সিরাজগঞ্জের পাটালি গুড়ের সুনাম সারাদেশে

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দীর্ঘদিন ধরে তৈরি হচ্ছে ভেজালমুক্ত ও উন্নতমানের সুস্বাদু পাটালি গুড়। এ উপজেলার দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য এই গুড়ের সুনাম এখন সারাদেশে। স্বাদ ও মান ভালো হওয়ায় ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার পাইকারী ব্যবসায়ীরা এখানকার গুড় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

শীতের শুরুতেই তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খেজুরের রস থেকে পাটালি গুড় তৈরির ধুম পড়েছে। এই অঞ্চলের খেজুরের রস যেমন মিষ্টি, তেমনি গুড়ের স্বাদও অন্য গুড়ের চেয়ে আলাদা। জনপ্রিয় হওয়ায় এ এলাকায় গুড় তৈরি এখন বাণিজ্যিক রূপ ধারণ করেছে।

তাড়াশ উপজেলার বাজারে প্রতি কেজি খাটি ও সুস্বাদু পাটালি গুড় বিক্রি হয় ৮০-৯০ টাকায়

তাড়াশ উপজেলার বাজারে প্রতি কেজি খাটি ও সুস্বাদু পাটালি গুড় বিক্রি হয় ৮০-৯০ টাকায়

সরেজমিনে তাড়াশ উপজেলার কাঁস্তা গ্রামে দেখা গেছে, গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিন গাছি। কাজের ফাঁকে তারা কথা বলেন এ প্রতিবেদকের সঙ্গে।

জাকির হোসেন জানান, ভোর রাতে খেজুর গাছ থেকে রস নামিয়ে চুলায় বসানো হয়। এক ঘণ্টা রস জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয় পাটালি, দানা, ঝোলা গুড়সহ নানা প্রকারের সুস্বাদু গুড়। প্রতি কেজি গুড় ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে গুড় কিনে নিয়ে নিজেদের বাজারে বিক্রি করেন।

শীত মৌসুমে পাটালি গুড় তৈরি ও বিক্রি করে গাছিদের আয় হয় ৩০-৪০ হাজার টাকা

শীত মৌসুমে পাটালি গুড় তৈরি ও বিক্রি করে গাছিদের আয় হয় ৩০-৪০ হাজার টাকা

তিনি আরো জানান, মৌসুমে প্রতিটি খেজুর গাছ থেকে তিন কেজি পরিমাণ গুড় তৈরির রস পাওয়া যায়। অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত খেজুর গাছ ইজারা নিয়ে দিনে ৪০ থেকে ৫০ কেজি গুড় তৈরি করা হয়। প্রতি মৌসুমে গুড় বিক্রি করে আয় হয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, তাড়াশ উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার খেজুর গাছ আছে। যদিও দিনদিন গাছের সংখ্যা কমছে। এতে অদূর ভবিষ্যতে খেজুরের রস কিংবা পাটালি গুড় বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবু হানিফ জানান, তাড়াশে খেজুর গাছ নিধন না করতে, বেশি করে গাছ লাগাতে ও গাছের সঠিক পরিচর্যা করতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এছাড়া গাছিদের সঠিকভাবে রস সংগ্রহের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর