ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যাদের হাতে নৌকা প্রতীক দেবে আওয়ামী লীগ, বঞ্চিত হচ্ছেন ৭০ এমপি

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচন হবে সব দলের অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ। নির্বাচনে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং ভোটে পাস করে আসা সেরা প্রার্থীদের হাতে নৌকার টিকেট তুলে দেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সংসদের বিতর্কিত, দলীয় নেতাকর্মীদের পাশ কাটিয়ে চলেন, জনবিচ্ছিন্ন এমন প্রায় ৭০ এমপির কপালে নৌকার টিকিট জুটছে না। বিতর্কের মধ্যে না থেকেও কিছু এমপি মনোনয়ন পাবেন না- কারণ তাদের চেয়ে অনেক প্রতিশ্রুতিশীল প্রার্থীর সন্ধান রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর হাতে। আবার বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত; কিন্তু ভোটে পাস করে আসার সমূহ সম্ভাবনা থাকায় অনেক বিতর্কিত এমপির হাতেও পুনরায় উঠতে পারে নৌকার টিকিট।

এদিকে, এলাকায় উন্নয়ন, জনপ্রিয়তা, কোন্দল, দুর্নীতিসহ বিগত কয়েক বছরের এমন নানা বিষয় তুলে ধরে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি-মন্ত্রীদের ব্যক্তগত আমলনামা তৈরি করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে একাধিক গোপন জরিপের মাধ্যমে প্রত্যেক আসনে ‘গুড ইমেজ’র প্রার্থী বাছাই করছে দলটি। আসনভিত্তিক মনোনয়ন একজন পেলেও নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে এবার প্রতি আসনে এমন তিন প্রার্থীর নাম বাছাই করা হচ্ছে। নির্বাচনের সময়ে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর অবস্থান যাচাই করেই বাছাইকৃত তিন প্রার্থীর মধ্যে থেকে একজনের হাতে দলীয় প্রতীক নৌকার টিকেট তুলে দেবেন দলটির হাইকমান্ড।

দলটির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনকে অনেক চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছে আওয়ামী লীগ। মুখে যত কথাই বলুক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই নির্বাচনে আসবে প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি। তাই আগামী নির্বাচন অনেকটাই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে ধরে নিয়েই প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সতর্কতামূলক অবস্থান নিয়েছে দলটির নীতিনির্ধারকরা। সেক্ষেত্রে দলের যতই বড় বাঘা বাঘা নেতা-এমপি বা মন্ত্রীই হোক না কেন, নির্বাচনী এলাকায় জনপ্রিয়তা ও ইমেজ হারানো কাউকেই দলীয় মনোনয়ন দেয়ার ঝুঁকি নেবেন না তাঁরা। তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসতে দফায় দফায় গোপন জরিপের মাধ্যমে জনপ্রিয় ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ জোরেশোরেই চালিয়ে যাচ্ছে দলটি।

দলটির মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক সদস্য আগামী নির্বাচন সামনে রেখে প্রত্যেক নির্বাচনী আসনে দুই/তিন সেট প্রার্থী বাছাইয়ের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে আওয়ামী লীগের। এর মধ্যে অন্যতম হলো- আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হতে কোথাও প্রার্থীর ইমেজ আবার কোথাও দলের ইমেজকে গুরুত্ব দেয়া হবে। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আমলে নেয়া হচ্ছে- দলের নেতাকর্মীদের কাছে ‘গুড ইমেজ’ আছে কিনা, রাজনীতিক হিসেবে এলাকায় কতটা পরিচিত, সংগঠক হিসেবে কতটা দক্ষ, ভোটার ও স্থানীয় দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক কতটা নিবিড়, দলের জন্য ত্যাগ-তিতিক্ষা কেমন। এসব বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

দলীয় সূত্র জানায়, প্রত্যেক আসনে বাছাই করা এসব প্রার্থীর মধ্য থেকেই আগামী নির্বাচনে নৌকার টিকেট দেবেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এর সঙ্গে তৃণমূল থেকে পাঠানো তালিকাও দেখা হবে। তৃণমূলের পাঠানো নামের সঙ্গে গোপন জরিপের মাধ্যমে বাছাই করা প্রার্থীর নাম আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবেন তিনি। সূত্রটি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের একাধিক গ্রুপকে তিনশ’ আসনে গোপন জরিপে নিয়োগ করেছেন, একই সঙ্গে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমেও সম্ভাব্য প্রার্থীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে। এমন একাধিক গোপন জরিপের মাধ্যমে উঠে আসা ‘কমন’ নামগুলো চূড়ান্ত বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দলটির মনোনয়ন বোর্ডের দু’জন সদস্য জানান, প্রার্থী বাছাই করার কাজ চলছে অনেক আগ থেকেই। বিভিন্ন সংস্থাসহ একাধিক মাধ্যমে এই বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ার আগে বিভিন্নভাবে যাচাই-বাছাই করেন। এবার আগে থেকেই এ যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছেন তিনি। আমরা মনে করি, এবার সবচেয়ে সেরা প্রার্থীদের হাতেই নৌকার টিকে তুলে দেবেন দলীয় সভাপতি। গ্রহণযোগ্যরাই পাবেন আগামী নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন।

দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও দলের বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন। ৩শ’ আসনে মনোনয়ন দিতে হবে। বিভিন্ন সংস্থার জরিপে যারা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না, ‘উইনেবল ক্যান্ডিডেট’ হবেন না, তারা মনোনয়ন পাবেন না।

গোপন জরিপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী বোর্ডের একাধিক সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে অধিকাংশ নির্বাচনী আসনেই দলীয় কোন্দল ও অভ্যন্তরীণ গৃহবিবাদ। একশ’রও বেশি আসনেই আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ এখন আওয়ামী লীগই। সরকারের গত আট বছরে ব্যাপক উন্নয়ন-সফলতায় সারাদেশেই নৌকার পক্ষে জনসমর্থন বৃদ্ধি পেলেও এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর প্রার্থীর ছড়াছড়িই আওয়ামী লীগের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগের দুর্গ বলে খ্যাত অনেক আসনেও শুধু দলীয় কোন্দল-বিবাদের কারণে নিশ্চিত আসন হাতছাড়া হবার যোগার হয়েছে।

সারাদেশের এমন বাস্তবতার নিরিখে নির্বাচনের দেড় বছর বাকি থাকতেই দলীয় কোন্দল মেটাতে উদ্যোগী হয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রতি সপ্তাহেই বিভিন্ন জেলায় গিয়ে বর্ধিত ও কর্মিসভার মাধ্যমে দলীয় কোন্দল, দ্বন্দ্ব মিটিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন। এছাড়া দলটির যুগ্ম সম্পাদক ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা কোন্দল-দ্বন্দ্বে জড়িত থাকা জেলার নেতাদের ঢাকায় তলব করে তা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছেন। এমন বৈঠকে আসা প্রায় ১২টি জেলার নেতারা নিজেদের মধ্যে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের। জানা গেছে, পুরো বছর ধরেই দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা দলকে ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠনকে চাঙ্গা ও শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

যাদের হাতে নৌকা প্রতীক দেবে আওয়ামী লীগ, বঞ্চিত হচ্ছেন ৭০ এমপি

আপডেট টাইম : ০৮:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ জুলাই ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচন হবে সব দলের অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ। নির্বাচনে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং ভোটে পাস করে আসা সেরা প্রার্থীদের হাতে নৌকার টিকেট তুলে দেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সংসদের বিতর্কিত, দলীয় নেতাকর্মীদের পাশ কাটিয়ে চলেন, জনবিচ্ছিন্ন এমন প্রায় ৭০ এমপির কপালে নৌকার টিকিট জুটছে না। বিতর্কের মধ্যে না থেকেও কিছু এমপি মনোনয়ন পাবেন না- কারণ তাদের চেয়ে অনেক প্রতিশ্রুতিশীল প্রার্থীর সন্ধান রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর হাতে। আবার বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত; কিন্তু ভোটে পাস করে আসার সমূহ সম্ভাবনা থাকায় অনেক বিতর্কিত এমপির হাতেও পুনরায় উঠতে পারে নৌকার টিকিট।

এদিকে, এলাকায় উন্নয়ন, জনপ্রিয়তা, কোন্দল, দুর্নীতিসহ বিগত কয়েক বছরের এমন নানা বিষয় তুলে ধরে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি-মন্ত্রীদের ব্যক্তগত আমলনামা তৈরি করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে একাধিক গোপন জরিপের মাধ্যমে প্রত্যেক আসনে ‘গুড ইমেজ’র প্রার্থী বাছাই করছে দলটি। আসনভিত্তিক মনোনয়ন একজন পেলেও নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে এবার প্রতি আসনে এমন তিন প্রার্থীর নাম বাছাই করা হচ্ছে। নির্বাচনের সময়ে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর অবস্থান যাচাই করেই বাছাইকৃত তিন প্রার্থীর মধ্যে থেকে একজনের হাতে দলীয় প্রতীক নৌকার টিকেট তুলে দেবেন দলটির হাইকমান্ড।

দলটির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনকে অনেক চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছে আওয়ামী লীগ। মুখে যত কথাই বলুক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই নির্বাচনে আসবে প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি। তাই আগামী নির্বাচন অনেকটাই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে ধরে নিয়েই প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সতর্কতামূলক অবস্থান নিয়েছে দলটির নীতিনির্ধারকরা। সেক্ষেত্রে দলের যতই বড় বাঘা বাঘা নেতা-এমপি বা মন্ত্রীই হোক না কেন, নির্বাচনী এলাকায় জনপ্রিয়তা ও ইমেজ হারানো কাউকেই দলীয় মনোনয়ন দেয়ার ঝুঁকি নেবেন না তাঁরা। তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসতে দফায় দফায় গোপন জরিপের মাধ্যমে জনপ্রিয় ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ জোরেশোরেই চালিয়ে যাচ্ছে দলটি।

দলটির মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক সদস্য আগামী নির্বাচন সামনে রেখে প্রত্যেক নির্বাচনী আসনে দুই/তিন সেট প্রার্থী বাছাইয়ের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে আওয়ামী লীগের। এর মধ্যে অন্যতম হলো- আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হতে কোথাও প্রার্থীর ইমেজ আবার কোথাও দলের ইমেজকে গুরুত্ব দেয়া হবে। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আমলে নেয়া হচ্ছে- দলের নেতাকর্মীদের কাছে ‘গুড ইমেজ’ আছে কিনা, রাজনীতিক হিসেবে এলাকায় কতটা পরিচিত, সংগঠক হিসেবে কতটা দক্ষ, ভোটার ও স্থানীয় দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক কতটা নিবিড়, দলের জন্য ত্যাগ-তিতিক্ষা কেমন। এসব বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

দলীয় সূত্র জানায়, প্রত্যেক আসনে বাছাই করা এসব প্রার্থীর মধ্য থেকেই আগামী নির্বাচনে নৌকার টিকেট দেবেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এর সঙ্গে তৃণমূল থেকে পাঠানো তালিকাও দেখা হবে। তৃণমূলের পাঠানো নামের সঙ্গে গোপন জরিপের মাধ্যমে বাছাই করা প্রার্থীর নাম আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবেন তিনি। সূত্রটি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের একাধিক গ্রুপকে তিনশ’ আসনে গোপন জরিপে নিয়োগ করেছেন, একই সঙ্গে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমেও সম্ভাব্য প্রার্থীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে। এমন একাধিক গোপন জরিপের মাধ্যমে উঠে আসা ‘কমন’ নামগুলো চূড়ান্ত বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দলটির মনোনয়ন বোর্ডের দু’জন সদস্য জানান, প্রার্থী বাছাই করার কাজ চলছে অনেক আগ থেকেই। বিভিন্ন সংস্থাসহ একাধিক মাধ্যমে এই বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ার আগে বিভিন্নভাবে যাচাই-বাছাই করেন। এবার আগে থেকেই এ যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছেন তিনি। আমরা মনে করি, এবার সবচেয়ে সেরা প্রার্থীদের হাতেই নৌকার টিকে তুলে দেবেন দলীয় সভাপতি। গ্রহণযোগ্যরাই পাবেন আগামী নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন।

দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও দলের বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন। ৩শ’ আসনে মনোনয়ন দিতে হবে। বিভিন্ন সংস্থার জরিপে যারা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না, ‘উইনেবল ক্যান্ডিডেট’ হবেন না, তারা মনোনয়ন পাবেন না।

গোপন জরিপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী বোর্ডের একাধিক সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে অধিকাংশ নির্বাচনী আসনেই দলীয় কোন্দল ও অভ্যন্তরীণ গৃহবিবাদ। একশ’রও বেশি আসনেই আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ এখন আওয়ামী লীগই। সরকারের গত আট বছরে ব্যাপক উন্নয়ন-সফলতায় সারাদেশেই নৌকার পক্ষে জনসমর্থন বৃদ্ধি পেলেও এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর প্রার্থীর ছড়াছড়িই আওয়ামী লীগের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগের দুর্গ বলে খ্যাত অনেক আসনেও শুধু দলীয় কোন্দল-বিবাদের কারণে নিশ্চিত আসন হাতছাড়া হবার যোগার হয়েছে।

সারাদেশের এমন বাস্তবতার নিরিখে নির্বাচনের দেড় বছর বাকি থাকতেই দলীয় কোন্দল মেটাতে উদ্যোগী হয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রতি সপ্তাহেই বিভিন্ন জেলায় গিয়ে বর্ধিত ও কর্মিসভার মাধ্যমে দলীয় কোন্দল, দ্বন্দ্ব মিটিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন। এছাড়া দলটির যুগ্ম সম্পাদক ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা কোন্দল-দ্বন্দ্বে জড়িত থাকা জেলার নেতাদের ঢাকায় তলব করে তা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছেন। এমন বৈঠকে আসা প্রায় ১২টি জেলার নেতারা নিজেদের মধ্যে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের। জানা গেছে, পুরো বছর ধরেই দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা দলকে ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠনকে চাঙ্গা ও শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবেন।