একটি মেয়ের কারণেই অকালে প্রাণ গেল টুম্পার। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর সোলায়মান মিয়ার পরকীয়ার কারণেই পরপারে যেতে হলো তাকে। তবে সেই মেয়েটির নাম জানা যায়নি।
রোববার বিকেলে সোলায়মান, টুম্পা, টুম্পার ভাই সাঈদ ও তার স্ত্রীসহ বসুন্ধরা এলাকায় বেড়াতে যান। সেখান থেকে অন্য জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার সময় গাড়িতে স্বামী সোলায়মানের মোবাইলে অন্য একটি মেয়ের ছবি দেখতে পেয়ে তার সঙ্গে টুম্পার ঝগড়া ও কথা কাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে রাতে সোলায়মান ও টুম্পাকে তাদের বাসায় নামিয়ে ভাই সাইদ তার স্ত্রীকে নিয়ে চলে যান। এসময় তাদের সন্তান নাফি (৮) উত্তরাতে তার নানা নজরুল ইসলামের বাসায় ছিল।
পরে রাতের কোনো এক সময় টুম্পাকে নির্যাতন করে হত্যার পর সোলায়মান বাসার বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান। সকালে কাজের বুয়া বাসার দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে টুম্পার মাকে ফোন করেন।
খবর পেয়ে তারা ওই বাসায় এসে জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে খাটের ওপর টুম্পার
দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক টুম্পাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দীর্ঘদিন ধরে এক নারীর সঙ্গে সোলায়মানের পরকীয়া চলছিল। বিষয়টি তার স্ত্রীর নজরে আসলে এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো। প্রায়ই সোলায়মান তার স্ত্রীর ওপর অকথ্য নির্যাতন চালাতো।
নিহত টুম্পার মা সেলিনা বেগম বলেন, পরকীয়ার কারণে টুম্পাকে প্রায়ই মারধর করতো সোলায়মান। এরই শেষ পরিণতি হলো আমার মেয়ের। নিহত টুম্পার ছোট ছেলে নির্জন ইসলাম নাফিরও সেই কথা।
তার বাবা প্রায়ই তার মা’র ওপর নির্যাতন চালাতো বলে জানায় সে।
ঢাকার উত্তরায় ৭ নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর রোডের বাসায় গতকাল রোববার তালাবদ্ধ বাসা থেকে টুম্পার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর থেকেই গাজীপুর ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সোলায়মান পলাতক রয়েছেন।
এদিকে স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগে আজ মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে নিহতের স্বজনরা ছাড়াও স্থানীয়রা অংশ নেন।
প্রায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় কাউন্সিলর সফিকুর আমিন তপনসহ অন্যরা। এ সময় বক্তারা কাউন্সিলর সোলায়মানকে টুম্পার ঘাতক হিসেবে আখ্যায়িত করে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিার দাবি করেছেন। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বিচার চাইলেন নিহত নুশরাত জাহান টুম্পার ছেলে ও মা।
টুম্পার মা সেলিনা বেগম বলেন, পরকীয়ার কারণে প্রায়ই টুম্পাকে মারধর করতো তার স্বামী সোলায়মান। সবশেষে সোমবার সকালে টুম্পাকে উত্তরায় নিজ বাসায় হত্যা করে পালিয়ে যায় সোলায়মান।
তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।