ছাত্রলীগের সম্মেলন, পদ প্রত্যাশী নেতাকর্মীদের দৌড়ঝাপ

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আগামী ১১ ও ১২ মে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা। আর এর আগেই চলতি মাসের ২৪ এপ্রিল ঢাকা মহানগর উত্তর, ২৬ এপ্রিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এবং ২৯ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলন হবে। তাই এখন থেকেই দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী নেতাকর্মীরা। তবে কেন্দ্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে নেতাকর্মীদের আগ্রহের মাত্রাটা বেশি।

ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে যাওয়ার জন্য পদ প্রত্যাশীরা চালিয়ে যাচ্ছেন জোর তদবির ও লবিং। তারা বিভিন্নভাবে তাদের যোগ্যতা এবং দলের জন্য ত্যাগকে সামনে এনে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বয়সের বাধ্যবাধকতার কারণে যাদের ছাত্রলীগ থেকে বিদায় নিতে হবে তাদের মধ্যে শুরু হয়েছে সাবেক হওয়ার ক্ষণগণনা। এদিকে সঠিক নেতৃত্ব বাছাই করতে নড়ে চড়ে বসেছেন তবে ছাত্রলীগের কাউন্সিলের সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা বলছেন, ছাত্রলীগের ত্যাগী এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী, মেধাবী এবং সংগঠনের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত এমন নেতাকর্মীরাই ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসবেন।

সম্মেলনের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। মূলত যাদের আগামীতেও নেতৃত্বে আসার মতো বয়স ও সম্ভাবনা রয়েছে তাদের মধ্যে উদ্দীপনা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন, হাকিম চত্বর, টিএসসিসহ রাজনৈতিক জোনগুলোয় ভিড় বেড়েছে কয়েকগুণ। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডায় মুখর হয়ে থাকছে মধুর ক্যান্টিন।

নতুন সম্মেলনকে ঘিরে নতুন করে সরব হয়ে উঠেছেন পদপ্রত্যাশীরা। এর মধ্যে অনেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবার অনেকে কেন্দ্রীয় শীর্ষ পদে আসার জন্য লবিং-তদবির চালাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নতুন পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ে রয়েছেন বর্তমান সহ-সভাপতি রুহুল আমিন, শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ত্রাণ সম্পাদক ইয়াজ আল রিয়াদ, পরিকল্পনা ও কর্মসূচি সম্পাদক রাকিব হোসেন, কৃষি সম্পাদক বরকত হোসেন হাওলাদার, আইন সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়, প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু, সমাজসেবা সম্পাদক রানা হামিদ, বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার পারভেজ আরেফিন, উপ আপ্যায়ন সম্পাদক আরিফুজ্জামান আল ইমরান, উপ-স্কুলছাত্র বিষয়ক সম্পাদক খাজা খায়ের সুজন, উপ গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক সাগর হোসেন সোহাগ, উপদপ্তর গোলাম মোস্তফা, উপ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আওলাদ হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক শেখ নকিবুল ইসলাম সুমন, উপদপ্তর সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, উপগণশিক্ষা সম্পাদক নাইমুর রহমান, উপমুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক আল মামুন, উপঅর্থ বিষয়ক সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার এবং সহ-সম্পাদক নাজমুল হক সিদ্দিক।
এছাড়া রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রুম্মান হোসাইন, সহসভাপতি শাহরিয়ার কবির বিদ্যুৎ, এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ দুই বছর। ২০১৫ সালের ২৬ ও ২৭ জুলাই সোহাগকে সভাপতি এবং জাকির হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি গঠন হয়েছিল। সে হিসেবে গত বছরের জুলাই মাসে ২৯তম জাতীয় সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। মেয়াদপূর্তির ছয় মাসেও সম্মেলন না করায় ৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্রলীগকে সম্মেলন করে নতুন নেতৃত্ব আনতে বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ৩১ মার্চ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা মে মাসের মধ্যেই সম্মেলন করার নির্দেশ দেন। আর মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ যেন না পার হয়, সেটিও জানিয়ে দেন তিনি। এমন নির্দেশের পর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর