ঢাকা , বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পত্রিকার পাতা থেকে যেভাবে সিনেমার পর্দায় মৌসুমী

প্রিয়দর্শিনী মৌসুমীর জন্মদিন সোমবার (৩ নভেম্বর)। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন এ নায়িকা! দেশের বিভিন্ন এলাকায় এ নায়িকার ভক্তরা নিজেদের মতো জন্মদিনের কেট কাটছেন। ভক্তদের এই ভালোবাসা ছুঁয়ে যাচ্ছে মৌসুমীর হৃদয়।

জন্মদিনের দুপুরে প্রায় প্রতিবারই চ্যানেল আইয়ে উপস্থিত হয়ে কেক কাটেন মৌসুমী। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সন্তানদের সাথে দেশের বাইরে আছেন তিনি। সরাসরি না থাকলেও চ্যানেল আইয়ে তাকে নিয়ে এদিন প্রচারিত হয় বিশেষ অনুষ্ঠান।

নব্বই দশকের গোড়ায় ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ এর মাধ্যমে সিনেমায় তার অভিষেক হয়। সালমান শাহ’র বিপরীতে অভিনয় করে মুগ্ধতা ছড়ান মৌসুমী। সিনেমাটি মুক্তির পর তুমুল হিট হয়, সেইসঙ্গে ঢাকাই সিনেমায় এই এক ছবি দিয়েই নিজের দৃঢ় অবস্থান তৈরী করেন মৌসুমী।

অথচ প্রথমে মৌসুমী ই নাকি চাননি সিনেমায় আসতে! হ্যাঁ, মৌসুমীকে চলচ্চিত্রে আনতে বহু কাঠখড় পুড়িয়েছেন প্রয়াত নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান। অতীত দিনের কথা স্মরণ করে বছর চারেক আগে মৌসুমীর জন্মদিনের এক অনুষ্ঠানে চ্যানেল আইয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুলেছিলেন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ এর নির্মাতা সোহান।

জানিয়ে ছিলেন, মৌসুমীকে প্রথম আবিষ্কার করি পত্রিকার পাতায়। ‘দৈনিক বাংলা’ নামে তখন একটি পত্রিকা ছিলো, আমি এফডিসিতে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম আর পত্রিকায় চোখ বুলাচ্ছিলাম, হঠাৎ দেখি একটি মেয়ের ছবি। দেখে মনে হলো একে দিয়ে ছবিতে কাজ করানো যায়। কিন্তু মেয়ের ঠিকানা তো জানি না। সেই সময় বিনোদনে কাজ করতো এখনকার নির্মাতা মুশফিকুর রহমান গুলজার। তাকে বললাম মেয়েটার ঠিকানা যোগার করতে। সাক্ষাৎকার নিবে বলে গুলজার মেয়েটার সাথে দেখা করার ব্যবস্থা করলো। নির্মাতা পরিচয় গোপন রেখে মেয়েটার সাথে দেখা করলাম। সামনাসামনি দেখে ও কথা বলে মেয়েটাকে আরো পছন্দ হলো। এরপরে কীভাবে যেন তার পরিবারের সাথে একটা দুর্দান্ত সম্পর্ক হয়ে গেলো। সম্পর্ক সহজ হলে তাকে সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব করলাম। কিন্তু কিছুতেই রাজি হলো না। হঠাৎ একদিন রাত তিনটার দিকে ল্যান্ডফোনে কল করে আমাকে বললো,‘সোহান ভাই, আমি সিনেমা করতে চাই।’

এরপরের ইতিহাসতো সবারই জানা। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ এর পর সবার প্রিয় অভিনেত্রীতে পরিণত হন মৌসুমী। ‘প্রিয়দর্শিনী’ শব্দটি উচ্চারিত হতেই কল্পনায় এখন তার ছবি ভেসে উঠে!

‘খায়রুন সুন্দরী’ খ্যাত নায়িকা মৌসুমী একাধারে অভিনেত্রী, রাবেয়া খাতুনের লেখা ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ ও ‘মেহের নেগার’ চলচ্চিত্র’র পরিচালক।

তার ভিনীত ছবির মধ্যে কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছাড়াও স্নেহ, ভাংচুর, দেনমোহর, বিদ্রোহী বধু, গরীবের রানি, আত্মত্যাগ, মেঘলা আকাশ, বিন্দুর ছেলে, দেবদাস উল্লেখযোগ্য। অভিনয় এর জন্য তিনি তিনবার রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

পত্রিকার পাতা থেকে যেভাবে সিনেমার পর্দায় মৌসুমী

আপডেট টাইম : ০৫:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫

প্রিয়দর্শিনী মৌসুমীর জন্মদিন সোমবার (৩ নভেম্বর)। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন এ নায়িকা! দেশের বিভিন্ন এলাকায় এ নায়িকার ভক্তরা নিজেদের মতো জন্মদিনের কেট কাটছেন। ভক্তদের এই ভালোবাসা ছুঁয়ে যাচ্ছে মৌসুমীর হৃদয়।

জন্মদিনের দুপুরে প্রায় প্রতিবারই চ্যানেল আইয়ে উপস্থিত হয়ে কেক কাটেন মৌসুমী। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সন্তানদের সাথে দেশের বাইরে আছেন তিনি। সরাসরি না থাকলেও চ্যানেল আইয়ে তাকে নিয়ে এদিন প্রচারিত হয় বিশেষ অনুষ্ঠান।

নব্বই দশকের গোড়ায় ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ এর মাধ্যমে সিনেমায় তার অভিষেক হয়। সালমান শাহ’র বিপরীতে অভিনয় করে মুগ্ধতা ছড়ান মৌসুমী। সিনেমাটি মুক্তির পর তুমুল হিট হয়, সেইসঙ্গে ঢাকাই সিনেমায় এই এক ছবি দিয়েই নিজের দৃঢ় অবস্থান তৈরী করেন মৌসুমী।

অথচ প্রথমে মৌসুমী ই নাকি চাননি সিনেমায় আসতে! হ্যাঁ, মৌসুমীকে চলচ্চিত্রে আনতে বহু কাঠখড় পুড়িয়েছেন প্রয়াত নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান। অতীত দিনের কথা স্মরণ করে বছর চারেক আগে মৌসুমীর জন্মদিনের এক অনুষ্ঠানে চ্যানেল আইয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুলেছিলেন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ এর নির্মাতা সোহান।

জানিয়ে ছিলেন, মৌসুমীকে প্রথম আবিষ্কার করি পত্রিকার পাতায়। ‘দৈনিক বাংলা’ নামে তখন একটি পত্রিকা ছিলো, আমি এফডিসিতে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম আর পত্রিকায় চোখ বুলাচ্ছিলাম, হঠাৎ দেখি একটি মেয়ের ছবি। দেখে মনে হলো একে দিয়ে ছবিতে কাজ করানো যায়। কিন্তু মেয়ের ঠিকানা তো জানি না। সেই সময় বিনোদনে কাজ করতো এখনকার নির্মাতা মুশফিকুর রহমান গুলজার। তাকে বললাম মেয়েটার ঠিকানা যোগার করতে। সাক্ষাৎকার নিবে বলে গুলজার মেয়েটার সাথে দেখা করার ব্যবস্থা করলো। নির্মাতা পরিচয় গোপন রেখে মেয়েটার সাথে দেখা করলাম। সামনাসামনি দেখে ও কথা বলে মেয়েটাকে আরো পছন্দ হলো। এরপরে কীভাবে যেন তার পরিবারের সাথে একটা দুর্দান্ত সম্পর্ক হয়ে গেলো। সম্পর্ক সহজ হলে তাকে সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব করলাম। কিন্তু কিছুতেই রাজি হলো না। হঠাৎ একদিন রাত তিনটার দিকে ল্যান্ডফোনে কল করে আমাকে বললো,‘সোহান ভাই, আমি সিনেমা করতে চাই।’

এরপরের ইতিহাসতো সবারই জানা। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ এর পর সবার প্রিয় অভিনেত্রীতে পরিণত হন মৌসুমী। ‘প্রিয়দর্শিনী’ শব্দটি উচ্চারিত হতেই কল্পনায় এখন তার ছবি ভেসে উঠে!

‘খায়রুন সুন্দরী’ খ্যাত নায়িকা মৌসুমী একাধারে অভিনেত্রী, রাবেয়া খাতুনের লেখা ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ ও ‘মেহের নেগার’ চলচ্চিত্র’র পরিচালক।

তার ভিনীত ছবির মধ্যে কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছাড়াও স্নেহ, ভাংচুর, দেনমোহর, বিদ্রোহী বধু, গরীবের রানি, আত্মত্যাগ, মেঘলা আকাশ, বিন্দুর ছেলে, দেবদাস উল্লেখযোগ্য। অভিনয় এর জন্য তিনি তিনবার রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন।