ঢাকা , রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামের কৃষকদের রোগবালাই ও পোকার আক্রমণে দুঃশ্চিন্তায়

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ পর পর দু’দফা বন্যার পরও চলতি মৌসুমে কুড়িগ্রামে আমনের ভালো ফলন হয়েছে। বিগত ৫ বছরের তুলনায় জেলায় এ বছর বেশী জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। তবে আমন ক্ষেতে রোগ বালাই ও পোকার আক্রমণে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। কীট নাশক প্রয়োগ, প্রাকৃতিক উপায়ে পোকা ও রোগ বালাই দমনের চেষ্টা করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে চলতি মৌসুমে কুড়িগ্রাম জেলায় আমনের আবাদ হয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ১শ’ ৭৭ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর বেশি। পর পর দু’দফা বন্যায় জেলার ৫০ হাজার হেক্টর জমির আমান ক্ষেত সম্পুর্ণরুপে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও আমান লাগানোর সময় থাকায় পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে চারা সংগ্রহ করে ক্ষতিগ্রস্থ জমিতে চারা রোপন করে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ব্রি- ২৮, ৩৪, ১১ ও হাইব্রীড জাতের ধানের ভালো ফলন হয়েছে। তবে কিছু জমিতে মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা ও গোড়া পঁচা রোগ দেখা দেওয়ায় দুঃচিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
রাজারহাট উপজেলার নেফার দরগা এলাকার কৃষক আব্দুল জলিল জানান, তার একটি আমন ক্ষেতে ধান গাছের পাতা লাল হয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ মোতাবেক বিভিন্ন কীটনাশক ও পচন রোধক ঔষধ স্প্রে করার পরও প্রতিকার পাচ্ছি না এমনকি ধানের এ রোগটাও চিনতে পারি না। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এ বছর বাড়তি খরচে ধান আবাদ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা। আমনের ফলন ভাল হলেও ক্ষেতের নানান রোগ বালাই এখন কৃষকের দুঃশ্চিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছে।
উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর এলাকার কৃষক রহিমুদ্দিন জানান, আবাদ ভালো হয়েছে। তবে পাশ্ববর্তী কিছু জমিতে মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো রোগ দেখা দেওয়ায় জমিতে পোকা ও রোগ নাশক ঔষধ স্প্রে করছি। শেষ পর্যন্ত আমন ক্ষেত যদি কোন পোকা মাকড় বা রোগ মুক্ত রাখতে পারি তাহলে ভালো ফলনের আশা করছি। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, পোকা ও রোগ দমনে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে কীটনাশক স্প্রে করে তা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মকবুল হোসেন জানান, বিগত ৫ বছরের তুলনায় এ বছর ৩০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আমানের চাষ হয়েছে। আমান ক্ষেতে সামান্য রোগ বালাই দেখা দিলেও তা নিষন্ত্রনে কৃষি বিভাগ থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি উৎপাদনে এর কোন প্রভাব পড়বে না। আমন ক্ষেতে পোকা ও রোগ বালাই দমনে কৃষি বিভাগ কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারলে খাদ্যে উদ্বৃত্ত এ জেলায় বাম্পার ফলন হবে ধানের, কৃষকরা পুষিয়ে নিতে পারবে বন্যার ক্ষতি এমনটাই আশা এখানকার কৃষকের।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

কুড়িগ্রামের কৃষকদের রোগবালাই ও পোকার আক্রমণে দুঃশ্চিন্তায়

আপডেট টাইম : ০৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ পর পর দু’দফা বন্যার পরও চলতি মৌসুমে কুড়িগ্রামে আমনের ভালো ফলন হয়েছে। বিগত ৫ বছরের তুলনায় জেলায় এ বছর বেশী জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। তবে আমন ক্ষেতে রোগ বালাই ও পোকার আক্রমণে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। কীট নাশক প্রয়োগ, প্রাকৃতিক উপায়ে পোকা ও রোগ বালাই দমনের চেষ্টা করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে চলতি মৌসুমে কুড়িগ্রাম জেলায় আমনের আবাদ হয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ১শ’ ৭৭ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর বেশি। পর পর দু’দফা বন্যায় জেলার ৫০ হাজার হেক্টর জমির আমান ক্ষেত সম্পুর্ণরুপে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও আমান লাগানোর সময় থাকায় পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে চারা সংগ্রহ করে ক্ষতিগ্রস্থ জমিতে চারা রোপন করে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ব্রি- ২৮, ৩৪, ১১ ও হাইব্রীড জাতের ধানের ভালো ফলন হয়েছে। তবে কিছু জমিতে মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা ও গোড়া পঁচা রোগ দেখা দেওয়ায় দুঃচিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
রাজারহাট উপজেলার নেফার দরগা এলাকার কৃষক আব্দুল জলিল জানান, তার একটি আমন ক্ষেতে ধান গাছের পাতা লাল হয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ মোতাবেক বিভিন্ন কীটনাশক ও পচন রোধক ঔষধ স্প্রে করার পরও প্রতিকার পাচ্ছি না এমনকি ধানের এ রোগটাও চিনতে পারি না। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এ বছর বাড়তি খরচে ধান আবাদ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা। আমনের ফলন ভাল হলেও ক্ষেতের নানান রোগ বালাই এখন কৃষকের দুঃশ্চিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছে।
উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর এলাকার কৃষক রহিমুদ্দিন জানান, আবাদ ভালো হয়েছে। তবে পাশ্ববর্তী কিছু জমিতে মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো রোগ দেখা দেওয়ায় জমিতে পোকা ও রোগ নাশক ঔষধ স্প্রে করছি। শেষ পর্যন্ত আমন ক্ষেত যদি কোন পোকা মাকড় বা রোগ মুক্ত রাখতে পারি তাহলে ভালো ফলনের আশা করছি। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, পোকা ও রোগ দমনে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে কীটনাশক স্প্রে করে তা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মকবুল হোসেন জানান, বিগত ৫ বছরের তুলনায় এ বছর ৩০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আমানের চাষ হয়েছে। আমান ক্ষেতে সামান্য রোগ বালাই দেখা দিলেও তা নিষন্ত্রনে কৃষি বিভাগ থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি উৎপাদনে এর কোন প্রভাব পড়বে না। আমন ক্ষেতে পোকা ও রোগ বালাই দমনে কৃষি বিভাগ কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারলে খাদ্যে উদ্বৃত্ত এ জেলায় বাম্পার ফলন হবে ধানের, কৃষকরা পুষিয়ে নিতে পারবে বন্যার ক্ষতি এমনটাই আশা এখানকার কৃষকের।