বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ মা ইলিশ রক্ষায় দীর্ঘ ২২ দিন বন্ধ থাকার পর আজ ভোর থেকে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ ইলিশ বিচরণের নদ-নদীতে ফের মাছ ধরা শুরু হয়েছে। ফলে জেলার উত্তরের ষাটনল থেকে দক্ষিণে চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় এক শ কিলোমিটার নদীতেই শত শত জেলে জাল-নৌকা নিয়ে ইলিশ শিকারে ব্যস্ত।
এতে সকাল থেকেই জমে উঠেছে চাঁদপুরে নদীপাড়ের মাছের আড়তগুলো। আর চাহিদামতো ইলিশ জালে ধরা পড়ায় জেলেরাও বেজায় খুশি। মাছ ব্যবসায়ীরাও ইলিশের আমদানিতে আড়তগুলোতে ব্যস্ত সময় কাটাতে শুরু করেছেন। এমন পরিস্থিতি সরেজমিন দেখতে ভোর থেকে জেলার বিভিন্ন মাছের আড়ত ঘুরে দেখেছেন মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
তবে এখনো অনেক ইলিশের পেটে ডিম রয়েছে বলে জানান জেলেরা। অবশ্য জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুর রহমান তা স্বীকার করে বলেছেন, মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের যে কর্মসূচি তা সফল হয়েছে। এতে আগামীতে জাটকা বৃদ্ধি পাবে একই সাথে দেশে ইলিশের উৎপাদন আরো বেড়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, ১ অক্টোবর থেকে গতকাল পর্যন্ত দীর্ঘ এই ২২ দিন চাঁদপুরে নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় সরকার ইতিমধ্যে বেকার হয়ে পড়া জেলেদের মধ্যে প্রান্তিকসীমার সাড়ে ৩৬ হাজার জেলেকে মাথাপিছু ২০ কেজি হারে বিনামূল্যে চাল দিয়েছে।
এদিকে, দেশের বিশিষ্ট মৎস্যবিজ্ঞানী, ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি ইলিশ বিচরণের বিভিন্ন ক্ষেত্র তার গবেষক দল নিয়ে ঘুরে বেড়ান।
তিনি আরো জানান, মৌসুমের এই সময় মা ইলিশ সাগরের লোনা পানি ছেড়ে নদীর মিঠা পানিতে ডিম ছাড়তে চলে আসে। এবারো তার ধারাবাহিকতা ছিল। ফলে ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ রাখার জন্য ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সরকার যে পরিকল্পনা নিয়েছে। তা অবশ্য সফল হবে বলে তিনি জানান।
চাঁদপুরে ইলিশ রক্ষায় টাস্কফোর্স প্রধান, জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মণ্ডল জানান, গত ২২ দিনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি দল দিনরাত নদীতে দায়িত্ব পালন করেছেন। এতে সহযোগিতায় ছিলেন কোস্ট গার্ড, জেলা পুলিশ, নৌ-পুলিশ, মৎস্য বিভাগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সচেতন জেলেসহ মৎস্য ব্যবসায়ীরা। এই জন্য মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম সফল হওয়ায় তিনি তাদেরকে ধন্যবাদ জানান।