২৩০০ বছরের পুরনো সিরামিক পাত্র, জাদুবিদ্যায় বলি হয় অসংখ্য মানুষ

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ব্ল্যাক ম্যাজিকের ব্যবহার রয়েছে হাজার হাজার বছর আগে থেকেই। কিছু মানুষ সবযুগেই এর চর্চা করেছেন। সাধারণ কোনো মানুষের ক্ষতি করতে শয়তানের পূজারীরা এই ব্ল্যাক ম্যাজিক করা হত। তার প্রমাণ মিলল গ্রিসে পাওয়া ২৩০০ বছরের পুরনো একটি সিরামিক পাত্রে। এটি সেই সময় ব্যবহার হত কোনো এক প্রকার ম্যাজিকের জন্য। একে ব্ল্যাক ম্যাজিক বললেও ভুল হয় না। আবার সেটা যে ওই উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করা হত তাও নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তবে পাত্রের ব্যবহার সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

জানা যায়, পাত্রটি ২৩০০ বছরের পুরনো। সেটিতে পাওয়া গিয়েছে প্রচুর মুরগির হার। সব হাড়ই ভাঙাচোরা। প্রাচীন এথেন্সের এই পাত্রটি পাওয়া গিয়েছিল একটি শহরের বাড়ির তলা থেকে। প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলছেন এটি অভিশাপের পাত্র। ৫৫ জনের মানুষের মৃত্যু হয়েছে ওই পাত্রের ম্যাজিকের জন্য। পাত্রের গায়ে কোনো এক ভাষায় লেখা রয়েছে মন্ত্র।

পাত্রের মধ্যে পাওয়া যায় একই বয়সী অনেকগুলো মুরগির হাড়

পাত্রের মধ্যে পাওয়া যায় একই বয়সী অনেকগুলো মুরগির হাড়

এখানেই আবার উঠে এসেছে ব্ল্যাক ম্যাজিক তত্তব। গবেষকরা বলছেন, এ থেকে প্রমাণ হয় যে সেই সময়ে এই ধরনের কোনো জাদু বিদ্যা ব্যবহার করা হত। বলা হচ্ছে যে, ওই পাত্রের ভেতরে মুরগির যে হাড় পাওয়া গিয়েছে সেগুলোর বিভিন্ন প্রান্তে ছিদ্র রয়েছে বা বোঝা গিয়েছে কোনো কিছু সুচালো জিনিস ঠুকিয়ে হাড় ছিদ্র করা হয়েছে। মুরগিগুলোকে হত্যা করে হয়েছে নৃশংসভাবে। এগুলোর বয়স সাত মাসের বেশি ছিল না। নির্দিষ্ট একটা বয়সের মুরগি ব্যবহার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এগুলোকে মেরেই মানুষের উপর হত্যার চেষ্টা করা হত।

তবে ২৩০০ বছর পেরিয়ে এই আধুনিক প্রযুক্তির দুনিয়াতেও। এখনো অনেক মানুষ ভ্রান্ত ধারণা নিয়ে এই জাদুবিদ্যার উপর ভরসা করেন। সম্প্রতি গুপ্তধনের সন্ধানে অন্ধবিশ্বাসের বলি হয় দুই বছরের এক শিশু। মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরের খান্ডালা গ্রামের ঘটনা। অশোক মেশরামের ছেলে যুগ মেশরাম নিখোঁজ ছিল। শিশুটি তার বড় ভাইয়ের সঙ্গেই বাড়ির সামনেই খেলছিল সেদিন। বড় ভাই হর্ষল বাড়ি ফিরলেও যুগ আর ফেরেনি ঘরে। ছোট ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে ব্রহ্মপুরী পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করে তার বাবা।

পাত্রের গায়ে বিচিত্র ভাষায় লেখা মন্ত্র

পাত্রের গায়ে বিচিত্র ভাষায় লেখা মন্ত্র

শিশুটিকে খুঁজতে কয়েকটি দল গঠন করা হয়। মেশরামের প্রতিবেশীদের থেকে জানা যায়, সুনীল এবং প্রমোদ বাংকার নামে দুই ব্যক্তি ব্ল্যাক ম্যাজিক বা কালা জাদু নিয়ে চর্চা করছিল। তাই তাদের ওপর নজর রাখা শুরু করে পুলিশ। পরে প্রমোদের বাড়ি থেকে যুগের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই দোষ স্বীকার করে। তাদের গ্রেফতার করা হয়। মেশরামের সঙ্গে তার এই দুই প্রতিবেশীর ভালো সম্পর্ক থাকায় তাদের ওপর কখনোই সন্দেহের প্রশ্ন ওঠেনি।

আইনের চোখে ব্ল্যাক ম্যাজিক অপরাধ। তবে সবার চোখে ধুলা দিয়ে যুগ যুগ ধরে চলছে এই অন্ধবিশ্বাস চর্চা। হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বলি হয়েছেন অনেকেই।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর