কেমন হবে ভবিষ্যতের সুপারফুড

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ যেসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে মূলত সেই ধরনের খাবারকেই সুপারফুড বলা হচ্ছে। সুপারফুড একাধারে ডায়েটিং এবং পুষ্টি চাহিদা মেটাতে সক্ষম। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় সুপারফুড যে কোনো ধরনের শারীরিক ক্ষতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম। বর্তমানে সুপারফুড নিয়ে মানুষের তেমন মাথাব্যথা না থাকলেও গবেষকদের ধারণা ভবিষ্যত্ প্রজন্মের কাছে খুবই গুরুত্ব পাবে সুপারফুড। তার সেই সুপারফুডের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে শ্যাওলা বা জলজ উদ্ভিদ!

সুপারফুড হিসেবে শ্যাওলার নাম শুনে অনেকেই হয়তো চমকে উঠতে পারেন। কিন্তু এই শ্যাওলা সুপারফুড হিসেবে আপনার কাছে আসবে উজ্জ্বল সবুজ কাপ কেক বা স্মুদি হিসেবে। যেখানে অবশ্যই ডিপ ওশ্যান ব্লু শেড থাকবে। গবেষকরা মনে করছেন, পৃথিবীর জনসংখ্যা যখন ৮০০ কোটি হবে তখনই সুপারফুড হিসেবে শ্যাওলার কদর বাড়তে থাকবে।

সুপারফুড হিসেবে ব্যবহূত হবে মাইক্রো অ্যালজি ও সায়ানো ব্যাকটেরিয়া। এই মাইক্রো অ্যালজি ও সায়ানো ব্যাকটেরিয়া মূলত জলজ উদ্ভিদ ও এক ধরনের খুদে শ্যাওলা। মাইক্রো অ্যালজি এক কোষী, যা লবণাক্ত বা পরিষ্কার পানিতে জন্ম নেয়; এরা সূর্যের আলো থেকে সালোক সংশ্লেষণের মাধ্যমে শক্তি সঞ্চয় করে যা তাদের জীবনীশক্তি জোগায়। অন্যদিকে সায়ানো ব্যাকটেরিয়াও এক ধরনের জলজ এবং সবুজ শ্যাওলা। এরা সূর্যের আলো থেকে শক্তি সঞ্চয় করে। তবে মাইক্রো অ্যালজি ও সায়ানো ব্যাকটেরিয়ার এই সালোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়া কিছুটা ভিন্ন প্রকৃতির। বিশ্বজুড়ে মাইক্রো অ্যালজি বা জলজ উদ্ভিজ্জগুলোর অনেক প্রজাতি আছে। এর মধ্যে বর্তমানে খাদ্য হিসেবে ব্যবহূত হয় ক্লোরেলা ও স্পিরুলিনা। স্পিরুলিনার ট্যাবলেট ও পাউডার এবং ক্লোরেলা ভিটামিন, মিনারেল, আয়রন ও প্রোটিন আকারে প্যাকেট জাত করে বাজারজাত করা হয়ে থাকে।

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লান্ট সায়েন্সেসের প্রফেসর আলিসন স্মিথ বলেছেন, মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই নীল সবুজ শ্যাওলা খাচ্ছে। কয়েক শত বছর আগে থেকেই দক্ষিণ আমেরিকার মানুষ পুকুর থেকে নিয়ে স্পিরুলিনাকে খাবারে সংযোজন করে আসছে। মাইক্রো অ্যালজিতে উঁচু মাত্রার প্রোটিন আছে যা মাংসের বিকল্প হতে পারে।

পুষ্টিবিদ রিয়ানন ল্যামবার্ট বলছেন, স্পিরুলিনায় ৫৫ থেকে ৭০ শতাংশ প্রোটিন থাকে। এটা উদ্ভিদভিত্তিক খাবারের চেয়ে ভালো অ্যামাইনো অ্যাসিড প্রোফাইল আছে। জলজ উদ্ভিদে ওমেগা-৩ আছে। মাছের চেয়ে এ উত্সটি অনেক বেশি সহজলভ্য। ভবিষ্যতে সুপারফুড হিসেবে শ্যাওলা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বিজ্ঞানীরা এখনই সেই বিষয়টির ওপর জোর দিচ্ছেন।-বিবিসি।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর