শরীরে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার নিয়ে যন্ত্রণায় জীবন কাটাচ্ছেন রহিছ খান

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় শরীরের বিভিন্ন অংশে স্প্লিন্টারের যন্ত্রণায় জীবন কাটাচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের আওয়ামী লীগ নেতা এ রহিছ খান। স্প্লিন্টারের সেই যন্ত্রণা নিয়ে এখনও বেঁচে আছেন তিনি। অসহ্য ব্যথায় কাতর হয়ে তিনবার অপারেশন করতে হয়েছে তাকে। বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী গ্রামের মরহুম ইউনুস মিয়ার ছেলে এ রহিছ খান।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হন কয়েকশ। তাদেরই একজন রহিছ খান। এখনো তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে- গ্রেনেড হামলায় ছিন্নভিন্ন মরদেহ, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা হাত পা, রক্ত স্রোত, কানে ভেসে আসা আর্ত চিৎকার। সে দিনের ভয়াবহতার স্মৃতি মনে হলে এখনো কেঁদে ওঠেন তিনি।

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে রহিছ খান বলেন, সেদিন বিকালে রাজধানীর বনানী থেকে আমাদের এমপি ক্যাপ্টেন এবি তাজুল ইসলামের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় যান। জনসভায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা ট্রাকের ওপর স্থাপিত মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলেন। বক্তৃতা শুরুর আগে মঞ্চের প্রায় ১০ গজ দূরে দাঁড়িয়ে বক্তব্য শুনছিলেন তিনি। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে গ্রেনেডের বিকট শব্দে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে রাস্তায় পড়ে যান। প্রচুর রক্ত বের হলে এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন রহিছ খান।

তিনি বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীরা হাসপাতালে ভর্তি করে। অপারেশন করে কয়েকটি স্প্লিন্টার বের করা হয়। পাঁচ দিন পর কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে আবারও ব্যথা হলে দ্বিতীয় দফায় ২০১১ সালে ঢাকার সিএমএইচে অপারেশন করান।

রহিছ খান আরও বলেন, আল্লাহ তাকে বাঁচিয়েছেন। সেদিন ঘটনার পর বিএনপি সরকার জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে গ্রেনেড হামলার বিচারের পথ বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করেছিল। শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বিচারের রায় হয়। রায়ের বাস্তবায়ন এখনও অনেক দ‚র। কেবল উচ্চ আদালতে পেপারবুক তৈরি হয়েছে। মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করেছে। বিচারের রায় বহাল রেখে অপরাধীদের শাস্তি কার্যকর হোক সেটাই দেখে যেতে চান বেঁচে থাকতে।

আওয়ামী লীগ নেতা এ রহিছ খান বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সহ-সভাপতি। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত রূপসদী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, পরে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সভাপতি, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য ছিলেন। ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, ২০১২ সাল থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়াতে রূপসদী গ্রামে বাবা ও চাচার নামে গড়ে তুলেছেন ‘রূপসদী এম ইউ আবুল হাসেম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’। সামাজিক ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডে বেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন তিনি। সততা ও নীতির কারণে স্থানীয় এমপি ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলামের আস্থাভাজন হিসেবেই রাজনীতির মাঠে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন রহিছ খান। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তাকে তিনবার কারাভোগ করতে হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর