ভাষাকে ভিত্তি করেই আমাদের স্বাধীনতা : প্রধানমন্ত্রী

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলা ভাষার ওপর নানা সময়ে কতভাবে আক্রমণ হয়েছে। সেই আক্রমণ বারবার প্রতিহত করা হয়েছে। এই উপমহাদেশে একমাত্র বাংলাদেশই একটি ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র। বাংলা ভাষাকে ভিত্তি করেই আমাদের স্বাধীনতা।

আজ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক বাংলা সাহিত্য সম্মেলন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন দেশের ২২৫ জন শিল্পী-সাহিত্যিক।

মাতৃভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাহিত্যচর্চা ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে। যে সমাজে সাহিত্য যত ঋদ্ধ, সে সমাজ তত আধুনিক।

নিজেকে সাধারণ মানুষ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে উন্নত করে গড়ে তুলতে হবে, যাতে বাঙালি বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।

তিনি বলেন, বিশ্বে অনেক মাতৃভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। সেটি যেন না হয়, এ জন্য আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট করেছি। সারা বিশ্বের মাতৃভাষা সেখানে সংরক্ষণ হবে, সেসব ভাষা নিয়ে গবেষণা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা অক্ষর পরিবর্তনেরও চেষ্টা করা হয়েছিল। আরবি হরফে বাংলা লিখতে হবে। আমাদের কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী কেউ মানেনি। রোমান হরফে বাংলা লেখার প্রস্তাব এলো, সেটাতেও বাধা দিয়েছি। রবীন্দ্রনাথ পড়া যাবে না, সেই সমন জারি করলো মোনায়েম খান। ছাত্রসমাজ আবারও আন্দোলন শুরু করলো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফ্রেব্রুয়ারি ছিল প্রাদেশিক পরিষদের বাজেট ঘোষণার দিন। সে সময় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। তখনকার ছাত্রসমাজ সেটি ভাঙার কারণে গুলিতে শহীদ হন ছাত্রনেতারা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তান নামের দেশটাতে আমরা ছিলাম সংখ্যাগরিষ্ঠ, কিন্তু আমাদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার সবসময়ই চেষ্টা করা হয়েছে। নজরুলের বিখ্যাত কবিতায় ‘মহাশ্মশান’ এর জায়গায় ‘গোরস্তান’ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। ‘সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি’এটাকে বদলে ‘ফজরে উঠিয়া আমি দেলে দেলে বলি ’বানানোর চেষ্টা হলো। বাংলা সাহিত্যকেও তখন কলুষিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।

তিনি এ ধরনের একটি আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এর মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্য আরো ঋদ্ধ হবে। নতুন সম্ভাবনা উন্মোচিত করার পাশাপাশি নিজেদের সামর্থ্যকে তুলে ধরবে।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর