বিয়ে না করাই বলীখেলায় সাফল্যের কারণ

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলে বলীখেলা বেশ জনপ্রিয়। গত ১৫ বছর ধরে এই খেলাকে যিনি মাতিয়ে রেখেছেন তিনি হচ্ছেন কক্সবাজারের ৩২ বছর বয়সী দিদারুল আলম। গত ১৫ বছরের মধ্যে ১৩ বার এই খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তিনি। একটানা এতদিন তিনি কিভাবে তিনি সাফল্য ধরে রাখছেন? মি: আলম বলছেন এই খেলায় ধারাবাহিক সাফল্যের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ আছে।

 

যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিয়ে না করা। তিনি এখনো বিয়ে করেননি বলে এই খেলায় সময় দিতে পারছেন।

 

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “আমি এখনো বিয়ে-শাদী করি নাই। যার কারণে খেলায় সময় দিতে পেরেছি। যখন সংসার, ঝামেলা থাকবে তখন তো আর সময় দিতে পারবো না।”

 

আজ চট্টগ্রামে আবারো অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলা। বিজয়ী হবার প্রত্যয় নিয়ে আবারো মাঠে নামবেন মি: আলম।

 

১৯০৯ সাল থেকে চট্টগ্রামে চলছে এই কুস্তি খেলা, যেটি স্থানীয়ভাবে বলী খেলা হিসেবে পরিচিত।

 

প্রতিবছর ১২ই বৈশাখ চট্টগ্রামের লালদিঘী ময়দানে এই খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এই খেলা, যাকে ঘিরে বৈশাখী মেলাও গড়ে উঠেছে।

 

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য আব্দুল জব্বার সওদাগর নামে এক ব্যবসায়ী এই খেলাটি শুরু করেন, যেটি এখনো জব্বারের বলী খেলা নামেই পরিচিত। এই প্রতিযোগিতায় ১৩বার চ্যাম্পিয়ন হবার কারণে দিদারুল আলম ‘দিদার বলী’ নামেই বেশি পরিচিত।

 

গত ১৫ বছরের মধ্যে যে দু’বার চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দিদার বলীর নাম নেই সে দু’বার তিনি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেননি। মাঝখানে দুই বছর অর্থাৎ ২০১২ এবং ২০১৩ সালে তিনি খেলতে পারেননি।

 

তিনি বলেন, বলীখেলার প্রতি মানুষের আকর্ষণ আছে। বৈশাখের আনন্দ নিয়ে এই খেলা হয়।

 

মি: আলম বলেন, এই খেলায় আর্থিক লাভ খুব একটা নেই। শুধু ঐতিহ্য ধরে রাখা এবং সুনামের জন্য তিনি এই খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে দিদার বলী উল্লেখ করেন।

 

বলীখেলার জন্য তিনি শরীর সুস্থ রাখতে বেশ চেষ্টা করেন। নিয়মিত ব্যায়াম করেন এবং খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি বেশ সতর্ক।

 

দিদার বলীর বর্ণনায়, “রুটিন অনুযায়ী খাওয়া-দাওয়া করতে হয়। সবকিছু নিয়ন্ত্রণের ভিতরে রাখতে হয়।” বলি খেলা শুরুর ছয়মাস আগে থেকে এই শারীরিক চর্চা শুরু করেন তিনি। এই বলি খেলার আনন্দ উপভোগ করার জন্য তিনি সারা বছর কষ্ট করেন।
Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর