ছোট্ট বোনকে বাঁচাতে আগুনে ঝাঁপ সাত বছরের শিশুর

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ আগুনে ঝাঁপ দিয়ে সাত বছরের একটি শিশু তার ছোট বোনকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে। বোনের প্রতি এলি নামের এই শিশুটির ভালোবাসা সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসির নিউ টেডওয়েলে ঘটনাটি ঘটেছে। অন্যান্য সাধারণ ১০টা রাতের মতো সোমবার ক্রিস ও নিকোল ডেভিডসন দম্পতি সন্তানদের খাইয়ে দিয়েছেন। সবাই যার যার মতো রেডরুমে চলে গেছে।

রাতে সাড়ে ৮টা তখন। সবাই বিছানা শুয়ে পড়েছে। কেউ কেউ ঘুমিয়ে পড়েছে। ঘণ্টাখানেক পর ধোঁয়ার গন্ধে জেগে ওঠেন নিকোল ডেভিডসন। কয়েক মিনিটের মধ্যে ভয়ঙ্কর আগুনে তাদের ঘর গ্রাস করে ফেলে।

২২ মাস বয়সি এরিন ডেভিডসন আটকা পড়ে তার রুমে। আগুনে যখন সব কিছু ভস্মীভূত হয়ে যাচ্ছে, সে তখন তার শয্যায়। তার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন বাবা-মা।

নিকোল দম্পতি তার দুই বছর বয়সি সন্তান এলিজাহ ও এলিকে কোলে নিয়ে বের হয়ে আসেন। গেল এক বছর ধরে তাদের লালন-পালন করছেন তারা।-খবর সিএনএনের

কিন্তু এরিনের ঘর পুরোপুরি আগুনে ঘিরে ফেলেছে। ক্রিস ডেভিডসনের ভাষায়— গাঢ় ধোঁয়া ও আগুনে তার কাছে পৌঁছানো ছিল অসম্ভব। আমরা জানালা দিয়ে বেরিয়ে আসি। তার কাছে যাওয়ার মতো কোনো বিকল্প ছিল না।

‘যে কারণে আমি এলিকে নিয়ে বের হয়ে আসি। জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে সে আমার কোলো উঠে।’

ডেভিডসন বলেন, আমরা এলির জন্য অনেক বেশি গর্বিত। সে এমন কিছু করেছে, যা কোনো বয়স্ক লোকও সাহস করবেন না। সে সঠিক সময়েই ঝুঁকি নিয়েছে।

বাড়িটি যখন আগুনের গ্রাসের ভেতরে, তখন অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা চলে আসেন। পর দিন সকালে দেখা গেল কিছুই আর অবশিষ্ট নেই।

এলি বলল, আমার মনে হয়েছিল, আমাকে দিয়ে হবে না। কিন্তু তখন আমি বলি—আমি তাকে পেয়েছি, বাবা।

শিশুটি জানায়, আমি ভয় পেয়েছিলাম—তাই বলে আমার বোনকে এভাবে মরতে দিতে পারি না।

৩৪ শিশুর পোষ্য নিয়েছেন ডেভিডসন দম্পতি। এলিও তাদের একজন—এ ছাড়া এরিন ও এলিজাও আছে। নিকোল ও ক্রিস ডেভিডসনও সাবেক অগ্নিনির্বপণকর্মী।

সব কিছু খুইয়ে এখন তারা আবার নতুন করে জীবন শুরু করতে যাচ্ছে। মহামারীর কারণে চাকরি হারিয়েছেন। দাদা মারা গেছেন। আর আগুনে ভস্মীভূত বাড়িঘর।

ক্রিস ডেভিডসন বলেন, আমাদের যা কিছু ছিল, সব হারিয়েছি। এখন আমরা নিঃস্ব। জীবনের সব সম্বল ছিল ওই বাড়িটির মধ্যে। কিন্তু আগুন সব নিয়ে গেছে।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর