বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলের শরিকদের আসন বণ্টনের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করেনি জোটের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ। তবে চলতি সপ্তাহে অথবা আগামী ১৭ ডিসেম্বরের আগে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে বলে জানা গেছে। গতকাল রবিবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের কক্ষে এ বিষয়ে বৈঠক হয়েছে।
ওই বৈঠকে ১৪ দলের শরিকরা গত নির্বাচনে যে আসন পেয়েছিলেন অন্তত সেই আসনগুলো চেয়েছেন। ভিন্ন জায়গায় দিলেও আসন সংখ্যা ঠিক রাখার এই প্রস্তাব করেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তারা যেসব আসন পাবেন সেখান থেকে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সরিয়ে নেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছেন। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করে আগামী কিছুদিনের মধ্যে জানাবেন বলে শরিক দলের নেতাদের জানিয়ে দেন।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু এবং দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।
১৪ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে ছিলেন জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন ও গণআজাদী লীগের সভাপতি এসকে শিকদার।
বৈঠক শেষে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আসন বণ্টন চূড়ান্ত হয়নি। আমরা বলেছি- সময় কম, দ্রুত বিষয়টির সমাধান প্রয়োজন। আমরা কে কতটা আসনে ছাড় পাচ্ছি, কোথায় পাচ্ছি, সেটা জানতে পারলে আমরা নিজ নিজ দলকে বলতে পারব, নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের বলতে পারব। নিজেরাও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারব।
আমির হোসেন আমু দু-একদিনের মধ্যে আসন বণ্টনের বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য দলের নেতাদের সঙ্গে বলেন। তখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, ১৭ তারিখ প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন, সময় আছে, এর মধ্যে চূড়ান্ত হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
এক প্রশ্নের জবাবে মেনন বলেন, ‘শরিকদের যারা যেসব আসনে ছাড় পাবেন, তাদের নৌকা দেওয়া হবে- বৈঠকে এটা আমাদের জানানো হয়েছে। তবে সেসব আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রত্যাহারের কোনো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি। বৈঠকে রাশেদ খান মেনন এ বিষয়ে নিশ্চয়তা চান।
বৈঠক শেষে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের বলের, ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে আমরা আলোচনা করেছি। ১৪ দলীয় জোট একসঙ্গে নির্বাচন করবে। জোটের যারা প্রার্থী হবেন তারা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবেন। আসন বণ্টনের বিষয়টি এখনো তারা বিবেচনা করছেন। তারা আরও দু-একদিন সময় চেয়েছেন।
তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, আমাদের অনেকগুলো লিস্ট দেওয়া হয়েছে। সেগুলোর সঠিক সমন্বয় এখনো আসেনি। সেই লিস্টগুলো নিয়ে এখন বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আমরা যারা চারজন সংসদে আছি, নিশ্চিত তারা নৌকা নিয়ে নির্বাচন করবে।
জানা গেছে, বৈঠকে ১৪ দল শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া চট্টগ্রামের মিরসরাই আসনটি নিজের জন্য চেয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি আওয়ামী লীগের কাছে জোর দাবি জানান।
এ ছাড়া গণ-আজাদী লীগ আসন চায়নি। গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাপ, বাসদসহ অন্য শরিকরা আসন পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে গত কয়েকটি বৈঠকের মতো রবিবারের বৈঠকেও আলোচনা হয়নি।