বাজারে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দামই আকাশছোঁয়া। দুঃখজনক হলো, অব্যাহত মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তাদের যখন দম বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তখন ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট অতিরিক্ত মুনাফা করে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে চলেছে
শনিবার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ, পনেরো রোজার পর দাম কিছুটা কমালেও এবার ঈদ পণ্যের ওপর সিন্ডিকেট থাবা বসিয়েছে। কারসাজি করে দাম বাড়ানোয় খুচরা বাজারে পোলাও চাল, ঘি ও মুগডাল এখন থেকেই বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাশাপাশি দুধ, চিনি, সেমাই ও কিশমিশের দামও বাড়তি। সঙ্গে মসলা পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে বরাবরের মতো এবারও ঈদ ঘিরে পণ্য কিনে ঠকছেন ভোক্তা। সাধারণত এক মাস রোজা রাখার পর ঈদে সব শ্রেণির মানুষ আনন্দে মেতে ওঠে। নতুন পোশাকের সঙ্গে সামর্থ্যমতো ঘরে ভালো খাবারেরও আয়োজন করা হয়। এতে বাজারে যে বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়, তাকে পুঁজি করে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী অতি মুনাফা করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। ক্রেতার পকেট কাটতে বাড়ায় পণ্যের দাম। প্রতি বছরের মতো এবারও বাজারে সেই একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
কয়েক বছর ধরেই লক্ষ করা যাচ্ছে, ঈদ এলেই এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছামতো পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এটা যেন প্রথায় পরিণত হয়েছে। নিত্যপণ্যের উৎপাদন, সরবরাহ, পাইকারি ও খুচরা বাজারে বিক্রিতে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। রাজধানীর খুচরা বাজারে খাদ্যপণ্যের কোনো ধরনের সংকটও নেই, বরং চাহিদার তুলনায় সব ধরনের পণ্যের বেশি মজুত দেখা যায়। পাইকারি বাজারগুলোতেও পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। তাহলে বলতেই হবে সংকটটি কৃত্রিম।
লক্ষ করা যায়, ঈদের আগে নিত্যপণ্যের দাম যা বাড়ানো হয়, পরে তা আর কমানো হয় না। তাই আমরা বলব, বাজারের নিয়ন্ত্রণ যাতে দুষ্টচক্রের হাতে চলে না যায়, সেজন্য কঠোর মনিটরিং দরকার। সিয়াম সাধনার মাসে ঈদকে সামনে রেখে পণ্যের দাম বাড়ানো শুধু অযৌক্তিকই নয়, অনৈতিকও বটে। প্রশ্ন হচ্ছে, নীতি-নৈতিকতাহীন ব্যবসায়ীরা আর কতকাল ভোক্তাসাধারণের সঙ্গে এমন প্রতারণা চালিয়ে যাবে? আমরা মনে করি, ঈদপণ্যের অযৌক্তিক দামের বিষয়টি তদারকি সংস্থার খতিয়ে দেখা উচিত। সরকার অবিলম্বে ঈদপণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, এটাই প্রত্যাশা।