জিরার পাশাপাশি দেশি পেঁয়াজ, দেশি রসুন, শুকনা মরিচ, হলুদসহ কয়েকটি মসলার দামও কমেছে।
রাজধানীর বড় দুই পাইকারি মসলার বাজার মৌলভীবাজার ও কারওয়ান বাজারে এখন মানভেদে প্রতি কেজি জিরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, এলাচ মানভেদে দুই হাজার ২০০ থেকে তিন হাজার, দারচিনি ৪০০ থেকে ৪৫০, লবঙ্গ এক হাজার ৩৫০ এবং গোলমরিচ ৭৫০ থেকে ৭৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বাজার রামপুরা, বাড্ডা, জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি জিরা ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাড্ডার ইত্যাদি মসল্লা বিতানের মালিক আ. হালিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত ঈদে এক হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হওয়া জিরার দাম কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা
বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন মসলার দাম কমার কারণে দেশের বাজারেও কমে গেছে। গত ছয় থেকে সাত মাসের ব্যবধানে জিরার দাম অর্ধেকে নেমেছে।
বড় হচ্ছে প্যাকেটজাত গুঁড়া মসলার বাজার
মানুষের জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চাহিদা বাড়ছে প্যাকেটজাত মসলার। বড় হচ্ছে প্যাকেটজাত মসলার বাজারও। একটা সময়ে গ্রামাঞ্চলে মেশিনে হলুদ, মরিচ গুঁড়া করা হলেও এখন শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও প্যাকেটজাত গুঁড়া মসলার একটা কদর তৈরি হয়েছে।
গুঁড়া মসলার বাজারে পরিচিত ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে স্কয়ারের ‘রাঁধুনি’, প্রাণ গুঁড়া মসলা, বসুন্ধরা গুঁড়া মসলা, এসিআই পিউর, একমি, বিডি, ফ্রেশ প্রভৃতি। প্রতিষ্ঠানগুলো মরিচ, হলুদ, জিরা, ধনে, গরম মসলা, গরু ও মুরগির মাংসের মসলা, মাছের মসলা, ফুচকা-চটপটির মসলা, বিরিয়ানির মসলা, হালিম মিক্সসহ নানা পদের মিক্সড মসলা বিক্রি করছে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা বাজারে প্লেইন ও মিক্সড—এ দুই ধরনের মসলা সরবরাহ করছি। পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানিও করছি। গত এক বছরে দেশে প্যাকেটজাত মসলার দাম ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ থেকে ১০ শতাংশ।’
জানতে চাইলে বসুন্ধরা ফুডের বিভাগীয় প্রধান (বিক্রয় ও বিতরণ) রেদোয়ানুর রহমান বলেন, ‘মানুষ খোলা মসলার প্রতি আস্থা হারাচ্ছে, যার কারণে প্যাকেটজাত মসলার চাহিদা বাড়ছে। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে যেভাবে প্যাকেটজাত মসলার চাহিদা বাড়ার কথা ছিল, সেই হারে বাড়ছে না। মসলা খাওয়ার পরিমাণও আগের তুলনায় অনেকে কমিয়েছেন।’ তিনি জানান, বসুন্ধরা গুঁড়া মসলা দেশের বাজারে সরবরাহের পাশাপাশি ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
হিলিতে আমদানি বাড়ায় জিরার দাম নামল অর্ধেকে
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি বেড়েছে মসলাজাতীয় পণ্যের। তিন মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি জিরার দাম কমল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে বাংলাহিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মসলার দোকানগুলোতে বিভিন্ন ব্রান্ডের জিরার প্যাকেট সাজানো। ভারতীয় আমদানীকৃত কাকা জিরা ৬০০ টাকা, বাবা জিরা ৬২০ টাকা, মধু জিরা ৬২০ টাকা, অমৃত জিরা ৬০০ টাকা, সোনা জিরা ৬৩০ টাকা ও ডিবি গোল্ড জিরা ৬৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তিন মাস আগেও খুচরা পর্যায়ে মানভেদে যে ভারতীয় জিরা প্রতি কেজি এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় দরে বিক্রি হয়েছে, দাম কমে এখন তা ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিসিমিল্লাহ মসলা ঘরের আব্দুল আউয়াল সবুজ জানান, চলতি মৌসুমে ভারতে জিরার ফলন অনেক ভালো হয়েছে। হিলি বন্দর দিয়ে ব্যাপক আমদানি বেড়েছে। এর ফলে গত তিন মাসে পর্যায়ক্রমে জিরার দাম কমেছে কেজিপ্রতি ৫৫০ টাকা।