বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণটি প্রায় দেড় বছর আগে ইউনেস্কোর স্বীকৃতির জন্য প্রক্রিয়া শুরু করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত বছরের শুরুতে ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোতে স্থায়ী প্রতিনিধি শহীদুল ইসলামকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রার-এ অন্তর্ভুক্তির জন্য ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরে তথ্য মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সাথে পরামর্শ করে মন্ত্রণালয় ভাষণের মনোনয়ন সংক্রান্ত প্রস্তাব ইউনেস্কোতে দাখিল করে।
ইউনেস্কো সদর দপ্তরের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হয়। ভাষণের ইংরেজি অনুবাদ সরবরাহ, ভাষণটির স্বাতন্ত্র্য ও ঐতিহাসিক মর্যাদা সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। এ সময়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব কামরুল আহসান, সচিব মাহবুব উজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দীর্ঘ যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার পর ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণটিকে বিশ্বের অন্যতম দালিলিক ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। এ পর্যন্ত সারা বিশ্বের মোট ৪২৭টি দলিলকে এ বিরল স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই স্বীকৃতির দিনটি সমগ্র বাঙালি জাতির জন্য একটি বিশেষ আনন্দের দিন।
মাহমুদ আলী জানান, মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার এর মূল লক্ষ্য হলো পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে থাকা গুরুত্বপূর্ণ দালিলিক তথ্যাদি সংরক্ষণ ও সেগুলো সাধারণ মানুষের জন্য সহজপ্রাপ্য করা। পৃথিবীর ইতিহাসে অতি গুরুত্বপূর্ণ দলিলসমূহই কেবল এই রেজিস্টারে স্থান পায়। একটি ১৪ সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক পরামর্শক কমিটি পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে এই রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্তির যোগ্য আন্তর্জাতিকভাবে তাত্পর্যপূর্ণ দলিলসমূহের নাম সুপারিশ করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ইউনেস্কোর স্বীকৃতির মাধ্যমে একদিকে যেমন পৃথিবীর মানুষ আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব এবং বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামে তার অবিসংবাদিত ভূমিকার বিষয়ে আরো বিশদভাবে জানার সুযোগ পাবে। অপরদিকে এই কালোত্তীর্ণ ভাষণটি ভবিষ্যত্ প্রজন্মকে ন্যায় এবং মুক্তির পথে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে সংরক্ষিত হয়ে থাকবে। সেই সঙ্গে এই অসাধারণ ভাষণ বাঙালি জাতির এবং সকল মুক্তিকামী মানুষের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে অনুপ্রেরণার অনন্য উত্স হিসাবে শক্তি যোগাবে।