জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটারদের মোবাইল নিয়ে প্রবেশে কড়াকড়ি থাকছে

জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটারদের মোবাইল বা অন্য কোনও ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কমিশনের এই নির্দেশনা যেন প্রতিপালিত হয় তার জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে পরিপত্র জারির পাশাপাশি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা ইতোমধ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।জানা গেছে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে যেন তার ছবি তুলে আনতে না পারে, এজন্য এ কড়াকড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনও ধরনের ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য প্রবেশের আগে প্রত্যেক ভোটারকে তল্লাশি করার কথা বলা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ভোট কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার ও কেন্দ্রের দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান ছাড়া নির্বাচনের দায়িত্বরত অন্যান্য সব ব্যক্তির মোবাইল ফোন ব্যবহারে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়ে থাকে। একইসঙ্গে ভোটাররাও যেন ভোটদানের সময়ে কেন্দ্রে মোবাইলসহ প্রবেশ করতে না পারেন, সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য প্রিজাইডিং অফিসারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে। অন্যান্য নির্বাচনের মতো আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় জেলা পরিষদ নির্বাচনেও এ নির্দেশনা জারি হয়েছে। তবে, নিয়ম থাকলেও সাধারণত নির্বাচনগুলোতে এটা বাস্তবায়নে কড়াকড়ি দেখা যায় না। যে কারণে অনেক সময় অনেক ভোটার গোপন বুথে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তার ছবি মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে তুলে নিয়ে আসেন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে বাইরে এসে তা ফলাও করে প্রচারও করেন। অনেক ভোটারকে মোবাইলে ছবি তুলে এনে তা দেখানোর জন্য প্রার্থী বা তার লোকজনের পক্ষ থেকে আগে থেকেই নির্দেশনা থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে ভোটদানের ছবি তুলে এনে দেখানোর জন্য এ ধরনের নির্দেশনা বা চাপ রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর পেছনে অবৈধ লেনদেন রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ওয়ার্ড সদস্য প্রার্থীর পক্ষ থেকে এ ধরনের অপতৎপরতার প্রচেষ্টার অভিযোগ বেশি আসছে বলে জানা গেছে।

ইলেক্ট্রোরাল কলেজ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিব্য জেলা পরিষদ নির্বাচনে খুব অল্প ভোটের ব্যবধানে জয় পরাজয় নির্ধারিত হবে। এজন্য প্রার্থীরা প্রত্যাশিত ভোটারের ভোটের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ছবি তোলার এই ‘অবৈধ’ পন্থার দ্বারস্থ হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনেও এ ধরনের কিছু অভিযোগ ইতোমধ্যে জমা পড়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের একজন সাধারণ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাকে জেলা পরিষদের একজন প্রভাবশালী সদস্য প্রার্থীর পক্ষ থেকে ভোট দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আমি যেন ওই সদস্যকে ভোট দিয়ে মোবাইলে ছবি তুলে আনি তার জন্য চাপাচাপি করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ইউনুচ আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভোট দিয়ে ছবি তুলে আনার বিষয়ে কিছু অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। আমরা এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছি। কমিশন থেকেও বিষয়টি আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রিজাইডিং অফিসারদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেব। ভোট কেন্দ্রে ঢোকার আগে ভোটাররা যেন মোবাইল বা অন্য কোনও ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য আমরা তল্লাশির ব্যবস্থা করব।’

নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ বলেন, ‘ভোট দিয়ে ছবি তোলার বিষয়ে কমশনে কিছু অভিযোগ পড়েছে। আমরা আগেই এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। ডিসি, এসপিদের ও রিটার্নিং কর্মকতাদের সঙ্গে বৈঠকেও আমরা এটা জানিয়ে দিয়েছে। দরকার হলে তাদের ফোন করে আবারও এ বিষয়ে সতর্ক করা হবে।’

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর