ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম মো. মাজহারুল ইসলাম এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে সমনে আগামি ১৭ অক্টোবর আদালতে হাজির হওয়ার জন্য দিন ধার্য করা হয়।
এই দিন সকালে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম দণ্ডবিধির ১৯৮/৪৬৯ ধারার অভিযোগ এনে এ নালিশী মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় বাদীর আইনজীবী দুলাল মিত্র জানান, মামলায় বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১৯৮ ধারায় ১৫ আগস্ট জালিয়াতির মাধ্যমে মিথ্যা জন্ম দিনকে সত্য বলে প্রচার করে তা পালন করা এবং ৪৬৯ ধারায় বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সুনাম নষ্ট করার অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিভিন্ন মাধ্যমে খালেদা জিয়ার পাঁচটি জন্মদিন পাওয়া গেলেও কোথাও ১৫ আগস্ট পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় তিনি পাঁচটি জন্মদিনের একটিও পালন না করে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকীর জাতীয় শোক দিবসে আনন্দ উৎসব করে জন্মদিন পালন করে আসছেন। শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য তিনি ওইদিন জন্মদিন পালন করেন।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭ সালে দুই জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর এসএসসি পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী জন্ম তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬ সাল। ১৯৯১ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায় তার জন্মদিন ১৯ আগস্ট ১৯৪৫ সাল। তার বিয়ের কাবিননামায় জন্মদিন ৪ আগস্ট ১৯৪৪ সাল। সর্বশেষ ২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পার্সপোর্ট অনুযায়ী তার জন্মদিন ৫ আগস্ট ১৯৪৬ সাল।
মামলার বাদী একজন নাগরিক ও সচেতন সাংবাদিক হিসাবে জাতির পিতাকে অশ্রদ্ধা ও বর্ণনাকৃত অপরাধজনক কর্মকাণ্ড করায় মারাত্মক ভাবে সংক্ষুব্ধ হয়ে এ মামলা দায়ের করেন বলেও তার আইনজীবী আরও জানান।
চলতি বছর খালেদা জিয়া কেক না কাটলেও তার জন্মদিন পালন করতে মিলাদের আয়োজন করে বিএনপি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে ১৫ আগস্ট জন্মদিন হিসেবে পালন শুরু করেন খালেদা জিয়া। ওই বছরেই এই দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। কয়েক বছর পর থেকে কেক কেটে ঘটা করে এই দিনটিতে জন্মদিন উদযাপন শুরু করেন খালেদা জিয়া। আওয়ামী লীগের অভিযোগ, বঙ্গবন্ধু হত্যার দিনটিতে কর্মী সমর্থকদের উল্লাস প্রকাশের সুযোগ করে দেন খালেদা জিয়া। এ কারণেই মিথ্যা জন্মদিন উদযাপন করেন তিনি।