যুবদলের কমিটি চুড়ান্ত, ঘোষণা যেকোনো সময়

জাতীয়তাবাদী যুবদলের পাঁচ সদস্যর কেন্দ্রীয় কমিটি চুড়ান্ত। যে কোনো সময় কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে। বিএনপির নির্বাহী কমিটির পর দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করতে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। পবিত্র হজ পালন শেষে দেশে ফিরে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবকদল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রথমেই যুবদল ঘোষণা করবেন তিনি। এ জন্য গতকাল রোববার রাতে কমিটি গঠনে যুবদলের নেতাদের চুড়ান্ত মতামত নেন। তাদের প্রয়োজনীয় পরমর্শ দেন।

দলীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, যুবদলের কমিটি খালেদা জিয়া হজে যাওয়ার আগে ঘোষণা করার কথা থাকলেও অভ্যন্তরীন কোন্দলে কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। খালেদা জিয়া হজ পালন শেষে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে পরমর্শ করে যুবদলের কমিটি গঠন করেছেন।  আগামী তিন দিনের মধ্যে যে কোনো সময়ে যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করবেন খালেদা জিয়া।

যুবদলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরবকে সভাপতি ও বিএনপির সহ ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুকে সাধারণ সম্পাদক করে যুবদলের এবারের কমিটি চুড়ান্ত করেছেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান।  এছাড়াও যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম মোজ্জামেল হককে সিনিয়র সহ সভাপতি ও ঢাকা মহানগর যুবদল দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম মজনুকে কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর  যুবদল উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনকে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, যুবদলের বর্তমান কমিটিতে শীর্ষপদে যারা আছেন তাদের পাশাপাশি সাবেক ছাত্রনেতারাও আসীন হতে পারেন বিএনপির প্রধান এ অঙ্গ সংগঠনটির নেতৃত্বে। যুবদলের নতুন কমিটিতে বর্তমান কমিটির ‘সক্রিয়’ নেতাদের কেউ বাদ পড়লে তাদেরকে বিএনপির বিষয়ভিত্তিক উপ-কমিটি এবং যোগ্যতা অনুযায়ী ঢাকা মহানগর বিএনপিতেও স্থান দেওয়া হবে।

গত মার্চে ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের সাড়ে চার মাস পর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই শোনা যাচ্ছিল শিগগির যুবদলের কমিটি ঘোষণা করা হবে। এ নিয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার আলাপ-আলোচনাও করেছেন খালেদা জিয়া। কিন্তু কমিটি আলোর মুখ দেখেনি। সর্বশেষ গত ৭ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবে হজ পালন করতে যাওয়ার আগে বিএনপির চেয়ারপারসন কমিটি ঘোষণা করবেন বলে জোরালো গুঞ্জন ছিল।

২০১০ সালের মার্চে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে সভাপতি এবং সাইফুল আলম নীরবকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে দুই সদস্যবিশিষ্ট ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের কমিটিও ঘোষিত হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রতি তিন বছর পর সম্মেলনের মাধ্যমে যুবদলের নতুন কমিটি গঠনের বিধান থাকলেও তা পালন হয়নি। ছয় বছরেরও অধিক সময় ধরে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটি বহাল রয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব পূর্বপশ্চিমকে বলেন, সংগঠনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের হাইকমান্ড আমাকে যেখানে উপযুক্ত মনে করবেন সেখানেই রাখবেন। তবে যেখানেই রাখা হোক দলের জন্য কাজ করে যেতে চাই। কবে নাগাদ কমিটি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে নীরব বলেন, শুনছি শর্ট টাইমের ভিতরেই কমিটি ঘোষণা হবে।

কেন্দ্রীয় যুবদলের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর যুবদলের কমিটিও ঘোষণা করা হবে। এ ক্ষেত্রে ঢাকা মহানগর যুবদল নিয়ে দ্বিধা রয়েছে। দুভাগ ভাগ না চার ভাগ হবে এ নিয়ে আলোচনা রয়েছে দলের মধ্যে।

মহানগর উত্তরের সম্ভ্যাব্য কমিটি : এস এম জাহাঙ্গীরই উত্তরের সভাপতি হচ্ছেন, এটা প্রায় নিশ্চিত। তবে সভাপতি পদে তিতুমীর কলেজ ছাত্রসংসদের সাবেক ভিপি ‘ভিপি হানিফ’র নামও আলোচনায় রয়েছে। উত্তরের সাধারণ সম্পাদকের পদের আলোচনায় সংগঠনের বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান দুলাল এবং পল্লবী থানা যুবদলের সভাপতি শফিকুর রহমান মিল্টনের নামও রয়েছেন। সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে উত্তরের বর্তমান দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সম্পাদক নূর-উল-ইসলাম সোহেলের নাম শোনা যাচ্ছে।
সম্ভাব্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদল : দক্ষিণের বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি মাসুদ আহমেদ মিলন সভাপতি পদে নামও শোনা যাচ্ছে।  সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান সহ-সভাপতি শরিফ হোসেন। এ পদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরো রয়েছেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জামিলুর রহমান নয়ন এবং জগন্নাথ কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গোলাম মওলা শাহীন।
বিএনপি ঘোষিত কমিটিতে যুব ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক পদ খালি রাখা হয়েছে। জানা গেছে, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে এ দু’টি পদের সুরাহা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর