বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ কোটি বছর আগে সাগরের পানির তাপমাত্রা নির্ণয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণায় ত্রুটি রয়েছে বলে নতুন এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে। ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা এই গবেষণা প্রতিবেদনে বলেছেন, ওই ত্রুটির কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার নির্ণয়েও এত দিন গবেষকেরা খানিকটা ভুল পথে হেঁটেছেন।
ফ্রান্সের ফ্রেঞ্চ সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চ (সিএনআরএস) ও সরবোন বিশ্ববিদ্যালয় এবং সুইজারল্যান্ডের স্ট্রাসবোর্গ বিশ্ববিদ্যালয়, সুইস ফেডারেল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ইন লুজান (ইপিএফএল) ও লুজান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা নতুন গবেষণাটি করেছেন। যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচার কমিউনিকেশন গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেরু অঞ্চলের সাগরের পানির শীতলতা নিয়ে বর্তমান প্রচলিত ধারণাটি আসলে ভুল। এই পানি আরও শীতল ছিল। এর অর্থ, বৈশ্বিক তাপমাত্রা আসলে ধারণার চেয়েও বেশি গতিতে বাড়ছে।
বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত মনে করেন, মেরু অঞ্চলে সাগরের পানি ১০ কোটি বছর আগে বর্তমানের চেয়ে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি উষ্ণ ছিল।
সুইস ফেডারেল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বায়োলজিক্যাল জিওকেমিস্ট্রি ল্যাবরেটরির প্রধান এবং লুজান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আন্দার্স মেইবম বলেন, ‘আমরা সঠিক হয়ে থাকলে আমাদের এই গবেষণা অতীত সময়ের জলবায়ু নিয়ে হওয়া কয়েক দশকের গবেষণাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করবে।’
গবেষকেরা এত দিন সাগরের কোটি বছর আগের তাপমাত্রা নির্ণয়ে ফোরামিনিফেরা নামে খুব ছোট ছোট সামুদ্রিক জীবের জীবাশ্ম নিয়ে গবেষণা করেছেন। সাগরের পানির উষ্ণতায় পরিবর্তন ঘটলেই এসব জীব শরীরের চারপাশে একধরনের শক্ত খোলস তৈরি করত এবং তারপর থেকে অক্সিজেন গ্রহণ নিয়ন্ত্রণ করত। এসব জীবাশ্মে অক্সিজেন উপাদান পরীক্ষা করে গবেষকেরা ওই সময়কার তাপমাত্রা নির্ণয় করেন।
তবে সাম্প্রতিক গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এত দিন এই গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় নজর এড়িয়ে গেছে। ফোরামিনিফেরা নামের ওই সামুদ্রিক জীবগুলোর খোলসে থাকা অক্সিজেন উপাদানের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে একই থাকেনি। কোনো প্রমাণ না রেখেই এগুলোয় পরিবর্তন আসতে পারে।