বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দ্রুত বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে নতুন করে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এই মেডিক্যাল বোর্ডে নতুন করে তিন জন চিকিৎসক অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। তবে তারা বিএনপিপন্থী চিকিসকদের সংগঠন ড্যাব ও আওয়ামীপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাচিপের কেন্দ্রীয় বা জেলা পর্যায়ের সদস্য হতে পারবেন না। মেডিক্যাল বোর্ডের অপর দুই সদস্য হিসেবে আগে বোর্ডের সদস্য বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আব্দুল জলিল চৌধুরী ও ডা. বদরুন্নেসাকে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদেশে আরো বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া তার পছন্দ মত ফিজিওথেরাপিস্ট, গাইনোলজিস্ট ও টেকনোলোজিস্ট নিতে পারবেন। এছাড়া প্রয়োজনে খালেদা জিয়া মেডিক্যাল বোর্ডের অনুমতিক্রমে এর বাইরে থেকেও চিকিৎসক আনতে পারবেন।
আদালত খালেদা জিয়া যেহেতু একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তাকে জেল কর্তৃপক্ষ এবং বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষকে যথাযথ সম্মানের সঙ্গে মানসম্মত চিকিৎসা দিতে বলেছেন।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর দেশের বিশেষায়িত কোন হাসপাতালে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার নির্দেশনা চেয়ে রিট হাইকোর্টে দায়ের করা হয়। রিটে কারা কতৃপক্ষকে প্রদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর কারাগারে বিশেষ আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচার নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বকশীবাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার ও সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে নির্মিত এলাকাটি জনাকীর্ণ থাকে। সে জন্য নিরাপত্তাজনিত কারণে বিশেষ জজ আদালত-৫ নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এর প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হল।
সে আদালতে বিচার চলাকালীন সময়ে খালেদা বলেন, আমি অসুস্থ। পা ফুলে যায়। আপনারা যা ইচ্ছা রায় দেন। আমি আর আসতে পারবো না।
এরপর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরাও তার সাথে দেখা করে গণমাধ্যমের কাছে খালেদা জিয়ার শারিরিক অবস্থা ভাল না দাবি করে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলেছেন।
চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং প্রত্যেকের দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করে রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায় ঘোষণার পর পরই খালেদা জিয়াকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।