কৃষিতে আত্মনিয়োগ করুন: শিক্ষিত যুবকদের প্রতি যুবলীগ চেয়ারম্যান

বেকার সমস্যার সমাধানে ব্যবসা বা চাকরির পিছনে না ছুটে কৃষিতে আত্মনিয়োগ করতে শিক্ষিত যুবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শাম্স পরশ।

যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা সদরে কৃষি সম্মেলন ও কৃষি উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।

কৃষি সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র, উল্লেখ করে যুবলীগের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি যুবসমাজকে আহ্বান জানাবো এই সৎ পেশায় আত্মনিয়োগ করতে। বঙ্গবন্ধুকন্যার ২০৪১ সালের যে ভিশন—একটা সুখী, সমৃদ্ধ, মর্যাদাশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ—সেই ভিশন বাস্তবায়নে আমাদের কৃষকরাই বৈপ্লবিক ভূমিকা রাখবে।’

মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের কৃষকদের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্মরণ করে শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। করোনার নির্মম আঘাতে বিশ্ব যখন পর্যুদস্ত, ঘোর অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে, তখন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশে খাদ্য ঘাটতি হয়নি। এই কৃতিত্ব ও গৌরব আমাদের কৃষক ভাইদের।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধু গবেষক সুভাষ সিংহ রায়। সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘আমাদের যুবসমাজের একটা বিশাল জায়গা জুড়ে আছে আমাদের প্রিয় কৃষক ভাইয়েরা। যুবলীগেরও একটা বিশাল অংশের নেতা-কর্মীরা কিন্তু কৃষক। বিশেষ করে, আমাদের ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের বহু নেতাকর্মী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির সাথে সম্পৃক্ত।’

‘কৃষক ভাইদের বাদ দিয়ে আমাদের সুবর্ণজয়ন্তীর কোনো কর্মযজ্ঞ, কোনো কর্মসূচি অথবা কার্যক্রম সার্থকতা অর্জন করতে পারে না। তাই, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তীর এই বছর আমরা কৃষক ভাইদের জন্য উৎসর্গ করছি। আমি মনে করি, কৃষি এবং শিক্ষকতা সর্বোচ্চ সম্মানজনক পেশা। কৃষি অত্যন্ত সৎ একটা পেশাও বটে।’

তিনি বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন সারের দাবিতে আন্দোলন করলে বিএনপি ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া, কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে জনগণ আন্দোলন করলে সেখানেও বেশ কয়েকজন মানুষকে গুলি করে হত্যা করে বিএনপি-জামাত সরকার। তাদের হাত কৃষকের রক্তে রঞ্জিত। তারা এখন পাগল হয়ে পদযাত্রার নামে পথে পথে ঘুরছে।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃষি সংক্রান্ত দুটি স্লোগান আমাদের বুকে ধারণ করতে হবে—(১) আমার বাড়ি আমার খামার এবং (২) এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। এই স্লোগান দুটি আমাদের প্রেরণাতে রূপান্তরিত করতে হবে।’

বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘যুবজাগরণে যে জমায়েত, গলার যে জোর, তাতে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ, রাজাকারদের উত্থান বাংলার যুবসমাজ, তরুণ সমাজ, এই প্রজন্ম রুখবেই রুখবে। আজকে দেশবিরোধী বিএনপি-জামাত যে ষড়যন্ত্র করছে, তাতে তারা কোনোদিনই সফল হবে না।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন—যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সোহেল উদ্দিন, ডা. খালেদ শওকত আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. হেলাল উদ্দিন, মশিউর রহমান চপল, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, উপ-কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক মোল্লা রওশন জামির রানাসহ কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা যুবলীগের নেতারা।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর