ঢাকা , শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিশ্র ফল চাষে ভাগ্য বদল কৃষকের

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বাড়ির আঙিনা ও বাগানে মিশ্র ফল চাষে ভাগ্য বদল হয়েছে শেরপুরের নকলা উপজেলার অন্তত ৫০০ চাষির। তাদের সংসারে এসেছে সচ্ছলতা। মিটছে পুষ্টির চাহিদা। আর এর পেছনের মানুষটি হচ্ছেন বানেশ্বরদী ইউনিয়নের পশ্চিম আড়িয়াকান্দা গ্রামের কলেজছাত্র অমিত মিয়া। এলাকার ফল চাষিদের কাছে তিনি অনুকরণীয়। তিনি সাইফুল ইসলামের ছেলে এবং হাজী জালমামুদ কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
নিজ বাগানে অমিত মিয়া জানান, ২০১৩ সালে সে যখন নবম শ্রেণীর ছাত্র, তখন স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তার বাড়ির আঙিনায় পতিত জমিতে ১০০টি চায়না থ্রি ও ১০টি মঙ্গলবারি লিচুর কলম চারা রোপণ করেন। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে কয়েকটি লিচুগাছে ফুল আসে। তবে পুরনো লিচু বাগান মালিকের পরামর্শে তা ভেঙে দেন তিনি। তার পরের বছর অনেক গাছে ফুল আসায় তা ফলনের জন্য রেখে দেন। ওই বছরই অর্ধলক্ষাধিক টাকার লিচু বিক্রি করেন তিনি। পাশাপাশি লিচুগাছের মাঝখানে একটি করে অন্য জাতের ফলের গাছ রোপণ করেন। প্রধান ফল লিচু ছাড়াও তার বাগানে বেল, শ্রীফল, আর্মবালী, পেয়ারা, পেঁপে, কলা, বড়ই, লেবু, বারমাসি সজিনাসহ বিভিন্ন ফল এবং গাছের ফাঁকে কালাই, শাকসবজি ও মশলা চাষ করেন। এতে প্রায় লাখ টাকা বাড়তি আয় হয়। সবকটি লিচুগাছে ফল আসা শুরু হলে এক একর মিশ্র ফলের বাগানে বছরে সাড়ে ৬ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন। পোলাদেশী গ্রামের জসিম উদ্দিন মাস্টার, ফারুক, হাকলিজুর, এএসএমবি করিম ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম; ভুরদী গ্রামের এসএম মনিরুজ্জামান, হেলাল, ঈসমাইল, কবির, রনি ও গফুর; পূর্ব আড়িয়াকান্দার মোকসেদুল; পাঁঠাকাটা এলাকার নাজমুল ও আব্বাস; বাউসার পারুল বেগম; রামপুরের সাদির, চাঁনু, লাল মিয়া, লিয়াকত ও শরিফ; ধুকুড়িয়ার মুক্তার, উক্কা, রোস্তম, তাহের ও বারেক; কবুতরমারির রফিক, কাশেম ও আক্কাস আলী, আলগার সাজু সাঈদ সিদ্দিকী, মোকসেদ ও রফিকুল ইসলাম এ এলাকায় ফল চাষ করছেন। উপজেলায় সরকারি প্রণোদনায় কমপক্ষে ৭০ থেকে ৭৫ এবং নিজস্ব অর্থায়নে ছোট বড় আরও চার শতাধিক মিশ্র ফল বাগান করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবদুল ওয়াদুদ এ বিষয়ে বলেন, নকলার মাটি মিশ্র ফল বাগানের উপযোগী। প্রতি বছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মিশ্র ফল বাগান গড়ে উঠছে। আরেক কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর জানান, একের পর এক মিশ্র ফলের বাগান হচ্ছে। আধুনিক পদ্ধতিতে মিশ্র ফলের বাগান করতে কৃষককে পরামর্শ ও উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

মিশ্র ফল চাষে ভাগ্য বদল কৃষকের

আপডেট টাইম : ১২:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বাড়ির আঙিনা ও বাগানে মিশ্র ফল চাষে ভাগ্য বদল হয়েছে শেরপুরের নকলা উপজেলার অন্তত ৫০০ চাষির। তাদের সংসারে এসেছে সচ্ছলতা। মিটছে পুষ্টির চাহিদা। আর এর পেছনের মানুষটি হচ্ছেন বানেশ্বরদী ইউনিয়নের পশ্চিম আড়িয়াকান্দা গ্রামের কলেজছাত্র অমিত মিয়া। এলাকার ফল চাষিদের কাছে তিনি অনুকরণীয়। তিনি সাইফুল ইসলামের ছেলে এবং হাজী জালমামুদ কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
নিজ বাগানে অমিত মিয়া জানান, ২০১৩ সালে সে যখন নবম শ্রেণীর ছাত্র, তখন স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তার বাড়ির আঙিনায় পতিত জমিতে ১০০টি চায়না থ্রি ও ১০টি মঙ্গলবারি লিচুর কলম চারা রোপণ করেন। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে কয়েকটি লিচুগাছে ফুল আসে। তবে পুরনো লিচু বাগান মালিকের পরামর্শে তা ভেঙে দেন তিনি। তার পরের বছর অনেক গাছে ফুল আসায় তা ফলনের জন্য রেখে দেন। ওই বছরই অর্ধলক্ষাধিক টাকার লিচু বিক্রি করেন তিনি। পাশাপাশি লিচুগাছের মাঝখানে একটি করে অন্য জাতের ফলের গাছ রোপণ করেন। প্রধান ফল লিচু ছাড়াও তার বাগানে বেল, শ্রীফল, আর্মবালী, পেয়ারা, পেঁপে, কলা, বড়ই, লেবু, বারমাসি সজিনাসহ বিভিন্ন ফল এবং গাছের ফাঁকে কালাই, শাকসবজি ও মশলা চাষ করেন। এতে প্রায় লাখ টাকা বাড়তি আয় হয়। সবকটি লিচুগাছে ফল আসা শুরু হলে এক একর মিশ্র ফলের বাগানে বছরে সাড়ে ৬ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন। পোলাদেশী গ্রামের জসিম উদ্দিন মাস্টার, ফারুক, হাকলিজুর, এএসএমবি করিম ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম; ভুরদী গ্রামের এসএম মনিরুজ্জামান, হেলাল, ঈসমাইল, কবির, রনি ও গফুর; পূর্ব আড়িয়াকান্দার মোকসেদুল; পাঁঠাকাটা এলাকার নাজমুল ও আব্বাস; বাউসার পারুল বেগম; রামপুরের সাদির, চাঁনু, লাল মিয়া, লিয়াকত ও শরিফ; ধুকুড়িয়ার মুক্তার, উক্কা, রোস্তম, তাহের ও বারেক; কবুতরমারির রফিক, কাশেম ও আক্কাস আলী, আলগার সাজু সাঈদ সিদ্দিকী, মোকসেদ ও রফিকুল ইসলাম এ এলাকায় ফল চাষ করছেন। উপজেলায় সরকারি প্রণোদনায় কমপক্ষে ৭০ থেকে ৭৫ এবং নিজস্ব অর্থায়নে ছোট বড় আরও চার শতাধিক মিশ্র ফল বাগান করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবদুল ওয়াদুদ এ বিষয়ে বলেন, নকলার মাটি মিশ্র ফল বাগানের উপযোগী। প্রতি বছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মিশ্র ফল বাগান গড়ে উঠছে। আরেক কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর জানান, একের পর এক মিশ্র ফলের বাগান হচ্ছে। আধুনিক পদ্ধতিতে মিশ্র ফলের বাগান করতে কৃষককে পরামর্শ ও উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।