মেজর জিয়াউদ্দিনের মরণোত্তর খেতাব দাবি

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ মেজর জিয়াউদ্দিনের মরণোত্তর খেতাব দাবি করেছে সেক্টর কমান্ডারস্ ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ-’৭১। পাশাপাশি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার প্রতি রাষ্ট্র যে দায়িত্ব পালন করার কথা তা করা হয়নি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক স্মরণসভায় অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেছেন। সেক্টর কমান্ডারস্ ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ- ’৭১ এই স্মরণসভার আয়োজন করে।

মুক্তিযুদ্ধকালীন ৯নং সেক্টরের (সুন্দরবন অঞ্চল) সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়াউদ্দিন আহমেদ অবহেলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আয়োজিত স্মরণসভাই বক্তারা বলেন, জিয়াউদ্দিন আহমেদ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ১৯৬৯ সালে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে থাকাকালীন তিনি মেজর পদে উন্নীত হন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি সরাসরি ৯ নম্বর সেক্টরে মেজর এম এ জলিলের অধীনে একজন সাব-সেক্টর কমান্ডার হিসেবে যোগ দেন। অথচ রিটায়ার্ড অফিসার্স আর্মি ক্লাব কর্তৃক প্রকাশিত (রাওয়া) তালিকায় উনার নাম নেই, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

বক্তারা আরো বলেন, ১৯৭৪ সালে ক্ষুদ্র একটি কারণে লেফটেন্যান্ট থাকা অবস্থায় তিনি চাকরিচ্যুত হন। এরপর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে সেনাবাহিনী থেকে কোনো সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়নি। এমনকি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত কোনো প্লটও তাকে দেয়া হয়নি।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, আজ অনেকে ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়ে অনেক কিছু আদায় করছে, অথচ সঠিক মুক্তিযোদ্ধারা বঞ্চিত হচ্ছেন।

মুক্তিযোদ্ধা নবম সেক্টরের সেক্রেটারি সচিন কর্মকার বলেন, আজ চেতনা নিয়ে মায়াকান্না করার লোকের অভাব নেই, অথচ গুণীজনদের গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না।

বক্তাদের প্রত্যেকেই তার প্রশংসা করে বলেন, তিনি ছিলেন সত্যিকার দেশপ্রেমিক, উদার মনের অধিকারী, নিরহংকারী, মিতব্যয়ী, মৃদুভাষী, সাহসী এবং ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। তারা বলেন, জিয়াউদ্দিন এবং সুন্দরবন এক ও অভিন্ন, যতদিন সুন্দরবন থাকবে ততদিন জিয়াউদ্দিনের নাম থাকবে।

বক্তরা সবাই তার মরণোত্তর খেতাব দাবি করেন। তারা জিয়াউদ্দিনকে স্বাধীনতা পদক দেয়ার দাবিও জানান।

সেক্টরস্ কমান্ডার ফোরামের সেক্রেটারি হারুন হাবিব বলেন, জিয়াউদ্দিনের জীবনী পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তাকে জানার সুযোগ দিতে হবে।

একই সঙ্গে তার নামে একটি রাস্তা করার উদ্যোগ নেয়া এবং তার প্রাপ্য সব পাওনা তার পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করেন।

সেক্টরস্ কমান্ডার ফোরামের সভাপতি কে এম সফিউল্লাহর সভাপতিত্বে স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন, ফোরামের সহ-সভাপতি নুরুল আলম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু ওসমান চৌধুরী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেজর মোহাম্মদ আলী শিকদার, অ্যাড. সরদার আব্দুর রশিদ, জিয়াউদ্দিনের ছেলে জাহিদ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর