ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ সেটে প্রচুর গিফট আদান-প্রদান হতো

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ১৮২ পর্বের তুমুল জনপ্রিয় নাটক ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’-এর ইতি টেনেছেন নির্মাতা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ। টানা ২১ মাস ধরে চলা গল্প শেষ পর্ব সম্প্রচার হয়েছে মঙ্গলবার। তবে এই ধারাবাহিকের প্রত্যেকটি চরিত্র যে বাংলার দর্শকদের মনে বহুদিন থাকবে তা বলা বাহুল্য। এ নাটকের পেছনেও ছিলো মজার মজার গল্প। ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নাটক শেষ হওয়ায় দর্শকদের যেমন খারাপ লাগছে তেমনি এই নাটকের অভিনয় শিল্পীদেরও কম খারাপ লাগছে না।

মঙ্গলবার জনি হকের গ্রন্থনা ও সঞ্চালনায় ‘ইত্তেফাক অনলাইনের ‘টুনাইট শো’ লাইভে হাজির হন ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নাটকের পরিচালক মুহম্মাদ মুস্তফা কামাল, অভিনেতা শামীম হাসান সরকার, এমএনইউ রাজু ও অভিনেত্রী সারিকা সাবাহ। এ সময় তারা এই নাটকের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।

 

পরিচালক মুহম্মাদ মুস্তফা কামাল রাজ বলেন, ‘এটি একটি লম্বা জার্নি ছিলো। আমরা এই নাটকের শুট শুরু করেছিলাম ২০১৯ সালে। এটি আমার আলাদা একটা পরিবার। এটা আমাকে অন্যরকম কিছু দিয়েছে। এই নাটকের সাথে অনেক স্মৃতি জরিয়ে আছে। ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নাটকের মাঝে আমার ব্যক্তিগত জীবনে একটা ক্রাইসিস তৈরি করে গেছে। এছাড়া আর্টিস্টদের সাথে আমার একটা আন্তরিকতা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে শর্মিলা আন্টির সাথে এটাতে আমার কাজ। তার আন্তরিকতা আমি মুগ্ধ। আমরা যখন আড্ডা দিতাম তখন বোঝাই যায় না তিনি আমাদের আন্টি। তিনি বড় বোনের মতো ছিলেন। রুনা আপার সাথে আমার প্রথম কাজ। রুনা আপা এই নাটকে শুটিংয়ে আসার সময় বলতেন আমরা এখানে পিকনিক করতে আসি বা আড্ডা দিতে আসি। মিঠু আপা হলেন আমার বোন। কাজের বাইরে একটা সম্পর্ক আছে তার সাথে। শবনম ফারিয়া আমার বোন। শামীম হোসেন সরকারকে আমি কাকা ডাকি। রাজু তো আমার সাথেই ছিলেন। এছাড়া ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নাটকে আরও যারা ছিলেন সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ এতো বড় একটা লম্বা জার্নিতে সবাই আমার সঙ্গে ছিলেন। আজ এটার শেষ পর্ব হলেও এটার রেশ অনেকদিন থাকবে।’

সারিকা বলেন, ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নাটকের শুটিং একমাস পরপর হতো। আমরা অপেক্ষা করতাম যে কবে ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নাটকের শুটিং হবে। এছাড়া আমাদের সেটে প্রচুর গিফট আদান-প্রদান হতো। বিশেষ করে জন্মদিনে। যার জন্মদিন সেও গিফট পেতো আবার যার জন্মদিন না সেই গিফট পেতো। ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’-এ কখনোই মনে হয়নি আমরা শুটিং করছি। সব সময় মনে হয়েছে নিজের ফ্যামিলির সাথেই আছি। নাটকে সেফালি খালা আমার মা। বাস্তবে আমি কিন্তু তাকে মা বলে ডাকি। সুতরাং আমাদের বন্ডিংটা আসলে এরকমই ছিলো। এই নটকটি শেষ হয়ে গেলেও শুটিং সেটসহ সবাইকে খুব মিস করবো।’

রাজু বলেন, ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নাটকে মোজাম্মেল চরিত্রে অভিনয় করেছি। এই চরিত্রটা এতোটা জনপ্রিয় হবে আমি ভাবিনি। রাস্তায় বের হলে দর্শক তো আমাকে মোজাম্মেল বলে ডাকে। এমন কি আমার পরিবার বা বন্ধু পর্যায়ে যারা আছেন তারাও আমাকে মোজাম্মেল বলে ডাকে। আমি সবার কাছে সত্যিই অনেক কৃতজ্ঞ। এটার নেপথ্যে যিনি কাজ করেছেন এই নাটকের পরিচালক রাজ ভাইয়ের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আর একটা কথা না বলেলেই নায়। সেটা হলো- ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নাটকের ডেটগুলো আমাদের কাছে পিকনিকের মতো মনে হতো।

শামীম হাসান সরকার বলেন, ‘ব্যক্তিগত জীবনে আমি ১৩/১৪ টির মতো সিরিয়াল করেছি। কিন্তু আমার নিজের ফ্যামিলি মেম্বার, আমার চাচা-চাচী, খালা-খালু এই ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ দেখে তারা আমাকে প্রথম ফিডব্যাক দেয় যে তারা এটার দর্শক। এবং আমার আব্বার কোর্সমেটরাও আমাকে ফিডব্যাক দিয়েছে। অর্থাৎ সিনিয়ার সিটিজেনরা এই নাটকের ফিডব্যাক আমাকে দিয়েছে। এবং কুয়ালালামপুরে রাস্তায় গিয়েও আমাকে উত্তর দিতে হয়েছে ‘ঝুমুরকে বিয়ে করবো কবো?’ সুতরাং এই নটকটি ক্যারিয়ারে মেরুদণ্ড হয়ে থাকবে। বিষয়টি অনেক মিস করবো।’

ধারাবাহিক ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নাটকে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শর্মিলী আহমেদ, সোহেল খান, মনিরা মিঠু, শহীদুজ্জামান সেলিম, রোজী সিদ্দিকী, রুনা খান, মুকিত জাকারিয়া, শবনম ফারিয়া, সারিকা সাবাহ, শামীম হাসান সরকার, তামিম মৃধা, রাইসা, সৌমিক প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর