ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চড়া মুরগির সঙ্গে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম, ২০০ টাকার নিচে মরিচ

দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় বাজারে দুই সপ্তাহ ধরে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মানভেদে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। বাড়তির দিকে মুরগি, ডিম ও আলুর দামও। তবে কাঁচা মরিচের দাম নেমেছে ২০০ টাকার নিচে।

কমেছে অন্যান্য সবজির দামও।গতকাল শনিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও কল্যাণপুর নতুন বাজারে, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১২৫-১৪০ ও আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহ দুই আগে দেশি পেঁয়াজ ১১৫-১২৫ ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা ছিল।

বিক্রেতারা জানান, বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে।

মৌসুম শেষে কৃষকের ঘরে এখন পেঁয়াজের মজুত কম। আবার অতিবৃষ্টির কারণে নতুন পেঁয়াজ বপনে দেরি হচ্ছে। অন্যদিকে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও কিছুটা বাড়তি। এসব কারণে বাজারে এখন পেঁয়াজের দাম বেশি।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গত এক মাসে দেশি পেঁয়াজের দাম সর্বোচ্চ ১৭ শতাংশ ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ১০ শতাংশ বেড়েছে।

পেঁয়াজের অন্যতম উৎপাদনস্থল পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা চতুরহাটের আড়তদার আবদুল মুন্নাফ বলেন, মাত্র এক  দিনের ব্যবধানে গতকাল দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতি মণে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বেড়েছে। এর কারণ, কৃষকের ঘরে এখন খাওয়ার পেঁয়াজ একেবারেই কম। যে পেঁয়াজ রয়েছে, তার বেশির ভাগই বেছন বা বীজ পেঁয়াজ।

অন্যদিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতা সজীব শেখ জানান, গতকাল পাইকারিতে দেশি পেঁয়াজ ১৩০-১৪০ ও আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।

মৌসুম শেষ হওয়ায় বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ার সম্ভাবনা নেই। এখন আমদানি করা পেঁয়াজ বেশি না এলে দাম আরো বাড়তে পারে।চড়া মুরগির দাম

ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি মাসখানেক ধরেই বাজারে উচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে বেশি বেড়েছে সোনালি মুরগির দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি এখন ১৯০-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেড় মাস আগে তা ২০-৩০ টাকা কমে পাওয়া যেত। অন্যদিকে গতকাল সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩০০-৩২০ টাকায়, যা দেড় মাস আগে ২৫০-২৬০ টাকা ছিল।

এদিকে ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি শুল্ক কমানোসহ বাজারে পণ্যটির সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। এতে দাম কমে ডজন ১৪৫-১৫০ টাকায় নামে। তবে গত কয়েক দিনে এর দাম কিছুটা বেড়েছে। গতকাল ঢাকার বিভিন্ন বাজারে এক ডজন ডিম ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বেঁধে দেওয়া দাম অনুসারে খুচরা পর্যায়ে এক ডজন ডিম ১৪৩ টাকা, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৭০ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। বাজারে চালের দামও ঊর্ধ্বমুখী। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে মোটা ও মাঝারি চালের দাম কেজিতে ২-৪ টাকা বেড়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি এখন ১৯০-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেড় মাস আগে তা ২০-৩০ টাকা কমে পাওয়া যেত। অন্যদিকে গতকাল সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩০০-৩২০ টাকায়, যা দেড় মাস আগে ২৫০-২৬০ টাকা ছিল।

দাম কমেছে কাঁচা মরিচ-সবজির

সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে প্রায় ১০০ টাকা কমেছে। গতকাল ঢাকায় বাজারভেদে এক কেজি মরিচ ১৬০-১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ২৫০-৩০০ টাকা ছিল। অবশ্য চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে মরিচের দাম আরো বেশি ছিল, তখন খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা দরেও মরিচ বিক্রি হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে দেশি মরিচের সরবরাহ কম। তবে ভারত থেকে আমদানি বাড়ায় দাম কমেছে।

সরবরাহ বাড়ায় বেশির ভাগ সবজির দাম কমেছে। যেমন এক সপ্তাহ আগে ঢাকার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স, পটোল, মুলা, ধুন্দুল, চিচিঙ্গা ও ঝিঙে ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। গতকাল এসব সবজি ৫০-৮০ টাকায় কেনা গেছে।

একইভাবে গতকাল বেগুন ৮০-১৩০ টাকা, কাঁকরোল ও বরবটি ৮০-১০০ টাকা এবং করলা ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এসব সবজির দাম কেজিতে ২০-৫০ টাকা কমেছে। এ ছাড়া প্রতিটি লাউ ৪০-৫০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। তবে বাজারে বিভিন্ন প্রকার শাকের দাম এখনো চড়া।

বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার বলেন, বর্তমানে বাজারে শীতের সবজি অল্প পরিমাণে আসতে শুরু করেছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে সরবরাহ অনেক বাড়বে। তখন সবজির দাম আরো কমে আসবে।

বিক্রেতারা বলছেন, বছরের এই সময়ে বাজারে শীতের শাকসবজি চলে আসার কথা। তবে বন্যা-বৃষ্টির কারণে তা আসতে দেরি হয়েছে। এ কারণে গত কয়েক দিন সবজির দাম বেশি ছিল।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

চড়া মুরগির সঙ্গে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম, ২০০ টাকার নিচে মরিচ

আপডেট টাইম : ০৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪
দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় বাজারে দুই সপ্তাহ ধরে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মানভেদে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। বাড়তির দিকে মুরগি, ডিম ও আলুর দামও। তবে কাঁচা মরিচের দাম নেমেছে ২০০ টাকার নিচে।

কমেছে অন্যান্য সবজির দামও।গতকাল শনিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও কল্যাণপুর নতুন বাজারে, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১২৫-১৪০ ও আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহ দুই আগে দেশি পেঁয়াজ ১১৫-১২৫ ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা ছিল।

বিক্রেতারা জানান, বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে।

মৌসুম শেষে কৃষকের ঘরে এখন পেঁয়াজের মজুত কম। আবার অতিবৃষ্টির কারণে নতুন পেঁয়াজ বপনে দেরি হচ্ছে। অন্যদিকে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও কিছুটা বাড়তি। এসব কারণে বাজারে এখন পেঁয়াজের দাম বেশি।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গত এক মাসে দেশি পেঁয়াজের দাম সর্বোচ্চ ১৭ শতাংশ ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ১০ শতাংশ বেড়েছে।

পেঁয়াজের অন্যতম উৎপাদনস্থল পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা চতুরহাটের আড়তদার আবদুল মুন্নাফ বলেন, মাত্র এক  দিনের ব্যবধানে গতকাল দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতি মণে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বেড়েছে। এর কারণ, কৃষকের ঘরে এখন খাওয়ার পেঁয়াজ একেবারেই কম। যে পেঁয়াজ রয়েছে, তার বেশির ভাগই বেছন বা বীজ পেঁয়াজ।

অন্যদিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতা সজীব শেখ জানান, গতকাল পাইকারিতে দেশি পেঁয়াজ ১৩০-১৪০ ও আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।

মৌসুম শেষ হওয়ায় বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ার সম্ভাবনা নেই। এখন আমদানি করা পেঁয়াজ বেশি না এলে দাম আরো বাড়তে পারে।চড়া মুরগির দাম

ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি মাসখানেক ধরেই বাজারে উচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে বেশি বেড়েছে সোনালি মুরগির দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি এখন ১৯০-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেড় মাস আগে তা ২০-৩০ টাকা কমে পাওয়া যেত। অন্যদিকে গতকাল সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩০০-৩২০ টাকায়, যা দেড় মাস আগে ২৫০-২৬০ টাকা ছিল।

এদিকে ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি শুল্ক কমানোসহ বাজারে পণ্যটির সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। এতে দাম কমে ডজন ১৪৫-১৫০ টাকায় নামে। তবে গত কয়েক দিনে এর দাম কিছুটা বেড়েছে। গতকাল ঢাকার বিভিন্ন বাজারে এক ডজন ডিম ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বেঁধে দেওয়া দাম অনুসারে খুচরা পর্যায়ে এক ডজন ডিম ১৪৩ টাকা, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৭০ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। বাজারে চালের দামও ঊর্ধ্বমুখী। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে মোটা ও মাঝারি চালের দাম কেজিতে ২-৪ টাকা বেড়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি এখন ১৯০-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেড় মাস আগে তা ২০-৩০ টাকা কমে পাওয়া যেত। অন্যদিকে গতকাল সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩০০-৩২০ টাকায়, যা দেড় মাস আগে ২৫০-২৬০ টাকা ছিল।

দাম কমেছে কাঁচা মরিচ-সবজির

সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে প্রায় ১০০ টাকা কমেছে। গতকাল ঢাকায় বাজারভেদে এক কেজি মরিচ ১৬০-১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ২৫০-৩০০ টাকা ছিল। অবশ্য চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে মরিচের দাম আরো বেশি ছিল, তখন খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা দরেও মরিচ বিক্রি হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে দেশি মরিচের সরবরাহ কম। তবে ভারত থেকে আমদানি বাড়ায় দাম কমেছে।

সরবরাহ বাড়ায় বেশির ভাগ সবজির দাম কমেছে। যেমন এক সপ্তাহ আগে ঢাকার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স, পটোল, মুলা, ধুন্দুল, চিচিঙ্গা ও ঝিঙে ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। গতকাল এসব সবজি ৫০-৮০ টাকায় কেনা গেছে।

একইভাবে গতকাল বেগুন ৮০-১৩০ টাকা, কাঁকরোল ও বরবটি ৮০-১০০ টাকা এবং করলা ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এসব সবজির দাম কেজিতে ২০-৫০ টাকা কমেছে। এ ছাড়া প্রতিটি লাউ ৪০-৫০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। তবে বাজারে বিভিন্ন প্রকার শাকের দাম এখনো চড়া।

বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার বলেন, বর্তমানে বাজারে শীতের সবজি অল্প পরিমাণে আসতে শুরু করেছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে সরবরাহ অনেক বাড়বে। তখন সবজির দাম আরো কমে আসবে।

বিক্রেতারা বলছেন, বছরের এই সময়ে বাজারে শীতের শাকসবজি চলে আসার কথা। তবে বন্যা-বৃষ্টির কারণে তা আসতে দেরি হয়েছে। এ কারণে গত কয়েক দিন সবজির দাম বেশি ছিল।