বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ শৈত্যপ্রবাহে জবুথবু অবস্থা দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলার মানুষের। চরম বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ।শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে তারা ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতের কম দামী কাপড়ের দোকানে।
বিক্রেতারা জানান, পুরাতন কাপড়ের মধ্যে জ্যাকেট, সোয়েটার, চাদর, কোর্ট, মাফলার, হাত মোজা ও পা মোজা বেশি বিক্রি হচ্ছে। কম মূল্যের নতুন কাপড়ও বিক্রি করেন কেউ কেউ। কৃষক, দিনমজুর, তাঁতশ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, রিকশা-ভ্যান চালকরাই বেশি আসেন। এছাড়াও মধ্যম ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষও আসেন।
রাজমিস্ত্রি ফারুক হোসেন বলেন, ‘মেয়ের জন্য একটা সোয়েটার আর বউয়ের জন্য একটা পুরান চাদর কিনলাম। আগামীকাল আমার জন্য একটা জ্যাকেট কিবব।’
শিয়ালকোল ইউনিয়নের চকশিয়ালকোল গ্রামের কৃষক আসলাম হোসেন মুজিব সড়কের ফুটপাতের একটি দোকান থেকে তার সন্তানের জন্য একটি সোয়েটার, মাফলার ও হাতমোজা নিয়ে ফিরছিলেন। তিনি জানান, ছেলের শীতের কাপড় কিনেছেন। আগামী সপ্তাহে বউ ও নিজের জন্য কিনবেন।
শহরের এস এস রোডে ফুটপাতের ওপর পুরাতন কাপড়ের স্তুপ সাজিয়ে বসেআছেন দোকানি বাবু শেখ। তিনি বলেন, ক্রেতাদের ভিড় শুরু হয়ে গেছে। আমরাও চাহিদা মতো কাপড় দোকানে তোলার চেষ্টা করছি। বড়দের কাপড়ের পাশাপাশি শিশুদের কাপড়ও বেশ বিক্রি হচ্ছে।
লেবু শেখ নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, আমরা শীতের মৌসুমে এই পুরাতন কাপড়ের ব্যবসাটা করি। এই কয়েক মাসের আয় দিয়ে আমাদের সারা বছরই চলে। ২০ বছর ধরে এই ব্যবসা করছি। কিন্তু এ বছর দোকানে উপচেপড়া ভিড় থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় অনেক ক্রেতাই ফিরে যাচ্ছেন।
পৌর হকার্স মার্কেটের পুরান কাপড় বিক্রতা সোহেল রানা জানান, দোকানে প্রচুর ভিড় আছে। আমরা ক্রেতাদের চাহিদা মতো কাপড় আনার চেষ্টা করছি। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে পুরাতন কাপড়ের বেল্টের দাম অনেক বেশি। অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে এবার শীতের কাপড়ের চাহিদা বেশি। গভীর রাতেও ক্রেতার ভিড় কমছে না। বাধ্য হয়েই রাত ১২টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে হচ্ছে।
আরেক দোকানি জেসমিন বেগম বলেন, এখানে দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষই বেশি আসেন। তবে কিছু মধ্যবিত্তও বর্তমানে আমাদের মার্কেটে আসছেন।
সিরাজগঞ্জ পৌর হকার্স কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. মানব সরদার বলেন, তারা সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে সরকারি পরিত্যক্ত জায়গায় দোকান করে জেলার সাধারণ মানুষের সেবার পাশাপাশি নিজেদের সংসার চালাচ্ছেন। এখান থেকে জেলার ৯টি উপজেলার মানুষ কম দামে শীতের কাপড় কিনে থাকেন। পরিত্যক্ত হলেও মাঝে মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ করার কথা বলা হয়; যা আদৌ কাম্য নয়।
সরকারের প্রয়োজনে এসব অস্থায়ী দোকানগুলো যেকোনো সময় সরিয়ে দেওয়া যাবে। কিন্তু অহেতুক হকারদের উচ্ছেদ না করার দাবি জানান তিনি।
তাড়াশ কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম