একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তবে টানা দুই মেয়াদে ৯ বছর ক্ষমতায় থাকা দলের অনেকে মন্ত্রী-এমপি এমনকি তাদের ঘনিষ্ঠজনরা অবৈধ উপায়ে প্রচুর সম্পদের মালিক বনে গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এমন ১১৩ জন মন্ত্রী-এমপিদের তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়েছে। তাদের বিষয়ে আগামী ২ মাসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি পূর্ব্পশ্চিমকে নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের একটি দায়িত্বশীল সূত্র।
দুদকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, মন্ত্রী-এমপিই শুধু নয়, তাঁদের একান্ত সচিব (পিএস), সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ও ব্যক্তিগত সহকারীদের (পিএ) দুর্নীতির খোঁজেও বের করতে হবে।
গত ৯ বছরে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে, তদবির বাণিজ্য করে যেসব পিএস, এপিএস ও পিএ বাড়ি-গাড়ি, ফ্ল্যাটসহ কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন, তাঁদের সম্পদ খতিয়ে দেখবে দুদক। ক্ষমতায় থাকাকালে লোকজনকে চাকরি, পদোন্নতি দেওয়া এবং বদলির নামে অনেক মন্ত্রী-এমপির পাশাপাশি তাঁদের পিএস-এপিএস-পিএরাও দুই হাতে টাকা কামিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে প্রাথমিক অনুসন্ধান কাজ শুরু হয়েছে।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এ বিষয়ে বলেন, ১১৩ জনের তালিকা নিয়েই কাজ করবে দুদক। তবে গণমাধ্যমে তাদের নাম প্রকাশ হলে ওই সব দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী-এমপিসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী সতর্ক হয়ে যাবেন। অনেকেই হয়তো দেশ ছেড়ে পালাবেন। তাই এখনই বেশি কিছু বলা ঠিক নয়। মন্ত্রী-এমপিদের ব্যাপারে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। পরে তাঁরাও (পিএস-এপিএস) দুদকের অনুসন্ধানের আওতাভুক্ত হবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি কয়েকজন মন্ত্রী-এমপির হলফনামা ধরে অনুসন্ধানে নেমে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। ওই সব মন্ত্রী-এমপির নাম ভাঙিয়ে তাঁদের পিএস, এপিএস ও ব্যক্তিগত সহকারীরা গত পাঁচ বছরে বিপুল অর্থ-সম্পদ বানিয়েছেন। দুর্নীতিবাজ, সুবিধাভোগী এসব পিএস-এপিএস এখন বিদেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টায় আছেন। তাঁদের বিরুদ্ধেও দুদক অনুসন্ধান করবে। এখন প্রাথমিক তথ্যের যাচাই-বাছাই চলছে।