মেসি এখন ক্লান্ত–বিরক্ত, তিনি মুক্তি চান

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বেজায় খেপেছেন লিওনেল মেসি। বিরক্তির চূড়ান্ত সীমাতেই তিনি। মাঠের ব্যর্থতার দায় না হয় তিনি মাথা পেতেই নিতে পারেন, তাই বলে অন্য খেলোয়াড়ের ব্যর্থতার দায়ও তাঁকে নিতে হবে! আর্জেন্টাইন তারকা সোজা সাপ্টাই বলেছেন, সব ব্যাপারে দায় নিতে নিতে তিনি ক্লান্ত-বিরক্ত। তিনি এর থেকে মুক্তি চান।

বার্সেলোনা তারকার বিরক্তি সাম্প্রতিক এক বিতর্ক নিয়ে। অবশ্য বিতর্ক মেসির সঙ্গী হয়ে আছে বছরজুড়েই। হালে বার্সার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা মোটেও আগের মতো নেই। ঘরে-বাইরে নানা সমস্যায় জর্জরিত ক্লাব নিয়ে মোটেও সন্তুষ্ট নন মেসি। গত মৌসুমটা পুরোপুরি খালি হাতে কাটাতে হয়েছে বার্সাকে। লা লিগার শিরোপা তো হাতছাড়া হয়েছেই, চ্যাম্পিয়নস লিগেও বিদায় নিতে হয়েছে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৮-২ গোলে অপদস্থ হয়ে। ক্লাবের এমন পরিস্থিতির জন্য মেসি দায়ী করেছেন ব্যবস্থাপনাকেই। সদ্য বিদায়ী সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউকেই। ব্যাপারটা এমন একটা দিকে মোড় নিয়েছিল যে গত আগস্টে ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথাই জানিয়ে দিয়েছিলেন। যদিও রিলিজ ক্লজের প্যাঁচে পড়ে আরও এক বছর ন্যু ক্যাম্পে থাকার কথা বলেছেন, কিন্তু তিনি যে ঠিক আগের মানসিকতায় নেই, সেটি বুঝতে খুব বড় মনস্তত্ত্ববিদ হওয়ার প্রয়োজন নেই।

নতুন বিতর্ক বার্সার ফরাসি তারকা আঁতোয়ান গ্রিজমানকে নিয়ে। আতলেতিকো মাদ্রিদে বেশ ছিলেন। কিন্তু ন্যু ক্যাম্পে নাম লিখিয়েই বেশ বিপাকে বিশ্বকাপজয়ী এ তারকা। কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছে না। কোচ রোনাল্ড কোমানও তাঁকে প্রথম একাদশে খেলাচ্ছেন না। গ্রিজমান নিজেও যে খুব ভালো ফর্মে, সেটিও নয়। কিন্তু তাঁর চাচা ও সাবেক এজেন্ট অন্য সুর ধরেছেন। বার্সেলোনায় গ্রিজমানের অবস্থান যথেষ্ট শক্ত না হওয়ার পেছনে তাঁরা মেসিকে দায়ী করছেন।

গ্রিজমানের আত্মীয় ইমানুয়েল লোপেজ ও সাবেক এজেন্ট এরিক ওলহাটসের মতে, গ্রিজমানকে নাকি সফল হতে দিচ্ছেন না মেসি। লোপেজ একটি ফরাসি পত্রিকাকে বলেছেন, ‘আমরা জানতাম বার্সেলোনায় গিয়ে প্রথম প্রথম গ্রিজমান খুব ভালো করতে পারবে না। ভেবেছিলাম এমন অবস্থা ছয় মাসের বেশি স্থায়ী হবে না। কিন্তু দেখলাম, গোটা মৌসুমই গ্রিজমানকে লড়াই করতে হলো। আসলে মেসির পাশে খেলাটা খুবই কঠিন একটা কাজ। আমরা সবাই জানি, ভেতরে-ভেতরে কী হয়!’লোপেজের কথায় স্পষ্ট, মেসির প্রভাবেই বার্সেলোনাতে ভালো করতে পারছেন না গ্রিজমান। নির্দিষ্ট করে বললে, মেসি যেহেতু চান না গ্রিজমান বার্সেলোনায় ভালো করুক, তাই বাকিরাও এই ফরাসি তারকার ওপর আলোটা ফেলছেন না। পরিস্থিতি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন গ্রিজমান ভালো করতে না পারেন।

তাঁর অভিযোগ এখানেই শেষ নয়। অনুশীলনেও বার্সার কোচিং স্টাফরা যে সব খেলোয়াড়ের সঙ্গে সমান আচরণ করেন না, সেটিও বলেছেন গ্রিজমানের চাচা, ‘মেসি অনুশীলনে একেবারেই খাটতে চায় না। বার্সেলোনার অনুশীলন প্রক্রিয়াটিই বিশেষ কিছু খেলোয়াড়কে খুশি করতে বানানো।’

মেসি এসব অভিযোগের বিপরীতে কড়া প্রতিক্রিয়াই দেখিয়েছেন, ‘আমি সত্যি সত্যি এসব বানোয়াট অভিযোগের জবাব দিতে দিতে ক্লান্ত। আমি এর থেকে মুক্তি চাই।’ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে লাতিন অঞ্চলে পেরুর বিপক্ষে ম্যাচ শেষে বার্সেলোনায় ফিরে নিজের ক্ষোভ এভাবেই প্রকাশ করেছেন মেসি।

আন্তর্জাতিক ম্যাচের বিরতির পর বার্সেলোনা লা লিগায় পরের ম্যাচে মাঠে নামবে গ্রিজমানের পুরোনো দল আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে। সেদিনই গ্রিজমানের দেখা হবে তাঁর পুরোনো সতীর্থদের সঙ্গে। মেসি অবশ্য তাঁর প্রিয় বন্ধু লুইস সুয়ারেজের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। উরুগুইয়ান তারকাকেও নিজের প্রতি বার্সেলোনার অবহেলার জবাবটা আপাতত তুলে রাখতে হবে। কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন যে সুয়ারেজ।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর