সিরাজগঞ্জে গৃহকর্মী শিশুকে নির্যাতন, শিক্ষিকা গ্রেপ্তার

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ মিনতি খাতুন (১০) নামের এক শিশু গৃহকর্মীকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের এক শিক্ষিকাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শনিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে শহরের ফজলখান রোড এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রোববার (১০ জানুয়ারি) সকালে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহা উদ্দিন ফারুকী।

গ্রেপ্তার শিক্ষিকা শিউলী মল্লিকা সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের লেকচারার ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডাক্তার নুরুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী।

ওসি বাহা উদ্দিন ফারুকী জানান, ৭ জানুয়ারি শিউলি মল্লিকা গৃহকর্মী মিনতি খাতুন হারিয়ে গেছে মর্মে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর ৯ জানুয়ারি সন্ধ‌্যায় মিনতিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ সময় মিনতির শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিলো।

খবর পেয়ে মিনতির অভিভাবক খালু আবুল কাশেম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এরপর পুলিশ তাৎক্ষণিক শিক্ষিকা শিউলি মল্লিকাকে গ্রেপ্তার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে মিনতি জানায়, প্রতিদিন শিউলি মল্লিকা তাকে নির্যাতন করতেন। এক পর্যায়ে গত ৭ জানুয়ারি শিউলির নির্যাতন সইতে না পেরে সে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। অসুস্থ শরীর আর চোখের পানি দেখে সন্ধ‌্যায় কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট গ্রামের জাহানারা নামে এক নারী তাকে উদ্ধার করে খাবার ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে পুলিশকে খবর দিয়ে মিনতিকে পুলিশের কাছে বুঝে দেন তিনি।

ওসি আরও জানান, শিউলির স্বামী ডা. নুরুল ইসলাম পুলিশকে তার স্ত্রী মিনতিকে প্রতিনিয়তই নির্যাতন করতেন বলে স্বীকার করছেন।

অপরদিকে, নির্যাতিত মিনতিকে উদ্ধারের পর পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম তাকে চিকিৎসা সেবা, শীতের পোশাকসহ সব ধরনের সহযোগিতা দিয়েছেন। এছাড়া, পুলিশি নিরাপত্তায় রাখার জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

উল্লেখ‌্য, মিনতির বয়স যখন ৬ মাস তখন তার বাবা মক্কা মারা যান। এর কয়েক মাস পরে মা মমতাও মারা যায়। এরপর নানি রহিমা বেগমের কাছে বড় হয় সে। নানির অভাবের সংসারে খাবার না পেয়ে ৯ বছর বয়সে গৃহকর্মীর কাজে আসে শিউলি মল্লিকার বাসায়। গৃহকর্মী হিসেবে কাজে যোগদানের মাস খানেক পর থেকেই শিউলি মল্লিকা মিনতির ওপর অমানবিক নির্যাতন করতেন।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর