাঘ বলে থাকেন। এরা মানুষের কোনো ক্ষতি করে না। ক্রমেই তাদের বসবাসের জায়গা কমে আসছে বলে অনেক সময় লোকালয়ে তাদের দেখা যায়। এদের রক্ষায় সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।’

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর