বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ যশোরের ঝিকরগাছায় চলতি মৌসুমে পাটচাষ খরার কবলে পড়লেও দীর্ঘদিন পর লাভের মুখ দেখছে কৃষক। আশানুরূপ দাম পাওয়ায় পাট চাষির মুখে হাসির ঝিলিক। চাষিদের দাবি, দাম থাকায় অন্তত সাত-আট বছর পর তাঁরা লাভবান হচ্ছেন।
ঝিকরগাছা উপজেলায় এ বছর পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল পাঁচ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। চাষ হয়েছে চার হাজার হেক্টর জমিতে। বছর বছর টানা লোকসানের কারণে দিন দিন পাটচাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষক। বিশেষ করে যখন পাট কৃষকের ঘরে থাকে, তখন পানির দামে বিক্রি করতে হয় এই কৃষিপণ্য। ফলে সোনালি আঁশ কৃষকের গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এবার এখনো যে দামে পাট কেনাবেচা হচ্ছে তাতে লাভবান হচ্ছে কৃষক।
উপজেলার বারবাকপুর গ্রামের আজিজুর রহমান জানান, তিনি এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে পাট চাষ করে ১৫-১৬ হাজার টাকা লাভ পেয়েছেন। গত বছর তিনি সাড়ে তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করে গচ্চা খাওয়ায় এ বছর কম করে চাষ করেছিলেন। এবার আড়াই বিঘা জমির মধ্যে তাঁর ১০ কাঠা বেলে জমির পাট নষ্ট হয়েছে খরার কারণে। তারপরও সব মিলিয়ে ২৪ মণ পাট পেয়েছেন তিনি।
আজিজুর রহমান কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শে সারিবদ্ধভাবে পাট লাগানোর কারণে খরচ কম ও ফলনও তুলনামূলক বেশি পেয়েছেন। প্রথম ১০ মণ পাট বিক্রি করেছেন এক হাজার ৬৫০ টাকা মণ দরে। গত সোমবার আরো কিছু পাট বিক্রি করেছেন এক হাজার ৭০০ টাকা মণ দরে। পাটখড়ি (পাটকাঠি) বিক্রি করেছেন ৩০-৩৫ টাকা আটি (গল্লা)।
একই গ্রামের মিন্টু হোসেন বলেন, গত সাত-আট বছর পর পাটচাষে লাভের মুখ দেখল কৃষক। এ বছর তিনি দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করে ২২ মণ ফলন পেয়েছেন। তিনিও কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শে সিডার মেশিন দিয়ে সারিবদ্ধভাবে পাট লাগিয়েছিলেন। ফলে আগাছা কম হওয়ায় এবং বাতাস সহজে ক্ষেতে প্রবেশ করতে পারায় পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় চাষে খরচও কম হয়েছে। দুই বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ১৪ হাজার টাকা।
মিন্টু হোসেন আরো জানান, তিনি এ বছর পাট বিক্রি করেছেন সাড়ে ১৬০০ টাকা মণ দরে। তাঁর দাবি, গত বছরও এ সময় পাটের দাম ছিল ৭০০-৮০০ টাকা মণ।
উপজেলা কৃষি কর্মকতা কৃষিবিদ দীপঙ্কর দাস জানান, এ বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পাটের ফলন কিছুটা কম হয়েছে। তবে কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এবং দাম আশানুরূপ থাকায় কৃষক লাভবান হচ্ছে।