বানভাসিদের পাশে বিভিন্ন সংগঠন ‘মানুষ মানুষের জন্য’

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ‘মানুষ মানুষের জন্য/জীবন জীবনের জন্য/একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না/ও বন্ধু’। ভুপেন হাজারিকার সেই অমর গানের মতোই দেশের উত্তরাঞ্চলের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্যের হাত প্রসারিত করতে এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কেউবা আবার ব্যক্তিগত কিংবা বন্ধুবান্ধবের উদ্যোগে সহায়তার হাত বাড়াচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিগগিরই বন্যা কবলিত কয়েকটি জেলা ঘুরে ঘুরে বন্যার্তদের বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করবে এসব সংগঠন। তবে বেশ কয়েকটি সংগঠন এরইমেধ্য সহায়তা করার জন্য উত্তরাঞ্চলের বন্যা কবলিত এলাকায় চলে গেছেন।

বন্যার্তদের সহায়তায় একদিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে সমিতির কার্যনিবার্হী পরিষদের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বন্যার্তদের সহায়তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একদিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এর বাইরে যদি কেউ অতিরিক্ত সাহায্য প্রদানে ইচ্ছুক হন, আমরা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করব। কোনো সম্মানিত সদস্য উল্লিখিত অনুদান প্রদানে অনিচ্ছুক হলে তা, ‘হিসেব পরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ বরাবর আবেদনের মাধ্যমে আগামী ২৪ আগস্টের মধ্যে জানাতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় সরকার পক্ষে ত্রাণ সহায়ত দেয়া হচ্ছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বন্যা কবলিত হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলোয় গিয়ে এই ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেবে। বন্যা দূর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক দিনের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসির সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় ওই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

জানা যায়, সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো. জসিমউদ্দিন খান। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, রেজিস্ট্রার, কোষাধ্যক্ষসহ, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংগৃহীত অর্থের দুই-তৃতীয়াংশ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে প্রদান করা হবে এবং অবশিষ্ট অর্থ বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের সাহায্যার্থে ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে বীজ, সবজির চারা, ধানের চারা, খাদ্য (চাউল, চিড়া , চিনি, আলু), গো-খাদ্য, পশু চিকিৎসা সামগ্রী, স্যালাইন, পানি শোধন ট্যাবলেট, ঔষধ ইত্যাদি সামগ্রী সরাসরি দেয়া হবে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী ছাত্র সংগঠন থেকে বন্যার্তদের সহায়তার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় বন্যা কবলিত অসহায় মানুষর পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনের তত্বাবধানে কেন্দ্র থেকে ৫টি টিম ইতিমধ্যে দুর্গত এলাকায় পৌঁছেছে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি এরশাদুর রহমান চৌধুরী বলেন, কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ৫টি টিম করে বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য দুর্গত এলাকায় পৌঁছেছে। সেখানে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও একাজে সহায়তা করবে।

বানভাসিদের মানুষগুলোকে সহযোগিতা করার জন্য ব্যতিক্রধর্মী সব উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিভিত্তিক বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। ত্রাণ সংগ্রহের জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি করে গত ১৭ আগস্ট থেকে ক্যাম্পাসে ত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু করে। এরপর থেকে সংস্কৃতির নানা বিষয় পরিবেশনার মাধ্যমে সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসজুড়ে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব পরিবেশনার মধ্যে রয়েছে গান, পথ নাটক, মূকাভিনয়, আবৃত্তি, ছবি প্রদর্শনীসহ নানা বিষয়।

টিএসসিভিত্তিক ঢাকা ইউনিভার্সিটি রিসার্চ সোসাইটির সভাপতি সাইফুল্লাহ সাদেক বলেন, দেশের বন্যার্ত মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য টিএসসিভিত্তিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমাদের কাজের মাধ্যমে সংস্কৃতির চর্চা যেমন তরান্বিত হচ্ছে, তেমনি অসহায় মানুষেরও উপকার হচ্ছে। আগামী রোববারে ত্রাণ বিতরণের জন্য টিম দুর্গত এলাকায় পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।
বন্যার্তদের সাহায্যের উদ্যোগ নিয়েছে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের একটি ফেসবুক গ্রুপ। এর পক্ষ থেকে ছাত্রছাত্রীরা ত্রাণ সংগ্রহের জন্য ক্যাম্পাসে বক্স হাতে মানুষের দ্বারে দ্বারে সাহায্য চেয়ে চলেছেন প্রতিদিন। তাদের ডাকে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায় বলে জানা গেছে।

এর অন্যতম উদ্যোক্তা সাদমান শাকিল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সবসময় মানবতার সেবায় ব্রত। এবারও তার প্রমাণ পেয়েছি আমরা। ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে আমরা অল্প সময়ে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি, যা অভূতপূর্ব।

গত রোববার থেকে বুধবার পর্যন্ত অর্থ সংগ্রহ করা হবে। আগামী বৃহস্পতি কিংবা শুক্রবার ত্রাণ বিতরণের জন্য টিম পাঠানো হেব। কেউ চাইলে নিচের ঠিকানায় বন্যার্তদের জন্য অর্থ সাহায্য দিতে পারেন বলে তিনি জানান। বিকাশ: ০১৭১৯২১৭২০৯ (প্রবাস) ০১৬৭৭৮২৬৭৪৩ (নীরব), ব্যাংক একাউন্ট: ১৭৯.১০৫.৮২৫৩ (নীরব) ডাচ বাংলা ব্যাংক।

ত্রাণ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় পৌঁছেছে গণজাগরণ মঞ্চ। সোমবার মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, সোমবার থেকে ত্রাণ বিতরণের কাজ চলছে। ওখানকার মানুষের কী অবস্থা তা চোখে না দেখলে বিশ্বাসই হবে না। আমরা যে পরিমাণ ত্রাণ নিয়ে এসেছি প্রয়োজনের তুলনায় তা অতি নগণ্য। চাই আরও সহায়তা। চাই আরও মানবিক মানুষ। অর্থসাহায্য পাঠানোর জন্য তিনি ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং ০১৭৫৪৭০৬৮৮৩৮ ও +৮৮০১৮৭৩৬৭৪১৯০৫ এবং বিকাশ ০১৯৩২২১৫৪৮২ ও ০১৭৭৩০০৬০৯৮ নম্বরে পাঠাতে অনুরোধ করছেন।

আগামী বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান কিছু শিক্ষার্থী ‘বন্ধুত্বের বন্ধনে আমরা’ ব্যানারে দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য রওয়ানা দিবেন। এ উদ্যোগের অন্যতম একজন আক্তার হোসেন জানান, গত বছরেও একই ব্যানারে কুড়িগ্রামে সহায়তা করার জন্য যাওয়া হয়েছিল। এবার দিনাজপুর যাব। ঢাকা থেকে খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট আর নাপা নিয়ে যাবো। কেউ সাহায্য দিতে চাইলে ০১৯১১৬৩৮৮৮৭ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন বলে জানান তিনি।

রাজধানীর সাংস্কৃতিক বিদ্যালয় ‘বাতিঘর’ এর উদ্যোগে বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণের জন্য সোমবার সকালে দিনাজপুর পৌঁছেছে একটি টিম। এর পরিচালাক তামান্না সেতু জানান, দিনাজপুরের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চল কসবায় ক্ষতিগ্রস্থতের মাত্রা অনুযায়ী তিনরকম পরিমাণ সাহায্য দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিছু পরিবার, যাদের ঘরবাড়ি একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে তাদেরকে ২ হাজার টাকা করে, যাদের ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ তাদেরকে ১ হাজার টাকা করে এবং যারা এই দুই শ্রেণির চেয়ে তুলনামূলক কম ক্ষতিগ্রস্থ তাদেরকে ৫০০ টাকা করে দেয়া হবে। এ পর্যায়ে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা প্রায় ১২০টি পরিবারের ভেতর বিতরণ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, তাছাড়া আগামী রোববার আমাদের ২য় টিম যাবে। ২য় টিমের সঙ্গে আমরা ১০০ শিশুর ঈদের কাপড় এবং ১০০ পরিবারের জন্য খাবার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ৩য় টিম যাবে ১০ সেপ্টেম্বর। মাত্র ১০টি পরিবারের কর্ম সংস্থানের ব্যাবস্থা আমরা করবো। মাসের পর মাস ১০০ পরিবারের খাবার পাঠিয়ে লাভ নেই। তারচেয়ে ১০/২০ জনের কর্মসংস্থান করে দেয়ার ইচ্ছা। রিক্সা, ভ্যান, সেলাই মেশিন প্রদান করার ইচ্ছা আছে। আমাদের সঙ্গে কেউ সহায়তা দিতে চাইলে বিকাশ (০১৬২৪৮০৪০৪৮, ০১৭৩৬১৮১৬১৭, ০১৬১৬০৫২০৭১, ০১৮৭৯৭৫০৬৬৯) এবং ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং নম্বর : ০১৬২৪৮০৪০৪৮৬। সবগুলো নম্বর পার্সোনাল বলে জানা গেছে।

‘বন্যার্তদের পাশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’-এ স্লোগানকে রেখে গত বুধবার থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি স্পটে বসে গান গেয়ে বন্যার্তদের জন্য অর্থ উত্তোলন শুরু হয়। বৃহস্পতিবার রাজশাহী রেলস্টেশন, আরডিএ মার্কেট, সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট এলাকায় এবং শুক্রবার নগরীর পদ্মা গার্ডেন, জিরো পয়েন্ট এবং রেলস্টেশনে গান গেয়ে ত্রাণ সংগ্রহ করেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার ত্রাণ প্যাকিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, তিন দিন গান গেয়ে সর্বমোট ৭৯ হাজার ৭৯৩ টাকা সংগৃহীত হয়েছে। এ ছাড়া বিকাশেও কিছু টাকা এসেছে। সর্বমোট ২৫০ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ হিসেবে চিড়া, গুড়, লবণ, ওষুধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, স্যালাইন, ম্যাচ ও মোমবাতি প্রদান করা হবে। শুধু গান গেয়েই নয়, বরং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এমসিজে ফটোগ্রাফিক ক্লাব’ বিভিন্ন মানুষের ছবি তুলে দেয়ার মাধ্যমে সংগ্রহ করছে বন্যার্তদের জন্য সহযোগিতা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমিল্লা জেলা সমিতি, লালমনিরহাট জেলা সমিতিসহ বিভিন্ন উপজেলা সমিতি বন্যার্তদের সহযোগিতায় ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাসের বাইরে সংগ্রহ করছে ফান্ড। খুব শিগগিরই এসব ত্রাণ বন্যাদুর্গত এলাকায় পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের উদ্যোগে সোমাবার গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার চিনিরপোটল ও ফুলছড়ি উপজেলার হাজিরহাট প্রাইমারী স্কুল মাঠে বন্যাকবলিত অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুনের নেতৃত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম বিপ্লব, আতিকুজ্জামান রিপন, যুগ্ম সম্পাদক ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান রয়েল, আমীর আমজাদ মুন্না, এম আর মামুন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রাশিদুর ইসলাম রিপন, ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক আজিমুদ্দিন মেরাজ, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক জিল্লুর রহমান, গাইবান্ধা জেলা ছাত্রদল সভাপতি জাকারিয়া আলম জিম, সাধারণ সম্পাদক তারেকুজ্জামান তারেক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মাহমুদউন নবী টিটুল, সাঘাটা উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মঈন প্রধান লাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিলন প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর