ধরুন রিকশায় করে ভরদুপুরে কোথাও যাচ্ছেন। ভ্যাপসা গরম, এক ফোঁটা বাতাস নেই, আর্দ্রতা অসহনীয়। আপনার রিকশাচালক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলেন রাস্তায়। মুখ দিয়ে ফেনা বেরোতে লাগল, একেবারে অচেতন।
এ রকম আবহাওয়ায় অনেকক্ষণ প্রচণ্ড রোদে রিকশা চালাতে গিয়ে খুব সম্ভবত আপনার রিকশাওয়ালার হিটস্ট্রোক হয়ে থাকতে পারে। এমন মুহূর্তে আপনার কী করা উচিত? লোকজনের সহায়তায় মানুষটাকে ধরাধরি করে কাছে কোথাও একটু শীতল জায়গায় নিন, গাছের নিচে বা কোনো দোকানের ভেতরে ফ্যানের বাতাসের নিচে। জামাকাপড় খুলে দিন বা ঢিলে করে দিন। ঠান্ডা পানিতে বা বরফে ভেজা কাপড় দিয়ে বারবার গা মুছে দিন বা শরীরে পানি স্প্রে করুন এবং শিগগির হাসপাতালে স্থানান্তর করুন।
আবার ভাবুন, সারা দিন নানা কাজে রোদের মধ্যেই ঘুরেছেন। আচমকা আপনার পেটে ও পা দুটোয় যেন টান লাগল বা কেউ খামচে ধরল। এই সমস্যার নাম হিট ক্র্যাম্প। শরীরে পানি ও লবণের অভাবে এমনটা ঘটে। এমন অবস্থায় দ্রুত গরম ও রোদ থেকে সরে যান। তুলনামূলক ঠান্ডা জায়গায় বসে পড়ুন। প্রচুর পানি ও লবণসমৃদ্ধ তরল (যেমন: ডাবের পানি, লেবু-লবণের শরবত) পান করুন। পরিশ্রম থেকে বিরত থাকুন। খুব ধীরে মাংসপেশি নাড়াচাড়া এবং পায়ের হালকা ব্যায়াম করুন।
আরেকটা সমস্যা হতে পারে। সারা দিন রোদে গরমে ঘুরে দেখলেন সারা শরীরের উন্মুক্ত ত্বক লালচে হয়ে গেছে বা পুড়ে গেছে। লাল ফুসকুড়ি বা র্যাশ দেখা দিতে পারে। কখনো চুলকায়। ব্যাপারটার নাম হিট র্যাশ। এ সমস্যা সমাধানের জন্য ত্বকে ঠান্ডা বরফ বা ভেজা কাপড় লাগান।
এখনকার তীব্র গরমে যে কেউ এমন আকস্মিক জটিলতায় পড়তে পারেন, বিশেষত শিশু, বৃদ্ধ, স্থূল ব্যক্তি, কারখানার শ্রমিক বা কৃষক, স্নায়ুরোগীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। সুস্থতার জন্য তাঁরা প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল পান করবেন। ডাবের পানি ও ওরস্যালাইন বেশ কাজে দেয়। হালকা রঙের সুতি জামাকাপড় পরবেন। বাইরে বেরোলে ছাতা, সানগ্লাস বা হ্যাট ব্যবহার করুন। বাইরে থেকে ঘরে ফিরে আগে শরীরটা বাতাসে জুড়িয়ে নিন, তারপর গোসল করবেন। বেশি রোদে ও গরমে বাইরে ব্যায়াম বা খেলাধুলা করবেন না। প্রচণ্ড গরমে বাসের মতো বদ্ধ পরিবেশে হাঁসফাঁস করলে নেমে পড়ুন।