ঢাকা , বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটালিপাড়ায় কালীপূজা উপলক্ষে নৌকাবাইচ

গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া উপজেলায় কালীপূজা উপলক্ষে ব্যাপক উৎসাহ ও আনন্দঘন পরিবেশের মধ্যে দিয়ে নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাধাগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির আয়োজনে ঘাঘর নদীর খেজুরবাড়ি থেকে মান্দ্রা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ২ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ নৌকাবাইচ। এ সময় নদীর দু’পাড়ে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন বয়সের হাজার হাজার নারী-পুরুষ এই নৌকাবাইচ উপভোগ করেন।

কোটালিপাড়া উপজেলাসহ এর আশপাশের এলাকা থেকে প্রায় অর্ধশত বাহারি বাচারী নৌকা এ নৌকাবাইচে অংশ গ্রহণ করে। নদীটির খেজুর বাড়ী থেকে শুরু হয়ে এক একটি ছোঁপ মান্দ্রায় এসে শেষ হয়। এসময় নদীর দু’পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা হাজার হাজার নর-নারীর হাতেতালী ও হর্ষধ্বনীতে এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। এই নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে নদীর দু’পাড়ে বসেছিল গ্রামীণ মেলা। এছাড়াও ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় বাদাম, চানাচুর, মুড়ি মুড়কির ভাসমান দোকান নিয়ে অনেককেই বেচাকেনা করতে দেখা গেছে।

মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলা থেকে আগত সুদেব বিশ্বাস বলেন, আমি আমার পরিবার নিয়ে এখানে নৌকাবাইচ দেখতে এসেছিলাম। অনেকদিন পরে উৎসবমুখর পরিবেশে এই নৌকাবাইচ দেখলাম।

উপজেলার তারাশী গ্রামের মনু দাড়িয়া বলেন, আমি একটি ট্রলার নিয়ে আমার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন নিয়ে এই নৌকাবাইচ দেখতে এসেছি। আমাদের সাথে কয়েকজন শিশু আছে। যারা জীবনে এই প্রথম নৌকাবাইচ দেখলো। এই বাইচ দেখে এরা খুব আনন্দ পেয়েছে।

সাংবাদিক মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেন, কোটালিপাড়া উপজেলায় একসময় অর্ধশত স্থানে দুর্গা, লক্ষ্মী, কালী ও বিশ্বকর্মা পূজায় নৌকাবাইচ হতো। কালের বিবর্তনে খাল নদী দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় ঐহিত্যবাহী এ নৌকাবাইচ হারিয়ে যেতে বসেছে। বিনোদনমুখী এই নৌকাবাইচকে ধরে রাখার জন্য আমি উপজেলার নদী ও খাল দখলমুক্ত এবং খননের দাবী জানাচ্ছি।

নৌকাবাইচ শেষে রাধাগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির পক্ষ থেকে বাচারী নৌকাগুলোকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ সময় রাধাগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

কোটালিপাড়ায় কালীপূজা উপলক্ষে নৌকাবাইচ

আপডেট টাইম : ০৫:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪

গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া উপজেলায় কালীপূজা উপলক্ষে ব্যাপক উৎসাহ ও আনন্দঘন পরিবেশের মধ্যে দিয়ে নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাধাগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির আয়োজনে ঘাঘর নদীর খেজুরবাড়ি থেকে মান্দ্রা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ২ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ নৌকাবাইচ। এ সময় নদীর দু’পাড়ে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন বয়সের হাজার হাজার নারী-পুরুষ এই নৌকাবাইচ উপভোগ করেন।

কোটালিপাড়া উপজেলাসহ এর আশপাশের এলাকা থেকে প্রায় অর্ধশত বাহারি বাচারী নৌকা এ নৌকাবাইচে অংশ গ্রহণ করে। নদীটির খেজুর বাড়ী থেকে শুরু হয়ে এক একটি ছোঁপ মান্দ্রায় এসে শেষ হয়। এসময় নদীর দু’পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা হাজার হাজার নর-নারীর হাতেতালী ও হর্ষধ্বনীতে এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। এই নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে নদীর দু’পাড়ে বসেছিল গ্রামীণ মেলা। এছাড়াও ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় বাদাম, চানাচুর, মুড়ি মুড়কির ভাসমান দোকান নিয়ে অনেককেই বেচাকেনা করতে দেখা গেছে।

মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলা থেকে আগত সুদেব বিশ্বাস বলেন, আমি আমার পরিবার নিয়ে এখানে নৌকাবাইচ দেখতে এসেছিলাম। অনেকদিন পরে উৎসবমুখর পরিবেশে এই নৌকাবাইচ দেখলাম।

উপজেলার তারাশী গ্রামের মনু দাড়িয়া বলেন, আমি একটি ট্রলার নিয়ে আমার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন নিয়ে এই নৌকাবাইচ দেখতে এসেছি। আমাদের সাথে কয়েকজন শিশু আছে। যারা জীবনে এই প্রথম নৌকাবাইচ দেখলো। এই বাইচ দেখে এরা খুব আনন্দ পেয়েছে।

সাংবাদিক মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেন, কোটালিপাড়া উপজেলায় একসময় অর্ধশত স্থানে দুর্গা, লক্ষ্মী, কালী ও বিশ্বকর্মা পূজায় নৌকাবাইচ হতো। কালের বিবর্তনে খাল নদী দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় ঐহিত্যবাহী এ নৌকাবাইচ হারিয়ে যেতে বসেছে। বিনোদনমুখী এই নৌকাবাইচকে ধরে রাখার জন্য আমি উপজেলার নদী ও খাল দখলমুক্ত এবং খননের দাবী জানাচ্ছি।

নৌকাবাইচ শেষে রাধাগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির পক্ষ থেকে বাচারী নৌকাগুলোকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ সময় রাধাগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।