ছেলের নির্যাতনে বৃদ্ধ মা বাড়িছাড়া

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ নিজের নামে জমি লিখে না দেওয়ায় বৃদ্ধ মাকে বাড়িছাড়া করেছেন ছেলে। মায়ের ঘরের দরজায় স্তূপ করে রেখেছেন কাঁটা। দিয়েছেন ঘরে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারার হুমকি। ছেলে, ছেলের দুই স্ত্রী ও নাতি-নাতনির নির্যাতন-হুমকিতে আট মাস ধরে ঘরছাড়া ৯০ বছরের বৃদ্ধা মোমেনা বেওয়া। এ ঘটনা কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের দক্ষিণ রামখানা গ্রামের। এ ঘটনায় ছেলে মমিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন মা। কিন্তু ঘটনা তদন্তে গিয়ে উল্টো
ওই ছেলের খারাপ আচরণের শিকার হয়েছেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা। এ ঘটনায় এলাকাবাসীও ক্ষুব্ধ।

স্বামী শাহাদৎ আলী বেপারীর মৃত্যুর পর ছোট ছেলে মহির উদ্দিনের কাছে থাকতেন মোমেনা বেওয়া। বছরখানেক আগে মহির মারা গেলে জমির লোভে মাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন বড় ছেলে মমিন উদ্দিন। এ সময় মায়ের নামে থাকা এক একর ৪১ শতক জমি দখলে নেন তিনি। পরে সেই জমি নিজের নামে লিখে দিতে মোমেনাকে চাপ দেন মমিন ও তার ছেলে হারুন। জমি লিখে না দিলে ঘরে তালা দিয়ে মাকে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেন। বাধ্য হয়ে বাড়ি ছাড়েন বৃদ্ধা। এর পর থেকে ছয় মেয়ের বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, মহির উদ্দিনের বাড়ির একটি ঘরে থাকতেন মোমেনা বেওয়া। বড় ছেলে মমিন নিয়ে আসার পর মহিরের বাড়ির দিকের দরজা বন্ধ করে মমিনের বাড়ির দিকে দরজা করা হয়। বর্তমানে সে দরজা বন্ধ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়; দরজার সামনে কাঁটা ও বাঁশের কঞ্চির স্তূপ করে রেখেছেন মমিন।

মেয়ের বাড়িতে গিয়ে মোমেনা বেওয়ার সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, ছেলেকে পেটে ধরেছি। সেই আমাকে আগুনে পুড়িয়ে মারতে চায়। ছেলের কাছে ফিরবেন কি-না জানতে চাইলে বলেন, কোনোদিনই ওই ছেলের কাছে ফিরে যাব না। ও তো আমাকে মেরেই ফেলবে।

মোমেনার মেয়ে জাহানারা বেগম বলেন, মমিনকে ভাই ভাবতে ঘৃণা হয়। সহিদা বেগম ও আহেলা বেগম জানান, ভাইয়ের বিচার চান তারা। মায়ের জমি উদ্ধারে সরকারের কাছে সহযোগিতা চান তারা।

নাগেশ্বরী ইউএনও শঙ্কর কুমার বিশ্বাস বলেন, ঘটনার ব্যাপারে তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। আলোচনা করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর